রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বিজেপিতে (BJP) সদ্যই যোগ দিয়েছেন তিনি। আর তার মাত্র দু’দিনের মধ্যেই জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পাচ্ছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার রাতেই অমিত শাহর দপ্তর থেকে তাঁকে ফোন করা হয়। জানানো হয় তাঁকে জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হল। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সোমবার থেকেই তাঁর জন্য এই নিরাপত্তা বরাদ্দ হয়েছে। এদিকে, গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর পর মঙ্গলবার বারুইপুরে প্রথম জনসভা রয়েছে রাজীবের।
প্রায় মাসদুয়েক ধরেই চলছিল টানাপোড়েন। প্রথমবার টালিগঞ্জে এক অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানে মুখ খুলেছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। কোনও নাম না করে তৃণমূলের শীর্ষস্তরের নেতাদের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন। নাম লিখিয়েছিলেন ঘাসফুল শিবিরের ‘বেসুরো’ নেতাদের তালিকায়। তারপর থেকে কখনও ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের সমাবেশ অনুষ্ঠান আবার কখনও সংবাদমাধ্যমের সামনে বারবার মুখ খুলেছেন রাজীব। বলেছেন দলবিরোধী কথা। বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল, গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাতে চলেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বারবার তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। বৈঠক শেষে দলবদলের জল্পনা জিইয়ে রেখেছেন। তবে দলবদল করার ব্যাপারে সরাসরি কিছু বলেননি। ফেসবুক লাইভও করেছেন। তাতেও দলবদলের কথায় আমল দেননি।
[আরও পড়ুন: জমিয়ে ব্যাটিং শীতের, গত ১০ বছরে রেকর্ড গড়ল ‘শীতলতম’ ফেব্রুয়ারি]
এই টানাপোড়েনের মাঝেই আচমকা একদিন মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করেন রাজীব। দেখা করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankhar) সঙ্গে। রাজভবন থেকে বেরিয়ে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন আরও একবার। কেঁদেও ফেলেন তিনি। শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) পথ অনুসরণ করে বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দেন। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জমা দেন ইস্তফাপত্র। বিধানসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সঙ্গে নিয়ে বেরতে দেখা যায় তাঁকে। তখন ঘাসফুল শিবিরের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা আঁচ করেছিলেন অনেকেই। তবে প্রাক্তন বনমন্ত্রী তথা বিধায়কের মুখ থেকে সে বিষয়ে একটি শব্দও শোনা যায়নি। তবে কয়েকঘণ্টার মধ্যেই প্রেক্ষাপট বদল। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদও ছেড়ে দেন। চিঠিতে সিদ্ধান্তের কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) জানান। এরপরই দলবদলের পথ আরও প্রশস্ত হয়। দিল্লিতে গিয়ে অমিত শাহের (Amit Shah) উপস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান রাজীব। রবিবার ডুমুরজলায় বিজেপির কর্মসূচিতে যোগ দেন। তৃণমূলকে একাধিক ইস্যুতে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। মঙ্গলবার বারুইপুরে (Baruipur) প্রথম জনসভা রয়েছে তাঁর। ঘাসফুল শিবিরের উদ্দেশে কী বার্তা দেন, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।