দীপাঞ্জন মণ্ডল: শবরীমালা মন্দিরে যে কোনও বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে আপাতত কোনও রায় দিল না সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। মামলাটি পাঠানো হল শীর্ষ আদালতের বৃহত্তর বেঞ্চে। সেখানে ৭ বিচারপতির তত্বাবধানে মামলার রায়দান হবে। আজ এই নির্দেশ দিলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ। ফলে আপাতত ঝুলেই রইল শবরীমালায় মহিলাদের অবাধে প্রবেশের ভবিষ্যৎ।
আগামী রবিবার, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেওয়ার আগে যে ক’টি গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় দেওয়ার কথা ছিল রঞ্জন গগৈয়ের, তার মধ্যে একটি এই শবরীমালার রিভিউ পিটিশন। গত বছর শবরীমালা মন্দিরে সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশ করতে দিতে হবে, এই রায় দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। কিন্তু তার বিরোধিতায় নামেন সেখানকার পুরোহিত এবং স্থানীয় ধার্মিকদের একাংশ। এনিয়ে বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কেরল। সুপ্রিম কোর্টে ফের পুনর্বিবেচনার আরজি জানানো হয়। বৃহস্পতিবার তারই রায় দেওয়ার কথা ছিল প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের। কিন্তু এই ৫ জনের মধ্যে বিচারপতি চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি ফালি নারিমান ভিন্নমত পোষণ করায় রায়দান করা হল না। তা পাঠিয়ে দেওয়া হল ৭ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে।
[আরও পড়ুন: অয্যোধ্যায় মসজিদ তৈরির জন্য এই জমিই দিতে হবে, সুর চড়ালেন মুসলিম নেতারা]
আজ, এই মামলার রায় পড়তে গিয়ে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বেশ কয়েকটি দৃষ্টান্তের কথা তুলে ধরেছেন। তাঁর মতে, শুধু হিন্দু মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকারই সীমাবদ্ধ, এমনটা নয়। মসজিদের ক্ষেত্রেও একই কঠোর নিয়ম আছে। এধরনের ধর্মীয় বিষয় শীর্ষ আদালতের বিচারের আওতায় আসে কি না, তাও বুঝে নেওয়া দরকার।
২০১৮ সালের জুলাই মাসে কেরলের শবরীমালা মন্দিরে সব বয়সী মহিলাদের অবাধ প্রবেশের পক্ষে রায় দিয়েছিল তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি মিশ্র বলেছিলেন, ‘দেশে ব্যক্তিগত মন্দিরের কোনও নীতি নেই। মন্দির কোনও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। মন্দির জনগণের সম্পত্তি। তাই জনগণের সম্পত্তি হিসেবে পরিচিত মন্দিরে যদি পুরুষ প্রবেশাধিকার পান তাহলে মহিলা পুণ্যার্থীও সেই অধিকার পাবেন। একবার মন্দির খুললে যে কেউ সেখানে যেতে পারেন। কী করে নির্দিষ্ট একটি বয়সকে সেক্ষেত্রে সীমারেখায় বাঁধা হবে?’ কিন্তু এই রায় কার্যকর করতে সংশয়ী ছিল শবরীমালার প্রধান পুরোহিত সংগঠন। তাঁরা এ নিয়ে কেরল সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতেও রাজি হয়নি। এসব নিয়ে সেসময় বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পরিস্থিতি। যার জেরে রায় পুনর্বিবেচনার আরজি এবং আজও তার নিষ্পত্তি হল না। আপাতত সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারপতির হাতেই শবরীমালায় মহিলাদের অবাধ প্রবেশের ভবিষ্যৎ।
[আরও পড়ুন: ৮০ বছর ধরে অটুট ভালবাসা, নিহত স্বামীর বুকে মাথা রেখে আধঘণ্টা পরই মৃত্যু বৃদ্ধার]
The post শবরীমালায় মহিলাদের ভাগ্য ঝুলে সুপ্রিম কোর্টে, মামলা গেল বৃহত্তর সাংবিধানিক বেঞ্চে appeared first on Sangbad Pratidin.