গৌতম ব্রহ্ম: আর জি কর কাণ্ডে (RG Kar Doctor Death) নতুন মোড়। হাসপাতালে আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল আগেই। বিশেষ করে ডা. সন্দীপ ঘোষ অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে হাসপাতালের খরচ-খরচায় বিস্তর গোলমাল ধরা পড়েছে বলে বার বার দাবি করা হয়েছে। এবার সেই সমস্ত অভিযোগের তদন্ত করতে আইজি পদমর্যাদার আইপিএসের নেতৃত্বে সিট গড়ল রাজ্য সরকার। সোমবার এমনই বিজ্ঞপ্তি জারি করল নবান্ন। এক মাসের মধ্যে তারা রাজ্য সরকারকে রিপোর্ট জমা দেবে। নবান্নের এই নির্দেশে যে আর জি করের পদত্যাগী অধ্য়ক্ষ সন্দীপ ঘোষ আরও বিপাকে পড়বেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সিটের মাথায় থাকছেন আই জি পদমর্যাদার আইপিএস আধিকারিক প্রণব কুমার। বাকি সদস্যরা হলেন মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের ডিআইজি ওয়াকার রেজা, ডিআইজি সিআইডি সোমা মিত্র দাস এবং কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। প্রয়োজনে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ থেকে আরও সদস্যকে যুক্ত করা হতে পারে। ২০২১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত আর জি কর হাসপাতালে ওঠা সমস্ত আর্থিক বেনিয়মের তদন্ত করবেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: RG Kar কাণ্ড: CBI-এর উপর চাপ বাড়ালেন কুণাল, ডাক্তারদের কাজে ফেরার আবেদন]
প্রসঙ্গত, আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের খুনের ঘটনায় সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করছে সন্দীপকে। পর পর তিনদিন তাঁকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। এর মধ্যেই প্রকাশ্যে আসে হাসপাতালের আরেক কেলেঙ্কারি। ২০২২ সালের মাঝামাঝি আর জি কর হাসপাতালে স্যালাইনের তীব্র আকাল দেখা দিয়েছিল। স্যালাইন সংকট এতটাই তীব্র যে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস, সাগর দত্ত থেকে স্যালাইন জোগাড় করে রোগী পরিষেবা বজায় রাখতে হয়েছিল। অভিযোগ, যে সংস্থা স্যালাইন সরবরাহ করত, তাদের বিপুল অর্থ বকেয়া ছিল। বেশ কয়েকবার তা মেটানোর জন্য চাপ দিয়েও বকেয়া মেলেনি। আর তাই তারা স্যালাইন সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
কিন্তু কেন? অর্থ দপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ওষুধ কেনার ক্ষমতা থাকে হাসপাতাল বা মেডিক্যাল কলেজের। স্বাস্থ্য দপ্তরের এক অফিসারের অভিযোগ, ধাপে ধাপে টাকা মিটিয়ে দিলেই এমন অস্বস্তিকর অবস্থা হত না। কিন্তু আর জি কর হাসপাতালের ফিনান্স থেকে কোনও পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। আবার গত বছর যক্ষ্মা পরীক্ষার কিটের গুণগত মান নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছিল। যদিও সেই ঘটনায় সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু তাঁর উপর যে চাপ ছিল, তা এখন অনেকেই আড়ালে আবডালে মেনে নিয়েছেন।
এই সমস্ত খবর সামনে আসার পরই নড়চড়ে বসল রাজ্য প্রশাসন। তড়িঘড়ি সন্দীপ ঘোষের আমলে হওয়া সমস্ত আর্থিক বেনিয়মের বিরুদ্ধে সিট গড়ল রাজ্য সরকার।