সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কমনওয়েলথ গেমসে মঞ্চে সোনার মেয়ের হাতে তৈরি ইতিহাসেও বিতর্ক ছেটাল অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া৷ অসমের সোনার মেয়ে হিমা দাসের বিশ্বজয়ের খবর দিতে গিয়ে ফেডারেশনের আলটপকা মন্তব্যের জেরে দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷ অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপে ৪০০ মিটার দৌড়ে অসমের মেয়ে সোনা জিতলেও ‘ভাল ইংরেজি বলতে পারেন না’ বলে মন্তব্য করে তড়িঘড়ি ক্ষমা চেয়ে বিতর্কে জল ঢালার মরিয়া চেষ্টা চালাল ফেডারেশন কর্তৃপক্ষ৷ তবে, ক্ষমা চাইলেও ‘ভাল ভিডিও’র দোহাই দিয়ে বিতর্কিত পোস্ট মুছে ফেলার কোনও উদ্যোগই নিল না কর্তৃপক্ষ৷
বিতর্কের সূত্রপাত আজ সকালে৷ দেশবাসীকে চমকে ৪০০ মিটার দৌড়ে বিশ্বজয় করেন অসমের মেয়ে হিমা দাস৷ গোটা দেশের কাছে এই খবর পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর এই সাফল্যকে তুলে ধরা হয়৷ ফেডারেশনের নিজস্ব টুইটার হ্যান্ডেলে হিমাকে অভিনন্দন জানানো হয়৷ একটি সাক্ষাৎকারে হিমার ভাঙা ইংরাজিতে কথা বলা প্রসঙ্গে টুইটারে লেখা হয়, ‘‘ইংরেজিতে ভাল কথা বলতে না পারলেও হিমা বিশ্বসেরা৷ আমরা হিমার এই সাফল্যে গর্বিত৷’’ আর এই টুইট ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷ কেন ফেডারেশনের তরফে হিমার ভাষার দখল নিয়ে প্রশ্ন তোলা হল? দৌড়ে বিশ্বজয়ের খেতাব জয়ের পরও একজন ক্রীড়াবিদকে তরতরিয়ে ইংরেজি বলতে হবে? দেশের হয়ে বিশ্বজয়ের ট্রফি ছিনিয়ে এনেও হিমাকে প্রমাণ দিতে হবে, তিনি ইংরেজি বলে পারেন কি না? দেশজুড়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ার পর হিন্দি ভাষায় ক্ষমতা চাইতে বাধ্য হয় ফেডারেশ৷
[ক্লাবে আসছেন রোনাল্ডো, তাই ৭ নম্বর জার্সি ছাড়তে আপত্তি নেই কুয়াদ্রাদোর]
এই প্রথম ভারতীয় হিসেবে আন্তর্জাতিক দৌঁড় প্রতিযোগিতায় সোনা জেতার অনন্য নজির গড়েছেন হিমা৷ ফিনল্যান্ডের ট্যাম্পারে অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপে ৪০০ মিটার দৌঁড়ে সোনা জেতেন অসমের মেয়ে৷ মাত্র ৫১.৪৬ সেকেন্ডে ৪০০ মিটার প্রতিযোগিতা শেষ করেন হিমা।
ফিনল্যান্ডে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নামার আগেই অবশ্য স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল কোনও না কোনও পদক জিতেই ফিরবেন হিমা। কারণ বাছাই পর্বে রেকর্ড টাইমিং-এ দৌঁড় শেষ করেন বছর আঠারোর তরুণী। সেমিফাইনালেও রেকর্ড সময়ে দৌঁড় শেষ করেছিলেন তিনি। তবে, ফাইনালে আমেরিকা, জামাইকার মতো দেশের সেরা সেরা স্প্রিন্টাররা ছিলেন, তাই লড়াইটা কঠিন ছিল হিমার জন্য। দৌঁড়ের শুরুটা খুব একটা ভালও করতে পারেননি তিনি। কিন্তু শেষ ৮০ মিটারে স্বপ্নের দৌঁড় তাঁকে সোনার পদক এনে দিল। ওই ৮০ মিটারের মধ্যেই তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বীকে টপকে যান হিমা। তাঁর দৌঁড় শেষ হয় ৫১.৪৬ সেকেন্ডে।
[নেইমারের মতোই লুটিয়ে পড়লেন চাহাল, নেটদুনিয়ায় হাসির ফোয়ারা]
চরম দারিদ্র্যের মধ্যে থেকে উঠে আসা হিমার আন্তর্জাতিক সার্কিটে প্রথম বড় সাফল্যে উচ্ছ্বসিত গোটা দেশ৷ সোনা জয়ের পর তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, “আমি এই জয় উপভোগ করছি।” হিমার এই জয়ের জন্য টুইট করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও টুইটে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন হিমা দাসকে৷
The post ভাল ইংরেজি বলতে পারেন না সোনার মেয়ে হিমা, ফেডারেশনের টুইট ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক appeared first on Sangbad Pratidin.