shono
Advertisement

Breaking News

জি ডি বিড়লার প্রিন্সিপালকে গ্রেপ্তারির দাবিতে স্কুলে অবস্থান বিক্ষোভ রূপার

প্রিন্সিপালকে তলব লালবাজারের, আন্দোলনের 'জয়' দেখছেন অভিভাবকদের। The post জি ডি বিড়লার প্রিন্সিপালকে গ্রেপ্তারির দাবিতে স্কুলে অবস্থান বিক্ষোভ রূপার appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 11:54 AM Dec 04, 2017Updated: 12:53 PM Sep 21, 2019

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চারদিন কেটে গেলেও জি ডি বিড়লা স্কুলের নারকীয় কাণ্ডকে ঘিরে রাজ্যজুড়ে তুমুল বিক্ষোভ অব্যাহত। সোমবার বেলায় স্কুল চত্বরে পৌঁছে যান বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। বারবার আক্রান্তর মায়ের পাশে দাঁড়াতে চান, কথা বলতে চান। রূপা বারবার অনুরোধ করতে থাকেন, ‘আমি একজন মা, আমাকে আক্রান্তর মায়ের সঙ্গে কথা বলতে দিন।’ স্কুলের প্রিন্সিপালকে গ্রেপ্তারির দাবিতে এদিন স্কুল চত্বরে অবস্থানে বসেন রূপা। শুধু প্রিন্সিপালই নয়, স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্যদের বিরুদ্ধেও যথাযথ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন রূপা। তবে এই ঘটনায় রাজনৈতিক রং লাগুক, চাইছেন না অভিভাবকদের একাংশ। তাঁদের একাংশ এটাও বলছেন, স্কুল খুলুক। পরীক্ষায় বসুক তাঁদের সন্তানরা। লালবাজার সূত্রে প্রিন্সিপালকে তলব করা হয়েছে, এমনটাই জানিয়েছেন অভিভাবকরা। এই ঘটনাকে আন্দোলনের জয় হিসাবে দেখছেন অভিভাবকরা।

Advertisement

রূপার সাফ কথা, রাজনীতি করতে আসিনি। প্রয়োজনে আজ সারাদিন বসে থাকব এখানে। এদিকে, জি ডি বিড়লা স্কুলের ঘটনায় জনস্বার্থ মামলায় অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট। অস্থায়ী প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। ঘটনা জেনে মামলায় অনুমতি দিয়েছে বেঞ্চ। জি ডি বিড়লায় ছাত্রীর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ঘিরে ঘটনাপ্রবাহ ক্রমেই জটিল জায়গায় পৌঁছচ্ছে। বাড়ছে বিভ্রান্তির বহর। কর্তৃপক্ষের তরফে দায় এড়ানোর খেলাও পুরো মাত্রায় চালু রয়েছে বলে অভিভাবকরা মনে করছেন। তাঁদের বক্তব্য, হঠাৎ এভাবে স্কুলের ঝাঁপ ফেলে দেওয়ার মধ্যে থেকেই কর্তৃপক্ষের দুরভিসন্ধি স্পষ্ট হয়েছে। রবিবার প্রিন্সিপালের গ্রেফতারের দাবিতে দক্ষিণ কলকাতার একটা অংশ অচল করে দেন অভিভাবকরা। দফায় দফায় ধরনা, রাস্তা অবরোধ।

[চতুর্থ দিনেও জি ডি বিড়লায় জারি প্রতিবাদ, প্রিন্সিপালের গ্রেপ্তারের দাবি]

এদিকে, পরীক্ষার মুখে আচমকা নোটিস ঝুলিয়ে স্কুল বন্ধ হয়ে গিয়েছে! কবে খুলবে কেউ জানে না। আচমকাই অভিযুক্ত শিক্ষকদের বরখাস্ত করার খবর জানিয়ে নিগৃহীতার পরিবারকে চিঠি!  যদিও সে চিঠি কে কীভাবে দিয়ে গেল সে ব্যাপারে বাড়ির লোক অন্ধকারে। এরই মধ্যে প্রিন্সিপালকে গ্রেপ্তারের দাবি উঠে আসছে সবার উপরে। রবিবারই যাদবপুর থানায় অভিভাবকদের তরফে জি ডি বিড়লা সেন্টার ফর এডুকেশনের প্রিন্সিপাল শর্মিলা নাথের বিরুদ্ধে পকসো আইনে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অপরাধের তথ্যপ্রমাণ লোপাট ও অভিযুক্তদের সাহায্য করার অভিযোগও এর অন্তর্ভুক্ত। হুঁশিয়ারি দিয়ে অভিভাবকরা জানিয়েছেন,  ৪৮ ঘণ্টা দেখব। তার মধ্যে প্রিন্সিপালকে গ্রেপ্তার করা না হলে আন্দোলন জোরদার হবে।

