সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভয়ংকর দুর্ঘটনা। দাউদাউ করে জ্বলছে দামি গাড়ি। কোনওক্রমে উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন ঋষভ পন্থ। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন তিনি। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও ভারতীয় উইকেটকিপার-ব্যাটারের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিয়ে উলটে ঘটনার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সেখানে উপস্থিত লোকজন। শুধু তাই নয়, পন্থের ব্যাগ থেকে আর গাড়িতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা টাকা নাকি কুড়তে শুরু করে তারা।
নিষ্ঠুরতার এই চূড়ান্ত নিদর্শনের মাঝে ‘মসিহা’ হয়ে ওঠেন এক বাসচালক। এক মুহূর্ত দেরি না করে পন্থের দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির কাছে ছুটে যান তিনি। জানা গিয়েছে, ঋষভের (Rishabh Pant) গাড়ি যে পথ দিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তার উলটো দিক দিয়ে বাস চালিয়ে যাচ্ছিলেন সুশীল মান নামের ওই চালক। তাঁর গাড়িতে আগুন লাগতে দেখে গাড়ি থামিয়ে দ্রুত ছুটে যান সেদিকে। পন্থের মুখ তখন রক্তাক্ত। সুশীলের কথায়, “আমি দেখলাম, তাঁর শরীর গাড়ি থেকে অর্ধেক বেরিয়ে আছে। তিনিই আমায় নিজের পরিচয় দেন। বলেন, ‘আমি ঋষভ পন্থ‘। জানান তিনি একজন ক্রিকেটার। আমি ক্রিকেট দেখি না। তাই তাঁকে চিনতেও পারিনি। তবে বাসের অন্যরা চিনতে পেয়েছিলেন।” এরপর পন্থের জন্য তিনিই অ্যাম্বুল্যান্স ডাকেন। তাঁকে হাসপাতালে পৌঁছে দেন।
[আরও পড়ুন: পেলে বলেছিলেন, ‘তুমি তো আমাকে খেলতেই দিলে না’, কিংবদন্তির প্রয়াণে নস্ট্যালজিক গৌতম সরকার]
সুশীল জানান, ওই অবস্থাতেও ,পন্থ নিজের মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। সুশীলকে বলেন মা’কে ফোন করতে। কিন্তু দুর্ঘটনায় পন্থের ফোন সুইচড অফ হয়ে গিয়েছিল। বাসচালকের কথায়, “ঋষভকে বের করার পর চটপট গাড়ির ভিতরটা দেখেনি আর কেউ আটকে রয়েছে কি না। তারপর ওঁর নীল ব্যাগটা খুঁজে পাই। গাড়িতে ৭-৮ হাজার টাকাও ছিল। সেটাও ঋষভের সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে দিই।”
তবে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, পন্থ যখন দুর্ঘটনার কবল থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন, তখন নাকি সেখানে উপস্থিত অনেকেই সবটা দেখেও সাহায্যের জন্য এগিয়ে যাননি। উলটে ভিডিও করতে শুরু করেন। ছড়িয়ে থাকা টাকাও কুড়তে থাকেন। যে খবর সামনে আসতে রীতিমতো সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। যদিও এই তথ্য যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল।
এদিকে, বিসিসিআই জানিয়েছে, পন্থের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও মাথায় জোড়া ক্ষত রয়েছে। ছিঁড়ে গিয়েছে হাঁটুর লিগামেন্ট। পুড়ের গিয়েছে দেহের একাধিক অংশ। যার জেরে প্লাস্টিক সার্জারি করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় উইকেটকিপারের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মা হীরাবেনের প্রয়াণের শোকের মাঝেও পন্থের জন্য প্রার্থনা করতে ভুললেন না তিনি।