সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোহা থেকে গাড়ি, নুন থেকে ওষুধ। মহীরুহের মতো প্রায় সর্বত্রই ডালপালা মেলেছিল টাটা সংস্থা। স্বাধীনতা উত্তর ভারতে প্রণম্য মানুষ ছিলেন জামসেদজি টাটা। তাঁর সেই জনহিত. ন্যায়ের ঐতিহ্য, বংশ পরম্পরায় বহন করেছেন রতন টাটাও। তাই তাঁর ছত্রছায়ায় থাকা টাটা অ্যান্ড সনসের ডালপালা যতই ছড়িয়ে পড়ুক না কেন, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগের আঙুল ওঠেনি। নামী-দামী শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে সংস্থার স্টকের মূল্য নিয়ে জালিয়াতির মতো অভিযোগ উঠলেও এ বিষয়ে রতনজি বরাবর ক্লিনচিট পেয়েছেন। শিল্পমহলে তিনি 'ট্রু জেন্টলম্যান'।
১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর মুম্বইয়ে পার্সি পরিবারে জন্ম। ১০ বছর বয়সে মা-বাবা আলাদা হয়ে যান। নিজের এক ভাই রয়েছেন, জিমি টাটা। সৎভাইও আছে।বিদেষে স্নাতকত্তোর পাসের পর
সাতের দশকে টাটা গ্রুপে ম্যানেজার স্তরের দায়িত্ব পান রতন টাটা। ১৯৯১ সালে জেআরডি টাটা টাটা সন্সের দায়িত্ব ছাড়েন। রতন টাটাকে নিজের উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেন। প্রথমে তাঁকে নিয়ে সংস্থার অন্দরে আপত্তি ছিল কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা মুছে যায়। ২১ বছর রতন টাটার হাতে টাটা গ্রুপের দায়িত্ব ছিল। আয় ও লাভ দুই-ই ৪০ থেকে ৫০ গুণ বৃদ্ধি পায়।
মধ্যবিত্তকে চারচাকার গাড়ির স্বপ্ন দেখিয়ে বাংলায় ন্যানো গাড়ির কারখানা বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নানা কারণ রতন টাটার সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছিল।গুজরাটে গড়ে উঠেছিল সেই কারখানা। ৭৫ বছর বয়সে দায়িত্ব ছেড়ে দেন। মাঝে আবার অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে ফেরেন রতন টাটা। বয়স যত বেড়েছে ততই দানধ্যানে যুক্ত হয়েছেন তিনি।
২০০০ সালে 'পদ্মভূষণ' সম্মান পান রতন টাটা। ২০০৮ সালে 'পদ্ম বিভূষণ সম্মান'। এছাড়া দেশ-বিদেশের অজস্র সম্মান এসেছে তাঁর ঝুলিতে। বিশ্বের সফলতম শিল্পপতিদের তালিকায় ভারতের আম্বানি-আদানিদের নাম বার বার উঠে এসেছে। তার পরেও তাঁদের বিরুদ্ধে সময়-সময় নানা অনৈতিক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সেই কাদার ছিঁটেও স্পর্শ করতে পারেনি রতন টাটাকে। তিনি শিল্পমহলে প্রকৃত ভদ্রলোক হয়ে থেকে গিয়েছেন তিনি।