shono
Advertisement
Riddhi Sen on Mamata Shankar

চুমু কাণ্ডে মমতা শঙ্করের 'জন্তু' মন্তব্যের পালটা ঋদ্ধির, 'পচা ভাবনা' নিয়ে কী লিখলেন?

বড়দিনের শহরে চুমু নিয়ে তুমুল চর্চা।
Published By: Suparna MajumderPosted: 02:49 PM Dec 24, 2024Updated: 03:48 PM Dec 24, 2024

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বড়দিনের শহরে চুমু নিয়ে তুমুল চর্চা। কালীঘাট মেট্রো স্টেশনে যুগলের এভাবে প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া উচিত, নাকি এ ঘোরতর অন্যায়? তা নিয়ে তরজা তুঙ্গে। বিষয়টিকে মোটেও ভালো চোখে দেখছেন না মমতা শঙ্কর (Mamata Shankar)। তাঁর মতে, "জন্তুরাও বোধহয় আমাদের থেকে অনেক ভালো।" অভিনেত্রীর এই বক্তব্যে তীব্র আপত্তি রয়েছে ঋদ্ধি সেনের (Riddhi Sen)।

Advertisement

শাড়ির আঁচল নামিয়ে পরার অভ্যেসকে ‘ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাঁড়ানো মেয়েদের’ সঙ্গে তুলনা করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মমতা শঙ্কর। চুমু কাণ্ডের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বর্ষীয়ান অভিনেত্রী বলেন, “আমি বিষয়টাকে মোটেই ভালো চোখে দেখছি না। আমি এর বিরুদ্ধে। কারণ এরপর তো সমস্ত কিছু করার সাহস হয়ে যাবে। স্থান, কাল, পাত্রের কোনও জ্ঞান থাকবে না? জন্তুরাও বোধহয় আমাদের থেকে অনেক ভালো। এই জন্যই তো আজকাল এসব হচ্ছে, এত রেপ হচ্ছে। বাচ্চাদের হাতে ফোন যাচ্ছে, ছোট থেকেই ওরা এসব দেখছে। ওদের মূল্যবোধ কোথায় যাবে!”

মমতা শঙ্করের এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেই ঋদ্ধি ফেসবুকে লেখেন, '৭৮তম স্বাধীনতা দিবস পার করা এক দেশের মেট্রো স্টেশনে দুজন স্বাধীন নাগরিককে চুমু খেতে দেখে শ্রদ্ধেয় মমতা শঙ্করের মূল্যবোধে আঘাত লেগেছে। আজকাল এই মূল্যবোধের ব্যাপারটা খুব মজার, যে যার ব্যক্তিগত মূল্যবোধের ধারণাকে একটা জাতির ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে ইচ্ছেমতো। কারুর মূল্যবোধের জমিতে যদি পঞ্চাশতলা হাই রাইজের জায়গা এবং উচ্চতা জুড়ে স্থান পায় ‘পুরাণ’, তাহলে সে গোটা দেশের জমির ইতিহাস এবং বর্তমানের ওপর চাপিয়ে দিতে চাইছে সেই মূল্যবোধ। আবার কেউ কেউ অন্যের মূল্যবোধের মন্ত্র শুনে বোমা মেরে উড়িয়ে দিচ্ছে আস্ত একটা হাই রাইজ এবং তার ভেতরে বসবাস করা কিছু সহ-নাগরিককে।'

নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজনৈতিক, সামাজিক উদাহরণও দেন ঋদ্ধি। তাঁর কথায়, '...বাংলাদেশের মুষ্টিমেয় কিছু লোক তাদের মৌলবাদী মূল্যবোধ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে একটা গোটা দেশের স্বাধীনতার ওপর। মূল্যবোধের ঠেলায় কোনদিন হাসপাতাল ভেঙেও স্থাপন করা হবে মন্দির, মসজিদ। ওই ঠিক একইভাবে মমতা শঙ্কর তার ব্যক্তিগত মূল্যবোধের ধারণা চাপিয়ে দিলেন গোটা বাঙালি জাতির ওপর, উনি হয়তো ভেবেছেন যে যার ঘাড়ে বাঙালি মূল্যবোধের ঝোলা ঝুলিয়ে ক্ষান্ত হয়ে সারা বছর তাকে বাঙালিয়ানা উপহার দেওয়ার সান্তা ক্লজ বানিয়ে রেখেছে সেই রবি ঠাকুরও হয়তো প্রকাশ্যে চুমু খাওয়াকে অপসংস্কৃতি মনে করতেন। মমতা শঙ্করের কাছে হয়তো 'প্রাণ চায় চক্ষু না চায়' গানটার অর্থ সেটাই, গানটা রবিবাবু যে অর্থে লিখেছেন উনি হয়তো উলটো অর্থ বুঝেছেন। তাই বলে গান হোক বা সামগ্রিক বাঙালি সংস্কৃতি, ব্যক্তিগত উপলব্ধিকে সার্বিক অর্থ হিসেবে স্থাপন করা যায় কি? যেখানে প্রকাশ্যে চুমু খাওয়ার অধিকার দেওয়া বা কেড়ে নেওয়ার এক্তিয়ার আদালতেরই নেই সেখানে আর সংস্কৃতি কি করবে? তাও আবার চুমুর কোনো সংস্কৃতি হয় নাকি?'

নিজের বক্তব্যের শেষে ঋদ্ধি লেখেন,
'ওনার মন্তব্যের মাধম্যে উনি দুটো সঠিক জিনিস প্রমাণ করলেন -
১)ওনার মতে প্রকাশ্যে চুমু খাওয়ার জন্যে সমাজে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে ,এই বক্তব্য প্রকাশ্যে বলে নিজের মানসিকতার পরিচয় দিয়ে উনি বুঝিয়ে দিলেন যে নিরাপত্তা দখলের লড়াইয়ে ‘Reclaim the Night’এর সাথে সাথে প্রয়োজন ‘Reclaim the Mind’-এর, প্রয়োজন এই পচা ভাবনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো।

২)উনি বলেছে জন্তুরা আমাদের থেকে অনেক ভালো। এটা একদম সঠিক, মানুষ প্রকাশ্যে খুন করে আর জন্তুরা প্রকাশ্যে একে অপরকে আদর করে। খুব ভালো হয়ে যদি ওনার টিভিতে কেউ ডিসকভারি বা অ্যানিম্যাল প্ল্যানেট চ্যানেলটা ইনস্টল করে দিতে পারে, না হলে ভালোবেসে কেউ জিম করবেট ঘুরতে যাওয়ার একটা টিকিটও পাঠাতে পারেন। আশাকরি আপনি আরও মমতাশীল হবেন।'

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • কালীঘাট মেট্রো স্টেশনে যুগলের প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া প্রসঙ্গে মমতা শঙ্কর বলেন, "জন্তুরাও বোধহয় আমাদের থেকে অনেক ভালো।"
  • অভিনেত্রীর এই বক্তব্যে তীব্র আপত্তি রয়েছে ঋদ্ধি সেনের।
Advertisement