রবিবার সকালে রানিকুঠির স্কুলটির মেন গেটে নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুলের দুটি বিভাগই (প্রাইমারি ও হায়ার সেকেন্ডারি) বন্ধ রাখা হচ্ছে। দেখে অধিকাংশ অভিভাবক হতভম্ব হয়ে যান। সোমবার সপ্তম অষ্টম ও নবম শ্রেণির ইউনিট টেস্ট শুরু হওয়ার কথা। এমতাবস্থায় কোন যুক্তিতে স্কুল বন্ধ করা হল, তা ওঁরা বুঝতে পারছেন না। এর ফয়সালা করতে আজ সোমবার সকালে ফের স্কুলের সামনে জমায়েত হয়েছেন মা-বাবারা। সমাধান সূত্র খোঁজার জন্য অভিভাবকদের সোমবার আলিপুর বডিগার্ড লাইনে ডেকে পাঠানো হয়েছে। যদিও সেই বৈঠকে আদৌ কেউ যাবেন কি না সে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

[জিডি বিড়লা স্কুলের বিরুদ্ধে এবার রাস্তায় অভিভাবকরা]

এই টানাপোড়েনের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরে বিক্ষোভ প্রতিবাদের ঝড় অব্যাহত। লোয়ার নার্সারির ৪ বছরের এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে জি ডি বিড়লার দুই পিটি টিচার অভিষেক রায় ও মহম্মদ মফিজুদ্দিনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিগৃহীতার বয়ান শুনে পুলিশের প্রাথমিক সন্দেহ, চকোলেটের লোভ দেখিয়ে তাকে টয়লেটে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন করা হয়। ছবি দেখে দুই শিক্ষককে চিহ্নিত করেছে বাচ্চাটি। এই পাশবিক ঘটনার আঁচ রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে সারা দেশে। এদিন টানা ৬ ঘণ্টার ম্যারাথন পথ অবরোধে দাঁড়িয়ে অভিভাবকরাও সাফ  জানিয়ে দিয়েছেন, অভিযুক্তদের আড়াল করার চেষ্টা করছেন স্বয়ং স্কুলের অধ্যক্ষ শর্মিলা নাথ। পকসো আইনে তাঁকেও গ্রেপ্তার করার দাবিতে সোচ্চার হয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

রবিবার রানিকুঠি, টালিগঞ্জ মোড়ে দীর্ঘক্ষণ অবরোধে সামিল হন কয়েক হাজার অভিভাবক। রবিবারের বিক্ষোভে আটকে পড়ে যানবাহন। কিন্তু উষ্মা নয়, পথচলতি যাত্রীরা বরং বলেছেন, ছোট মেয়েটার পাশে আমরা আছি। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি চাই। কালো পিচের রাস্তা জুড়ে আঁকা হয়েছিল  ফ্রক পরা এক মেয়ের ছবি। তার তলায় লেখা ‘প্লিজ গিভ আস সিকিউরিটি।’ এই নিরাপত্তা নিয়েই আট দফা দাবিও পেশ করা হয়েছে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে। কী রয়েছে এই দাবিতে? স্কুলে নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি স্কুলবাসেও সিসিটিভি লাগানোর দাবি তুলেছেন অভিভাবকরা। দাবি তোলা হয়েছে, স্কুলের এবং স্কুল বাসের সিসিটিভির সঙ্গে মা-বাবাদের মোবাইলের সংযোগ রাখতে হবে। যাতে ছাত্রীদের গতিবিধির উপর তারা সবসময় নজর রাখতে পারেন। স্কুলে মহিলা অ্যাটেনড্যান্ট নিয়োগের বিষয়টিও তোলা হয়েছে দাবিতে। একাদশ দ্বাদশ শ্রেণিতে ছাত্র-ছাত্রী একসঙ্গে পড়লেও তাদের জন্য আলাদা শৌচালয় নেই। ছেলে এবং মেয়েদের জন্য আলাদা শৌচালয় তৈরি করার জন্য স্কুলকে জানিয়েছেন অভিভাবকরা। পাশাপাশি অভিভাবকদের তৈরি এই ফোরামকে অবিলম্বে মান্যতা দেওয়ার দাবি উঠেছে। মা-বাবারা জানিয়েছেন, আটদফা দাবি মেনে নিয়ে স্কুল খোলা হোক। বিজেপি নেত্রী বলেন, ‘আমি একজন মা। আমার অধিকার আছে আসার। রাতে ঘুমোতে পারিনি এ ঘটনা জানার পর। এর মধ্যে রাজনীতিকে টানবেন না। এখানে এসেছি সমাধান করতে। বিকেল ৪টে পর্যন্ত বসে থাকব এখানে। প্রিন্সিপালকে গ্রেপ্তার করতে হবে।

[দুই ক্যানসার আক্রান্তর পাশে দাঁড়াতে এক অভিনব উদ্যোগ নাগরিক সমাজের]

The post জি ডি বিড়লার প্রিন্সিপালকে গ্রেপ্তারির দাবিতে স্কুলে অবস্থান বিক্ষোভ রূপার appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement