সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টার কোনও ত্রুটি ছিল না। তা সত্ত্বেও সত্য এড়ানো গেল না কিছুতেই। দেশের আর্থিক পরিস্থিতি অনেকটাই স্থিতিশীল বলে দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশবাসীকে যা বোঝানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, শুক্রবার সেই তত্ব থেকেই ঘুরে গেলেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কার্যত স্বীকারই করলেন, আর্থিক বৃদ্ধির হার নিম্নমুখীই শুধু নয়, গত কয়েক বছরে কমেছে রেকর্ড হারে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে জিডিপির হার ছিল ৬.৮ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিক অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চে সেই হার ৫.৮ শতাংশ এবং চলতি ত্রৈমাসিকে তা নেমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫ শতাংশে।যাতে রীতিমতো অশনি দেখছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ।
[আরও পড়ুন: বড় সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের, জুড়ে যাচ্ছে দেশের ১০টি বৃহৎ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক]
দেশের আর্থিক পরিস্থিতি ভাল, আর্থিক বৃদ্ধির হারও ভাল, কমছে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ, বাড়ছে অনাদায়ী ঋণ – অর্থনীতি নিয়ে এমনই নানা ভরসা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন দ্বিতীয় মোদি মন্ত্রিসভার অন্যতম ভরসাযোগ্য অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। কিন্তু বাস্তব চিত্র যে অন্য, তা খানিক আঁচ করা গিয়েছিল এসপ্তাহের গোড়ায়, রিজার্ভ ব্যাংক ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রকে অনুদান দেওয়ায়। তাতেই স্পষ্ট হয়েছিল
রাজকোষের প্রকৃত অবস্থা। সংকেত আরও ছিল। গাড়িশিল্পের করুণ দশা, বিভিন্ন সংস্থা থেকে বৃহৎ সংখ্যক কর্মীছাঁটাই থেকেই একটু একটু করে স্পষ্ট হচ্ছিল, আর্থিক পরিস্থিতি মোটেই ভাল নয়। তারউপর চলতি মাসের শুরুতেই রিজার্ভ ব্যাংকের সিদ্ধান্তে রেপো রেট কমেছিল। তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জিডিপি বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রাও কমানো হয়। ৭ থেকে কমিয়ে তা ৬.৯ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হয়।
সম্প্রতি একটি আর্থিক সমীক্ষায় ইঙ্গিত ছিল, চলতি ত্রৈমাসিকে জিজিপি বৃদ্ধির হার কমতে পারে সামান্য। কিন্তু ৫.৮ থেকে একেবারে হু হু করে ৫-এ নেমে যাওয়াটা তাবড় অর্থনীতিবিদদের কাছেও বড়সড় ধাক্কার। এর আগে ২০১৩ সালে দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার উদ্বেগজনকভাবে কমে দাঁড়িয়েছিল ৪.৩ শতাংশে।
[আরও পড়ুন: বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগকারিণীকে আদালতে হাজির করার সুপ্রিম নির্দেশ]
তবে এটাই প্রথম নয়। মোদি জমানার গত কয়েক বছরেই দেশের অর্থনীতির ছিদ্রগুলো চোখে পড়ছিল একটু একটু করেই। অর্থনীতির নানা মারপ্যাঁচের কথা বলে পরিস্থিতি ততটা বেহাল নয় বলে বারবারই প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে গিয়েছেন তখনকার অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও তেমনই দাবি করেছিলেন। মোদি-জেটলির দেখানো পথেই পা বাড়িয়েছিলেন এখনকার অর্থমন্ত্রী নির্মলা
সীতারমণ। কিন্তু শুক্রবারের রিপোর্ট দেখে তিনি নিজেও স্বীকার করলেন, পরিস্থিতি সত্যিই আশঙ্কাজনক। কীভাবে এই সমস্যা সমাধান করা যায়, দ্বিতীয় মোদি সরকারের কাছে তা এক বড় চ্যালেঞ্জ তো বটেই।
The post দেশের অর্থনীতিতে অশনি সংকেত, চলতি ত্রৈমাসিকে রেকর্ড পতন জিডিপি-র appeared first on Sangbad Pratidin.