সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের রোহিঙ্গা (Rohingya) শিবিরগুলিতে ক্রমে বাড়ছে জেহাদিদের দাপট। প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়িয়ে সেখানে চলছে জঙ্গি কার্যকলাপ। এবার কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে মায়ানমারের সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি’র (ARSA) এক শীর্ষ নেতার দেহ পাওয়া গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হিন্দুদের গণহত্যায় জড়িত ২২ রোহিঙ্গা জঙ্গি]
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আরসা নেতা মহম্মদ হাসিমের দেহ পাওয়া যায়। স্থানীয় পুলিশ এই কথা স্বীকার করলেও বিশদে কিছু জানাতে চায়নি। সূত্রের খবর, আরসা-র সশস্ত্র বাহিনীর ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ হিসেবে পরিচিত হাসিম খুন হয়েছে। গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরেই খুন হয়েছে ওই জঙ্গিনেতা বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এই ঘটনার পরে আরসা জঙ্গিরা শরণার্থী শিবিরে জবাবি হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নিরাপত্তা পর্যবেক্ষকরা। আবার এক পক্ষের আশা, হাসিমের অনুপস্থিতিতে দুর্বল হবে আরসা-র সংগঠন।
বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে ত্রাস হয়ে বিরাজমান আরসা জঙ্গিরা। তবে সন্ত্রাসবাদী দমনে তৎপর হয়েছে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তারপর থেকেই ক্যাম্পগুলোতে বিশেষ অভিযানে আরসার ১১৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া রোহিঙ্গা শিবিরগুলি থেকে আরও ৫৮ অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছিলেন ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) মো. নাইমুল হক। এ অভিযানে অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবাও উদ্ধার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মায়ানমারের জঙ্গি সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি তথা আরসা-কে মদত দিচ্ছে পাকিস্তানের আইএসআই। আরসা সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীটির সঙ্গে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টালিজেন্স ও তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের মতো সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির যোগ দীর্ঘদিনের। ২০১৭ সালের আগস্টে আরসা মায়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালানোর পর থেকেই সেখানে সেনা অভিযান শুরু হয়। যার কারণে পরবর্তীতে সাড়ে সাত লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে (Bangladesh) এসে আশ্রয় নেয়। এর আগে চার লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীর মোট সংখ্যা ১১ লক্ষ।