সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালল ডেস্ক: হিরোশিমা-নাগাসাকি দেখেছে বিশ্ব। আমেরিকার লিটল বয়, ফ্যাট ম্যনের পর সোভিয়েতের ‘জার বোম্বা’য় কেঁপেছে দুনিয়া। মহাপ্রলয়ের চাবিকাঠি এখন মানুষের হাতে। এহেন পরিস্থিতিতে আবারও দেখা দিয়েছে পরমাণু বিপর্যয়ের আশঙ্কা। জাপরজাই পরমাণু কেন্দ্রে বিস্ফোরণের ছক কষছে রাশিয়া।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছেন, জাপরজাই পরমাণু কেন্দ্রে বিস্ফোরণের ছক কষছে রাশিয়া। পরমাণু চুল্লির কাছেই নাকি অত্যন্ত কৌশলে বিস্ফোরক বসিয়েছে রুশ সেনা। সেগুলিতে বিস্ফোরণ হলে মনে হবে যেন ইউক্রেনের গোলার আঘাত। মঙ্গলবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ফোনে জেলেনস্কি আরও দাবি করেন, জাপরজাইয়ে ইউক্রেন হামলা চালিয়েছে, এই অভিযোগে কৌশলগত পরমাণু বোমা ব্যবহার করতে পারে পুতিন বাহিনী। উল্লেখ্য, ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু কেন্দ্র এটি।
এক বিবৃতিতে কমেডিয়ান থেকে রাষ্ট্রনায়ক হয়ে উঠা জেলেনস্কি বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে সতর্ক করেছি যে জাপরজাই পরমাণু কেন্দ্রে ভয়ানক কিছু করছে হানাদার বাহিনী। ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির সঙ্গে আমরা গোটা ঘটনাবলির উপর নজর রাখছি।”
[আরও পড়ুন: কানাডায় তরুণদের মধ্যে বাড়ছে বিস্মৃতির অসুখ! অজানা রোগের প্রকোপে বাড়ছে আতঙ্ক]
এদিকে, কিয়েভের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে মস্কো। এটা ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছে তারা। বলে রাখা ভাল, ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুর দিকেই জাপরজাই পরমাণু কেন্দ্র দখল করে নেয় রুশ সেনা। ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি’-কে (IAEA) রাশিয়া (Russia) জানিয়ে দেয় যে তাদের সেনা ইউক্রেনের জাপরজাই পরমাণু কেন্দ্রের আশপাশের সমস্ত এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
গত বছর রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় আগুন ধরে গিয়েছিল পরমাণু কেন্দ্রটির একাংশে। হামলায় বেশ কয়েকজন জখমও হন। সেখান থেকে তেজস্ক্রিয়তা ছড়াতে পারে, এই আতঙ্ক ক্রমেই বাড়ছে। ইউক্রেনে ১৫টি পরমাণু কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কেন্দ্রটি রয়েছে জাপরজাইয়ে। সেই কেন্দ্রের আশপাশে যুদ্ধ চলায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন গোটা বিশ্ব। নিউক্লিয়ার প্লান্টে কোনও ধরনের বোমা হামলা হলে বা কর্মীরা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে যে বড়সড় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে ইউক্রেন-সহ গোটা ইউরোপ, সেকথা তখনই জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। উল্লেখ্য, চেরনোবিল আণবিক কেন্দ্রের দখল ইতিমধ্যেই নিয়েছে রুশ ফৌজ। সব মিলিয়ে পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।