স্টাফ রিপোর্টার: ৫৩টি সিসিটিভি ফুটেজেই সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে প্রমাণ পায় সিবিআই। কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের ফুটেজের সূত্রেই সিবিআই জানতে পারে যে, গত ৯ আগস্ট ভোর ৩টে ২০ মিনিটে আর জি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রাই এসেছিল হাসপাতালে। ৩টে ২০ মিনিট থেকে শুরু করে ভোর ৪টে ৩২ মিনিটে আর জি করের সেমিনার হল তথা ঘটনাস্থল থেকে বের হওয়ার সময় পর্যন্ত সঞ্জয় রায়ের গতিবিধি নজরে আসে সিবিআইয়ের। সম্প্রতি শিয়ালদহ আদালতে আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। ওই চার্জশিটেই উল্লেখ করা আছে সময়ে সময়ে সঞ্জয় রায়ের গতিবিধির।
সিবিআইয়ের চার্জশিট অনুযায়ী, লালবাজারের ট্রাফিক বিভাগ থেকে উদ্ধার হওয়া ফুটেজ দেখেই সিবিআই জানতে পারে যে, গত ৯ আগস্ট ভোর ৩টে ২০ মিনিটে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় আর জি কর হাসপাতালের সামনে আসে। হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারের গেটের সামনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সিবিআই জানতে পারে যে, ভোর ৩টে ৩৪ মিনিট ১০ সেকেন্ড থেকে ৩টে ৩৪ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড পর্যন্ত দেখা যায় যে, সঞ্জয় রাই টি শার্ট ও জিনস পরে হেলমেট বাঁ হাতে নিয়ে ট্রমা সেন্টার বিল্ডিংয়ের সামনে দাঁড়িয়ে নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে কথা বলে। তখন তার গলায় ছিল ব্লু টুথ ইয়ারফোন। তার দু’ মিনিট পর ভোর ৩টে ৩৬ মিনিট ৪ সেকেন্ডে সে নিরাপত্তারক্ষীর দিকে হাত নাড়িয়ে ভিতরে চলে যায়।
এর পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সঞ্জয়ের গতিবিধির উপর নজর রাখে। শেষ পর্যন্ত আর জি কর হাসপাতালের চারতলায় রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের পুরুষ ওয়ার্ডের কাছে তার গতিবিধি লক্ষ্য করেন সিবিআই আধিকারিকরা। পালমোনারি মেডিসিনের প্রবেশপথের একটি সিসিটিভির ফুটেজকেই গুরুত্ব দিচ্ছে সিবিআই। চার্জশিটে সিবিআইয়ের দাবি, ভোর ৪টে ৩ মিনিট ৩১ সেকেন্ড থেকে ভোর ৪টে ৩ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের মধ্যে সঞ্জয় রায়কে হেলমেট ও গলায় ব্লু টুথ ইয়ারফোন নিয়ে ওয়ার্ডের দিকে যেতে দেখা যায়। ভোর ৪টে ৩১ মিনিট ৪০ সেকেন্ড থেকে ১৪ সেকেন্ডের মধ্যে সঞ্জয়কে ওয়ার্ডের দিক থেকে আসতে দেখা যায়।
ফের সে ওয়ার্ডের দিকে ঘুরে যায় বলে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে জানতে পারে সিবিআই। এর কয়েক সেকেন্ড পরই অর্থাৎ ভোর ৪টে ৩২ মিনিট ২৫ সেকেন্ডে সঞ্জয়কে ফের ওয়ার্ডের দিকে থেকে বাঁ হাতে হেলমেট নিয়ে আসতে দেখা যায়। কিন্তু তখন তার গলায় ব্লু টুথ ইয়ারফোনটি ছিল না। সিবিআইয়ের দাবি, ওই সময়ের মধ্যেই সঞ্জয় সেমিনার হলে ঢুকে নির্যাতিতাকে ধর্ষণ ও খুন করে। ওই ইয়ারফোনটি নির্যাতিতার নীল ম্যাট্রেসের তলা থেকে কলকাতা পুলিশ উদ্ধার করে। পরে সেই ইয়ারফোনটি সিবিআই ফরেনসিকে পাঠায়। সঞ্জয়ের মোবাইল আটক করেও পাঠানো হয় ফরেনসিকে। ওই মোবাইল ও ইয়ারফোন ফরেনসিক পরীক্ষা করে সেটি যে সঞ্জয় রায়েরই, ওই ব্যাপারে নিশ্চিত হয় সিবিআই।