চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) প্রতিষেধক ভ্যাকসিন কীভাবে কাজ করে মানব শরীরে? সেই ভ্যাকসিন প্রয়োগ কতটা সফল? তা নিয়ে গবেষণা করলেন আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও অধ্যাপকরা। তাঁদের রিসার্চ ওয়ার্ক স্বীকৃতি পেল “ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ মেডিক্যাল ভাইরোলজি”তে। এটি একটি আমেরিকান জার্নাল। যার বিশ্বজোড়া খ্যাতি ও বিজ্ঞানীদের কাছে স্বীকৃতি রয়েছে।
বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে কোভিড ১৯ ভাইরাসের প্রতিরোধক ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া। আমেরিকার ফাইজার কোম্পানি ও বাইয়োটেক তৈরি বিএনটি-১৬২ ভ্যাকসিন এদেশেও প্রয়োগের কথা চলছে। তারই মধ্যে ভারত-সহ এশিয়ার অন্যদেশ গুলিতে ভ্যাকসিন নিয়ে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা। তবে এই ভ্যাকসিন আদৌ কতটা নিরাপদ? কোনও প্বার্শপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা, বিশেষ করে বহু মানুষ আছেন যাঁরা ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক নিতে চান না। তাঁদের জন্যে করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন নিয়ে রিসার্চ করলেন আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়া ও অধ্যাপকরা। তাঁদের রিসার্চ ওয়ার্কে যুক্তি সহকারে দাবি করা হয়েছে, এই ভ্যাকসিনটি মানব শরীরের পক্ষে নিরাপদ ও সফল কার্যকরী। কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র অভিজ্ঞান চৌধুরী ও প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডক্টর সুপ্রভাত মুখোপাধ্যায় দীর্ঘ এই রিসার্চ করেছেন।
[আরও পড়ুন: ক্ষমতায় এলে বাংলাতেও ‘লাভ জেহাদ’ বিরোধী আইন, বিজেপি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের ঘোষণায় বিতর্ক]
তাঁদের রিসার্চে কী রয়েছে? অভিজ্ঞান জানান, “ভ্যাকসিন যখন শরীরে প্রবেশ করে তখন তাকে চিনে নেয় আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম। তৈরি হয় অ্যান্টিবডি। যদি অ্যান্টিবডি আগে তৈরি হয়ে যায় তাহলে করোনা প্রতিরোধ সম্ভব।” ডক্টর সুপ্রভাত মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা রিসার্চের মাধ্যমে জানতে পেরেছি ভাইরাস যখন শরীরে প্রবেশ করে তখন প্রথমে আক্রান্ত হয় ফুসফুস। সেখানে আমাদের ইমিউন সিস্টেমের কিছু সেল বা কোষ আগে থেকেই আছে। এই কোষকে বলা হয় ‘অ্যাভেলর ম্যাক্রোফেজ’। এই অ্যাভেলর ম্যাক্রোফেজে থাকে টিএলআর নামক প্রোটিন। এই প্রোটিনগুলিই হল ভাইরাসের আরএনএ, যা ভ্যাকসিনে দেওয়া আরএনএকে চিনে নেয়। তারপরই তৈরি হয় অ্যান্টিবডি।”এর আগে করোনা সংক্রমণের সময় কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দুই গবেষক কোভিড-১৯ এর জন্ম নিয়ে রিসার্চ করেছিলেন। তখনও এই আমেরিকান জার্নালে তাঁদের গবেষণা স্বীকৃতি পেয়েছিল। তাঁদের গবেষণা কাজে লেগেছিল বিশ্বজোড়া বিজ্ঞানীদের কাছে। এবার তাঁদের ভ্যাকসিন সম্পর্কিত গবেষণা সচেতনতার কাজে লাগবে বলে মনে করছেন তাঁরা। গবেষকরা বলেন আমাদের দেশে জেনেভা তৈরি “এইচজিকোভ ১৯” ভ্যাকসিনও একই প্রক্রিয়ায় তৈরি ও মানব শরীরে ভাইরাস প্রতিরোধে কাজ করবে। এই গবেষণা বা রিসার্চ ওয়ার্কে সাহায্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই পিএইচডি স্কলার ঋত্বিক পাত্র ও নবারুণ চন্দ্র দাস।