সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সময় চলে যায়, বেয়াড়া টাট্টু। পৃথিবী বদলে যেতে থাকে। গমগমে স্টেডিয়ামে সবুজ মাঠে নেমে পড়ার উষ্ণতা কেবল বদলায় না। কিন্তু একেবারেই কি বদলায় না? দীর্ঘ কেরিয়ারের প্রবলতম প্রতিদ্বন্দ্বীর পাশে দাঁড়িয়ে সেই পরিবর্তনই বুঝি টের পেলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। হোক না ‘ফ্রেন্ডলি’ লড়াই, তাঁর সঙ্গে লিওনেল মেসি নামের ফুটবলারটির ম্যাচ মানেই তো ‘যুদ্ধ’! তবু সেই যুদ্ধ শুরুর আগে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে যখন তাঁরা পরস্পরকে অভিবাদন জানালেন, সিআর৭ অনুভব করলেন এলএম১০ নামের খেলোয়াড়টি শেষ পর্যন্ত তাঁর বন্ধুই! খেলাশেষে তাই সেকথা স্বীকারও করে নিলেন। নাম না করেও জানিয়ে দিলেন, এভাবে পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে ফের খেলতে নেমে তিনি আপ্লুত।
আসলে এটাই খেলার মাঠের মজা। প্রবলতম প্রতিপক্ষই সবচেয়ে বেশি ‘অনুপ্রেরণা’ জোগায়। বাধ্য করে প্রতিভার আগুনে নিজের ভিতরটা জ্বালিয়ে ক্ষমতার শেষবিন্দু পর্যন্ত লড়ে নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করতে। রজার ফেডেরার-রাফায়েল নাদাল থেকে শচীন তেন্ডুলকর-শেন ওয়ার্ন। ক্রীড়াক্ষেত্রের এমন সব ডুয়েল আসলে বুঝিয়ে দেয়, একজন ছাড়া অন্যজন অসম্পূর্ণই। মেসি ছাড়া কি রোনাল্ডো হয়ে উঠতে পারতেন আজকের কিংবদন্তি? এবং উলটোটাও।
[আরও পড়ুন: সহযাত্রীর গায়ে প্রস্রাব কাণ্ডে বিরাট অঙ্কের জরিমানা এয়ার ইন্ডিয়াকে, সাসপেন্ড পাইলটও]
তবে তিনি, সদ্য বিশ্বজয়ীর তকমা পরা লিওনেল মেসি (Lionel Messi) এখনও নীরব বৃহস্পতিবার রাতের খেলা নিয়ে। কিন্তু রোনাল্ডো শেয়ার করেছেন বেশ কয়েকটি ছবি। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে (স্বাভাবিক ভাবেই) তাঁর ও রোনাল্ডোর ছবি। সিআর৭-এর হাত এলএম১০-এর কাঁধে। আর মেসির হাত রোনাল্ডোর কোমরে। তাঁদের ফ্যানদের মধ্যেও সম্পর্ক একেবারে কাঠে কপাটে। তাঁরাও কিন্তু এমন এক মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে আবেগে ভেসে গেলেন। রোনাল্ডো লিখলেন, ‘আবারও মাঠে এবং স্কোর শিটে ফিরতে পেরে খুবই আনন্দিত। আর পুরনো সব বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়াটাও দারুণ।’
মেসি, এমবাপে, নেইমারের পিএসজি ৫-৪ গোলে হারাল রোনাল্ডোর (Cristiano Ronaldo) রিয়াধ অল স্টার একদশকে। ম্যাচের তিন মিনিটের মধ্যে গোল করলেন মেসি। ৩১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে রোনাল্ডো। বারো মিনিট পরে ফের তাঁর পায়ে ছোঁয়া বল জড়াল গোলপোস্টে। আর সেই সব মুহূর্তে উত্তেজনায় খানখান হয়ে গেল ফুটবল বিশ্ব। কে বলবে এটা নিছকই প্রদর্শনী ম্যাচ। নেইমার বা এমবাপেও বিরাট তারকা, কিন্তু এই দিনটা যেন সকলের চোখ ছিল মূলত মেসি ও রোনাল্ডোরই দিকে। হয়তো এই শেষবার একসঙ্গে মাঠে দৌড়তে দেখা গেল দুই মহাতারকাকে। দু’জনেরই কেরিয়ার প্রায় পৌঁছে গিয়েছে লাস্ট পয়েন্টে। কে ক’টা ব্যালন ডি’অর পেলেন, কে পেলেন না বিশ্বকাপ, কার কেরিয়ারে ক’টা গোল, কত সম্পদ- এসব তথ্য একদিন মূল্যহীন হয়ে যাবে। তবু ‘প্রাক্তন’ হয়ে যাওয়া রোনাল্ডো-মেসির কথা উঠলে তাঁদের ভক্তদের মনে পড়বে দীর্ঘ লড়াই শেষে তাঁরা একদিন দাঁড়িয়েছিলেন পরস্পরের গা ঘেঁষে… হ্য়াঁ, বন্ধু হয়েই।