সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বৃষ্টি এবং সাইক্লোন নিসর্গ আগমনে যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে তা পঙ্গপালদের বংশবিস্তারের পক্ষে আদর্শ। আর সেই কারণে কিছুদিনের জন্য বন্ধ হতে পারে তাদের ধ্বংসলীলা। কেন্দ্রের লোকাস্ট ওয়ার্নিং সংস্থার (LWO) তরফে এই খবর জানানো হয়েছে। সংস্থার ডেপুটি ডিরেক্টর কে এল গুরজার বলেছেন, “যদি রাজস্থানে ভাল বৃষ্টিপাত হত, তবে তারা মরু অঞ্চলেই থেকে যেত। সেখান থেকে সরে আসত না। ওই আবহাওয়ায় ১৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে সেখনে প্রজনন করত।”
গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পঙ্গপাল দল একাধিক অঞ্চলে হানা দিয়েছে। ধ্বংস করেছে পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ের বিভিন্ন এলাকার কৃষিজমির ফসল। ক্ষতি করেছে গাছপালার। পঙ্গপালের হানা নিয়ে একাধিক রাজ্যতে সতর্ক করে কেন্দ্র। এখনও জারি রয়েছে সতর্কতা। গুরজার জানিয়েছেন, “পঙ্গপালের দল বর্তমানে মধ্যপ্রদেশের শিবপুরী অঞ্চলে রয়েছে। রাজস্থানের অশোকনগর, বিকানির ও নাগৌড়, মহারাষ্ট্রের নাগপুর এবং উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির দিকে ক্রমশ এগোচ্ছে তারা। তবে বিহারের দিকে যাওয়ার আপাতত কোনও সম্ভাবনা নেই।” তিনি এও জানিয়েছেন, রবিবার জয়সলমীরে পঙ্গপালের একটি ঝাঁক প্রবেশ করেছিল। সেটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।
[ আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কে বাতিল কামাখ্যার অম্বুবাচী মেলা, ১ মাস বন্ধ থাকবে মন্দিরের ফটক ]
পঙ্গপাল এ বছর ভারতের কৃষিতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। রাষ্ট্রসংঘের তরফে এই রাক্ষুসে পতঙ্গের উপর নজরদারি চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োজনে ড্রোনের সাহায্যের কথাও বলা হয়। এই পতঙ্গের আক্রমণে দেশের কৃষির গ্রাফ নিম্নমুখী হতে পারে বলে আশঙ্কা। পঙ্গপাল দিনে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়তে পারে এবং এক বর্গকিলোমিটার জায়গার শস্যহানি ঘটাতে পারে। প্রতিদিন একটি পঙ্গপালের দল ৩৫ হাজার মানুষের খাবার খেয়ে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। জাতীয় আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রের একজন প্রবীণ বিজ্ঞানী আর কে জেনামানি বলেছেন, যে আরব সাগরের উপর যে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে তার ফলে উত্তর ভারতে আর্দ্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। ৪ ও ৫ জুন পূর্ব ও রাজস্থান এবং দিল্লিতে বৃষ্টিপাত হতে পারে। ইতিমধ্যেই পূর্ব রাজস্থানের কিছু অংশে বৃষ্টি হচ্ছে। উত্তর ভারতেও এ বছর বৃষ্টি অন্যবারের তুলনায় বেশি হওয়ার সম্ভবনা।
একইভাবে পূর্ব ভারতেও বর্ষায় পঙ্গপালের বংশোবিস্তারের উপযুক্ত আবহাওয়া তৈরি হবে।
মনে করা হচ্ছে, পঙ্গপালের দল বর্ষার আগেই ভারতের পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে। একটি ঝাঁক ভোপালের উত্তর-পূর্বে পৌঁছেছিল। কিন্তু বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় আমফানের পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে এর যাত্রাপথ ঘুরে যায়। রাজস্থানে জুলাই অবধি পঙ্গপালের দল যেতে পারে। অনুকূল আবহাওয়া হওয়ায় পূর্ব দিকে বিহার এবং ওড়িশা পর্যন্তও যেতে পারে পঙ্গপাল। তবে পশ্চিমা বায়ুর কারণে এর রাজস্থানে ফিরে আসাই সম্ভব বলে এখনও পর্যন্ত অনুমান। কিন্তু দক্ষিণ ভারতে এই রাক্ষুসে পতঙ্গ ঢুকবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
[ আরও পড়ুন: দলবল নিয়ে শ্যালিকার বিয়েতে করোনা আক্রান্ত জামাইবাবু, চরম আতঙ্কে নিমন্ত্রিতরা ]
The post বর্ষা প্রজননের অনুকূল মরশুম, পঙ্গপালের ধ্বংসলীলা রুখে দিতে পারে বৃষ্টিই appeared first on Sangbad Pratidin.