সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়: শরীর যেমনই হোক, আকৃতি ছোট কিংবা বড়, অতিরিক্ত মেদহীনতা বা নির্মেদ শরীর সুস্বাস্থ্যের জন্য একটি প্রয়োজনীয় শর্ত। শুধুমাত্র চিকিৎসাশাস্ত্র নয়, গল্প বলার ক্ষেত্রেও একথা সমানভাবে প্রযোজ্য। ‘গড ইজ গুড’ নামক স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবিটির পরিচালক সৌরভ পাল এই কাজটি করেছেন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে। ছোট পরিসরের মধ্যে একটা বিষয়কে গল্পের আকারে ধরা এবং তাকে পরিণত রূপ দেওয়া খুব সহজ কাজ নয়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের চলাফেরায় ঈশ্বর-নির্ভরতা, আমাদের ভণ্ডামো, আমাদের অন্তঃস্বার শূন্যতা কখনও কখনও আমাদের নিজের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। তখন তলানিতে পড়ে থাকে অস্বস্তি। হয়তো খানিকটা লজ্জাও। এই বিষয় নিয়েই সৌরভের ছবি ‘গড ইজ গুড’।
[ আরও পড়ুন: অতীত ও বর্তমানকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয় সুদেষ্ণা-অভিজিতের ‘সামসারা’ ]
ছবির একদম প্রথমে আপাতদৃষ্টিতে ধর্মপ্রাণ বিপত্নীক ব্যবসায়ী চরিত্রটিকে দেখে মনে যে ধারণা তৈরি হয় তা গল্পের পরতে পরতে মিথ্যে প্রমাণিত হতে থাকে। এই ধীরে ধীরে উন্মোচিত করার কাজটি পরিচালক সৌরভ করেছেন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করেছেন অভিনেতা শুভ্র দত্ত। তাঁর অভিনয়ের মধ্যে একটা অদ্ভুত পরিমিতি বজায় রেখেছেন ধারাবাহিকে যা প্রথমদিকে দর্শকদের বিভ্রান্ত করে আয় এখানেই ছবির গল্প বর্ণনায় ক্ষেত্রে একটা অন্য মাত্রা এনে দিয়েছে। ছবির শেষ দিকে শ্মশানের দৃশ্যে পরিচালক আমাদের এক অদ্ভুত বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেন।
ছবির নির্মাণ নিয়েও কথা বলার বিশেষ জায়গা নেই। দৃশ্য নির্মাণ, সংগীত, অভিনয়- গুণগতমানে যে কোনও ফিচার ছবির পাশে অনায়াসে ছবিটিকে বসানো যায়। শ্রী শুভ্র দত্ত ও শ্রী তিতাস চক্রবর্তীর অভিনয় প্রশংসনীয়। অন্যরাও অসাধারণ। সকলেই জানি, স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি বানানো হয় মূলত ভাল কাজ করার অনুপ্রেরণা থেকে। কারণ ছোট ছবির ব্যবসার দিকটি একেবারেই অনিশ্চিত। অন্তত পরিসংখ্যান তাই বলে। তাই প্রযোজক শ্রীমতী দেবিনা চট্টোপাধ্যায় এবং শ্রীমতী মৌসুমি দত্তকে সাধুবাদ জানাই। ভবিষ্যতে সৌরভবাবুর কাছ থেকে আরও অনেক স্বল্প দৈর্ঘ্য এবং পূর্ণ দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্রের আশায় রইলাম।
[ আরও পড়ুন: শুরু থেকে শেষ টানটান উত্তেজনা, সাসপেন্সেই বাজিমাত ‘বর্ণপরিচয়’-এর ]
The post বাস্তবতা আর সত্যি-মিথ্যের দ্বন্দ্ব উঠে এল ‘গড ইজ গুড’ ছবিতে appeared first on Sangbad Pratidin.