অর্ণব আইচ: আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘিরে এখনও ধন্দে সিবিআই। সঞ্জয় রায় কি একাই অভিযুক্ত, না কি এই ঘটনার পিছনে রয়েছে আরও অনেকে, সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি সিবিআই আধিকারিকরা। এমনকী, প্রেসিডেন্সি জেলের ভিতর মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের পলিগ্রাফ পরীক্ষার পরও সিবিআই বহু প্রশ্নের উত্তর পায়নি। অথচ ১৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে ফের রিপোর্ট দাখিল করতে হবে সিবিআইকে। তাই তার আগেই এবার সঞ্জয় রায়ের নারকো অ্যানালিসিস পরীক্ষা করতে চায় সিবিআই। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার এই ব্যাপারে সিবিআই আদালতে আবেদনও জানায়। শুক্রবার কড়া নিরাপত্তায় সঞ্জয়কে নিয়ে যাওয়া হল শিয়ালদহ কোর্টে।
সিবিআইয়ের মতে, সঞ্জয়কে বার বার জেরা করেও বেশ কিছু তথ্য উদ্ধার করা যায়নি। সে দাবি করে যে, দু’জন রোগী দেখতেই সে গভীর রাতে আর জি করে যায়। ওই দুই রোগীই হাড়ের সমস্যায় ভুগছিলেন। তাই অর্থোপেডিক বিভাগের সঙ্গে হাসপাতালে নারকীয় ঘটনার কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা করে সিবিআই। এ ছাড়াও আরও বহু তথ্য জানতে তাকে বিভিন্ন সময়ে জেরা করা হয়। পলিগ্রাফ পরীক্ষায় দশটি প্রশ্ন করে তার কাছ থেকে উত্তর জানার চেষ্টা করে সিবিআই। কিন্তু সিবিআইয়ের অভিমত, সঞ্জয়ের পলিগ্রাফ পরীক্ষা বিশেষ সফল হয়নি। সে জেরার মুখে একাধিকবার দাবি করেছে যে, সে এই ধর্ষণ ও খুনের সঙ্গে জড়িত নয়। সে ঘটনাস্থলে ছিল না। যদিও অন্য কেউ জড়িত ছিল কি না, সেই সম্পর্কেও কিছু জানাতে চায়নি সে। তাই বহু বিভ্রান্তি কাটাতে এবার সঞ্জয় রায়ের নারকো অ্যানালিসিস পরীক্ষা করাতে চায় সিবিআই। এদিন শিয়ালদহ আদালতে সিবিআই আধিকারিকরা গিয়ে এই ব্যাপারে আবেদন জানান। কিন্তু কোনও ব্যক্তির নারকো অ্যানালিসিস পরীক্ষা করানো হলে তাঁর শরীরের উপর প্রভাব পড়তে পারে। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। তাই আদালতে বিষয়টি নিয়ে এদিন আলোচনাও হয়।
[আরও পড়ুন: ‘বিচারাধীন বিষয়’, নবান্নে লাইভ স্ট্রিমিংয়ে আপত্তিতে ‘সুপ্রিম’ যুক্তি মমতার]
সিবিআইয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, সঞ্জয়ের কাছ থেকে কথা বের করার জন্য যদি তার নারকো অ্যানালিসিস পরীক্ষা করানো সম্ভব না হয়, তবে তার ব্রেন ম্যাপিংও করানোর আবেদন করা হতে পারে। তবে নারকো অ্যানালিসিসের ক্ষেত্রে জেল হাসপাতাল বা জেলের কোনও বিশেষ ঘরে সঞ্জয়কে নিয়ে গিয়ে সিবিআই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে তাকে এই পরীক্ষা করাতে পারে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, নারকো অ্যানালিসিস পরীক্ষার জন্য অভিযুক্ত বা সন্দেহভাজনকে সোডিয়াম পেনটোথাল ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। এর ফলে অর্ধচেতন অবস্থায় অভিযুক্ত প্রশ্নের উত্তর দেয়। যেহেতু মস্তিষ্ক তখন তার নিয়ন্ত্রণে থাকে না, তাই সে সত্যি কথা বলছে বলেই ধরা হয়। যদিও এই পরীক্ষায় একশো শতাংশ সাফল্য মেলে না বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। তবে আদালত অনুমতি দিলেই একমাত্র অভিযুক্তর নারকো অ্যানালিসিস বা ব্রেন ম্যাপিং পরীক্ষা করানো হতে পারে বলে জানিয়েছে সিবিআই।