অর্ণব আইচ: তাসের ঘরের মতো ভেঙেছে বহুতল। নিচে চাপা পড়ে গিয়েছে ঝুপড়ির একাংশ। ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে পড়েছিলেন বহু মানুষ। কান্না, আর্তনাদে ভারী গার্ডেনরিচ। অসহায় মানুষদের উদ্ধারে নেওয়া হয় একাধিক পদক্ষেপ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলছে উদ্ধারকাজ। বিশেষ উপায়ে তাঁদের কাছে পৌঁছনো হয় নানা জিনিসপত্র। পৌঁছে দেওয়া হয় অক্সিজেনও।
রবিবার রাত। ঘড়ির কাঁটায় তখন ১২টা। বহুতল বিপর্যয়ের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। তখন গার্ডেনরিচে ধ্বংসস্তূপ থেকে শোনা যাচ্ছে শুধুই গোঙানির শব্দ। একে একে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সিভিল ডিফেন্স, দমকল, কলকাতা পুলিশের ডিএমজি। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় উদ্ধারকাজ।
বিপদগ্রস্তদের উদ্ধারে ছাদে একে একে তিনটি গর্ত করা হয়। বিশেষ করাত ব্যবহার করা হয়। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, লোহা এবং কংক্রিট কাটার জন্য ব্যবহৃত 'সার্কুলার স'। কাঠ কাটতে ব্যবহৃত 'বুলেট চেন স'। হ্যামার ড্রিল কাজে লাগানো হয়।
[আরও পড়ুন: কীভাবে গার্ডেনরিচে বেআইনি নির্মাণ? কলকাতা পুরসভার ৩ ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ]
তার পরই ছাদের বিকল্প পথ দিয়ে ধ্বংসস্তূপে নেমে পড়েন বেশ কয়েকজন। অন্ধকার ধ্বংসস্তূপে তখন মানুষের খোঁজে ভরসা রিংটোন, সাধারণ মানুষের কথাবার্তা। স্থানীয়দের ফোন করতে শুরু করেন উদ্ধারকারীরা। গলার আওয়াজ শুনে এগোতে থাকেন। কেমন আছে আটক ব্যক্তিরা, খোঁজখবর নিতে থাকেন তাঁরা। জোগাতে থাকেন ভরসা। আতঙ্কে কান্নাকাটি শুরু করে দেন অনেকে। তাঁদের ভরসা জোগাতে থাকেন উদ্ধারকারীরা।
ধ্বংসস্তূপে অনেকেরই শ্বাসকষ্ট হতে শুরু করে। বিশেষ বন্দোবস্ত করে পৌঁছে দেওয়া হয় অক্সিজেন সিলিন্ডার। তার পর একে একে বের করা হয় আটকে পড়াদের। তাঁদের প্রথমে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, মৃত্যু হয়েছে মোট ৯ জনের। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।