সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের সঙ্গে জোট নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরের কলহ রীতিমতো অস্বস্তিকর রূপ নিল। ব্রিগেড পর্বের পর আইএসএফের সঙ্গে জোট করা নিয়ে অধীর চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury) ভূমিকাকে কাঠগড়ায় তুলে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন আনন্দ শর্মা (Anand Sharma)। এবার তার পালটা আনন্দকে তুলোধোনা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। কটাক্ষ করে বললেন, হয়তো অন্য কোনও দলের হয়ে রাজ্যসভার টিকিটের টোপ পেয়েছেন আনন্দ। সেজন্যই দলবিরোধী কথা বলছেন।
ঠিক কী বলেছিলেন আনন্দ শর্মা? ব্রিগেডের মঞ্চে একই সঙ্গে অধীর এবং আব্বাসের উপস্থিতি নিয়ে রাজ্যসভার ডেপুটি লিডার টুইট করে বলেন,”আইএসএফের (ISF) মতো শক্তির সঙ্গে কংগ্রেসের সমঝোতা নেহরু-গান্ধীর ধর্মনিরপেক্ষতার ভাবনার সঙ্গে মেলে না। মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেসের কোনও বাছ-বিচার করা উচিত নয়। একই মঞ্চে বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির উপস্থিতি ও সমর্থন বেদনাদায়ক ও লজ্জাজনক।” প্রসঙ্গত, আইএসএফের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে অধীর নিজেও নিমরাজি ছিলেন বলে সূত্রের খবর। কিন্তু আনন্দ শর্মার টুইটে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন তিনি। বলে দিলেন, দলের ভিতরে থেকে দলের ক্ষতি করার আগে সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া উচিত আনন্দের। সোমবার একাধিক টুইটে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি লিখেছেন,”পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস (Congress) বামেদের নেতৃত্বাধীন ধর্মনিরপেক্ষ জোটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। এবং হাইকম্যান্ডের অনুমতি নিয়েই এই জোটে এগিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। তাছাড়া এই জোটে কংগ্রেস নিজেদের দাবিমতো আসন পেয়ে গিয়েছে। অন্যান্য দলকে বামেরা নিজেদের কোটা থেকে আসন ছাড়ছে। আপনি যেভাবে সিপিএম নেতৃত্বাধীন জোটকে সাম্প্রদায়িক জোট বলছেন, সেটা আসলে বিজেপির সুর। যারা সত্যিই বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে লড়তে চায়, তাঁদের উচিত এভাবে বিজেপির সুরে কথা না বলে দলের হয়ে প্রচার করা।”
[আরও পড়ুন: ভোট ঘোষণার পরই কমিশনের নির্দেশে বন্ধ রাজ্য সরকারের ‘চোখের আলো’ প্রকল্প]
আসলে আনন্দ শর্মা বেশ কিছুদিন ধরেই কংগ্রেসের বিদ্রোহী শিবিরের অংশ হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে অধীর পরিচিত গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠ হিসেবে। বাংলায় আইএসএফের সঙ্গে জোট নিয়ে এই বিবাদ আসলে কংগ্রেসের অন্দরের বৃহত্তর বিবাদের বাস্তব প্রতিফলন। যা কিনা দলের অস্বস্তি অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। এইসব অস্বস্তির মধ্যেই আবার আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে আসন রফা নিয়ে অনেকটা এগিয়ে গেল কংগ্রেস। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বেশ কয়েক দফার আলোচনার পর আইএসএফকে আরও ৩টি আসন ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাত শিবির। দক্ষিণবঙ্গে আসন নিয়ে জট কেটে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ নিয়েও কথা শুরু হয়েছে। কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নানের দাবি, আর ২-১টি আসনে সমস্যা রয়েছে। আজকের মধ্যেই মিটে যাবে।