সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেনে বেকায়দায় পড়েছে পুতিন বাহিনী। কিছুতেই পড়শি দেশটিকে বাগে আনতে পারছে না রুশ সেনা। ফলে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে শীঘ্রই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে পারে রাশিয়া। আর সেই সুযোগেই পালটা হামলার পরিকল্পনা রয়েছে ইউক্রেনের। এমনটাই দাবি করেছে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-১৬ প্রধান রিচার্ড মুর।
আমেরিকার কলারাডোয় নিরাপত্তা বিষয়ক এসপেন সিকিউরিটি ফোরাম-এর সম্মেলনে হাজির ছিলেন এমআই১৬-এর প্রধান রিচার্ড মুর। সেখানে তিনি বলেন, “ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে সরাতে চেয়েছিল রাশিয়া (Russia)। সেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি। এটা পুতিন বাহিনীর বিরাট বড় ব্যর্থতা। আমার মনে হয় যে পুতিনের বাহিনীর দম ফুরিয়ে আসার জোগাড় হয়েছে। এটাও মনে হয় যে আগামী কয়েক সপ্তাহে ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে অসুবিধায় পড়বে রাশিয়া। কোনওভাবে যুদ্ধ থামাতে হবে তাদের। আর সে সময়ই ইউক্রেনীয়রা পাল্টা আঘাত হানবেন। তাঁদের মনোবল এখনও তুঙ্গে। পাশাপাশি, প্রচুর সংখ্যক অস্ত্রশস্ত্রও পাচ্ছে ইউক্রেন।”
[আরও পড়ুন: ক্ষমতায় এসেই কঠোর রনিল, গভীর রাতে বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্প গুঁড়িয়ে দিল শ্রীলঙ্কার সেনা]
কোন তথ্যের ভিত্তিতে এই মত ব্যক্ত করেছেন মুর, তা-ও জানিয়েছেন তিনি। মুরের দাবি, বিভিন্ন ইউরোপীয় শহর থেকে সম্প্রতি ৪০০-র বেশি রুশ গোয়েন্দা আধিকারিককে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি, গ্রেপ্তার হয়েছেন বহু ছদ্মবেশী গোয়েন্দা।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারির ২৪ তারিখ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। কিন্তু এখনও কিয়েভ দখল করতে পারেনি তারা। লড়াইয়ে কয়েক হাজার সেনা ও বিপুল অস্ত্র খুইয়ে গত এপ্রিলে সামরিক অভিযানের প্রথম পর্বে ইতি টানার কথা ঘোষণা করে রাশিয়া। পাশাপাশি, দোনবাস অঞ্চলে অভিযান তীব্র করে তোলে পুতিনের বাহিনী। ইতিমধ্যে মারিওপোল দখল করে ফেলেছে রুশ ফৌজ। দোনবাসে ইউক্রেনের শেষ ঘাঁটি সেভেরদোনেৎস্কও দখল করেছে পুতিন বাহিনী। কিন্তু এই যুদ্ধে তাদের বিস্তর ক্ষতি হয়েছে বলে খবর। সম্প্রতি আমেরিকা দাবি করেছে যে, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৫ হাজার রুশ সেনার। আহত কমপক্ষে আরও ৪৫ হাজার।
বিশ্লেষকদের মতে, এমআই-১৬ প্রধান রিচার্ড মুর যতটা আশা করছেন পিরিস্থিতি ততটাও কিয়েভের পক্ষে নয়। কারণ, এখনও যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো প্রচুর রসদ রয়েছে রুশ সেনার। তেল ও গ্যাস রপ্তানির টাকায় দীর্ঘদিন লড়াই করে যেতে পারবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একইসঙ্গে, আমেরিকা ও পশ্চিমের দেশগুলি থেকে অস্ত্র আসলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে একাধিকবার অভিযোগ করেছে কিয়েভ।