সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্দীপ ঘোষের মদতে ব্যবসায় নামেন তাঁরই দেহরক্ষী। আর জি কর হাসপাতালে স্ত্রীর নামে ক্যাফে খুলে ব্যবসা চালাতে থাকেন দেহরক্ষী শেখ আফসার আলি খান। আর জি করের দুর্নীতির তদন্তে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে সঙ্গে এই আফসার আলিও সিবিআইয়ের হতে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সিবিআইয়ের সূত্র জানিয়েছে, সন্দীপ ঘোষ(Sandip Ghosh) সবরকম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁর দেহরক্ষীকে। আর সেই কারণেই সারা হাসপাতালজুড়ে দাপট দেখাতেন আফসার আলি। এমনকী, রোগী ভর্তির চক্রের সঙ্গেও ওই দেহরক্ষী যুক্ত ছিল বলে অভিযোগ। তবে কয়েক বছর আগে থেকে সন্দীপ ঘোষের মদতে আফসার আলি আর জি করে বেশ কিছু কাজের বরাত পেতে শুরু করেন। দেহরক্ষী থেকে রীতিমতো ব্যবসায়ী হতে শুরু করেন আফসার। আফসার ছাড়া আরও দুই ভেন্ডার বিপ্লব সিং ও সুমন হাজরাকেও প্রচুর কাজের বরাত দিতেন সন্দীপ। এই দু’জনও এখন রয়েছেন সিবিআইয়ের হেফাজতে। মঙ্গলবার সন্দীপ ঘোষ, বিপ্লব সিং, সুমন হাজরা ও আফসার আলিকে আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তোলা হতে পারে। সিবিআই আরও কয়েকদিনের জন্য তাঁদের নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন জানাতে পারে। যেদিন এই অভিযুক্তদের আদালতে তোলা হয়, সেদিন সন্দীপকে আদালত চত্বরে চড়ও মারা হয়েছিল। সেই কারণে অভিযুক্তদের ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আদালতে তোলার জন্যও সিবিআই আবেদন জানাতে পারে বলে খবর।
[আরও পড়ুন: রাজস্থানে রেল দুর্ঘটনার অপচেষ্টা! লাইনের উপরে একাধিক কংক্রিটের ব্লক, অল্পে রক্ষা মালগাড়ির]
আদালতে সিবিআই জানিয়েছে, আফসার আলি আর জি করে আরও ভাল ব্যবসা করার জন্যই সন্দীপকে বলেন। সন্দীপ ঘোষই তাঁকে মদত দেন। তার ফলে আফসারের সংস্থা এশান কাফে তৈরি হয়। আফসারের স্ত্রী নার্গিস হন ওই সংস্থার মালিক। যদিও আফসার নিজেই এই ব্যবসাটি চালাতেন। আর জি কর হাসপাতালে এই ক্যাফেটি খোলার জন্য চারটি সংস্থার কাছ থেকে দরপত্র নেওয়া হয়। কিন্তু সন্দীপ ঘোষ নিজের ক্ষমতা দেখিয়েই আফসারের সংস্থাকে হাসপাতালে ক্যাফে খোলার বরাত দেন। এই টেন্ডারের দরগুলি এক ব্যক্তিরই যে হাতে লেখা, তদন্তে সিবিআই সেই প্রমাণ পায়। এই দরপত্রের নথিগুলি সিবিআই উদ্ধারও করে।
[আরও পড়ুন: কথা ছিল নির্বাচন লড়বেন, তার আগেই পাঞ্জাবে খুন আপের কৃষক নেতা]
ওই ক্যাফের সঙ্গে আর জি করের চুক্তির সময় আগাম এক লাখ টাকা হাসপাতালকে দিতে হয়। আফসার সেই টাকা দিয়েছিলেন। নিয়ম অনুয়ায়ী, ওই টাকা ফেরৎযোগ্য নয়। কিন্তু সন্দীপ ঘোষ নিজের প্রভাব খাটিয়ে ওই এক লাখ টাকা আফসার আলিকে ফেরৎ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। অথচ ওই চুক্তিপত্রে ক্যাফে ও হাসপাতাল, দু’পক্ষই সই করে জমা দেওয়া এক লক্ষ টাকা যে ফেরৎযোগ্য নয়, তা স্বীকার করে নেয়। চুক্তিপত্র অনুযায়ী, কোনও চুক্তি ভাঙলে ক্যাফের পক্ষে হাসপাতালকে দশ শতাংশ ‘লেভি’ দিতে হবে। সন্দীপের মদতে আফসারকে ওই ‘লেভি’র টাকা আর দিতে হয়নি। ওই চুক্তিপত্রটিও এখন সিবিআইয়ের হাতে। এই ব্যাপারে আরও বিস্তারিত তথ্য পেতে সন্দীপ ঘোষ ও আফসার আলিকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয় বলে জানিয়েছে সিবিআই।