shono
Advertisement

ইন্দাসে উরসে সম্প্রীতির নজির! ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে দণ্ডি কাটেন হিন্দু মহিলারা

দণ্ডি কাটার পর মাজারে খিচুড়িও খান হিন্দুরা।
Posted: 03:48 PM Mar 18, 2024Updated: 03:48 PM Mar 18, 2024

দেবব্রত দাস, ইন্দাস: বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন, ‘‘হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?’’ জাতপাতের ভেদাভেদ। ধর্মের বেড়াজাল। এসবই যে তুচ্ছ তার উজ্জ্বল নিদর্শন বাঁকুড়ার ইন্দাস থানার শিমুলিয়া ও দশরথবাটি গ্রাম। ধর্ম নিয়ে যেখানে আকছার রাজনীতি সেখানে সম্প্রীতির অভিনব নিদর্শন ইন্দাসের এই দুই গ্রামে। পীরবাবার উরস উৎসবে জাতি ধর্ম ভেদাভেদ ভুলে আনন্দে মাতোয়ারা ভিন্ন ধর্মের, ভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ।

Advertisement

রবিবার থেকে শিমুলিয়া দশরথবাটির পীরবাবার মাজারে শুরু হয়েছে উরস। সংখ‌্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষও এই উৎসবে শামিল হন। সিন্নি থেকে খিচুড়ি সবেতেই সামিল দুই সম্প্রদায়ের মানুষ। মাজারের সামনে দণ্ডি কাটেন হিন্দু মহিলারাও। প্রায় চারশো বছরের প্রাচীন এখানকার পীরবাবার উরস। এদিন থেকে শুরু হওয়া সম্প্রীতির এই উরস উৎসবে মুসলিম সম্প্রদায়ের পাশাপাশি শামিল হয়েছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষও। মাজারে ভক্তিভরে সিন্নি দেওয়ার পরে খিচুড়িও খেলেন তাঁরা।

[আরও পড়ুন: ‘রাজনীতির সময় পাবেন, এখন মানুষের পাশে থাকুন’, বিরোধীদের জবাব অভিষেকের]

এলাকার প্রবীণ মানুষরা জানিয়েছেন, শিমুলিয়া দশরথবাটি গ্রামের ছেলে, মেয়েরা বিয়ের পরের দিন এই পীরবাবার মাজারে সিন্নি খেয়ে তবেই বাড়িতে পা রাখেন। এছাড়াও এলাকার কোনও শিশুর অন্নপ্রাশন বা মুখে ভাত হলে তাকে স্নানের পরে প্রথমে এখানকার পীরবাবার মাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মাথা ঠেকানোর পরেই শুভ কাজ শুরু হয়। স্থানীয়দের মতে এটাই এখানকার প্রচলিত রীতি। স্থানীয় বাসিন্দা রহমত আলি, দরবেশ আলিরা বলছেন, “শিমুলিয়া দশরথবাটির পীরবাবার মাজারে প্রতি বছর উরস উৎসব হচ্ছে। এই মাজারের দেখভাল এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের পাশাপাশি হিন্দু ভাইয়েরাও করে থাকেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের মা, বোনেরা প্রতিদিন সন্ধ্যায় মাজারে ধূপ দিতে আসেন। এই উৎসবে দুই সম্প্রদায়ের মানুষই সমানভাবে অংশ নেন। খিচুড়ি রান্না করেন হিন্দু ভাইয়েরা। পাত পেরে পাশাপাশি বসে সবাই খিচুড়ি খান। যাত্রা দেখেন। কোনও ভেদাভেদ নেই এখানে। এই উৎসব আমাদের গ্রামের মানুষের কাছে একটা মিলন উৎসব।’’

স্থানীয় বাসিন্দা শম্ভু নন্দী, সনাতন নন্দী বলেন, “পীরবাবার উরস উৎসবে প্রতি বছর আমরা সামিল হয়েছি। প্রতি বৃহস্পতিবার পীরবাবার স্থানে সিন্নি দেন বাড়ির মহিলারা। ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে সব সম্প্রদায়ের বহু মানুষ এখানে আসেন। ওদের উৎসব বলে আমরা আসব না এটা হতে পারে না।” এই মেলায় আগত পলাশি গ্রামের বিনয় বাউরি বলেন, “শিমুলিয়া দশরথবাটির পিরবাবা খুবই জাগ্রত। তাই এখানকার উরস উৎসবে এসেছি। মেলায় ঘোরার পাশাপাশি খিচুড়ি খেয়েছি। সম্প্রীতির একটা আলাদা নিদর্শন এখানে এসে টের পেলাম।’’

[আরও পড়ুন: মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়েই গার্ডেনরিচে মুখ্যমন্ত্রী, আহতদের দেখতে গেলেন হাসপাতালেও]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement