সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিকৃত ইতিহাস ও ভুল তথ্য দেখানো হচ্ছে জনপ্রিয় বাংলা মেগা সিরিয়াল (Bengali mega serial) ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’-তে (Karunamoyee Rani Rashmoni) । এমনই অভিযোগ উঠল সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের তরফে। বিশেষ করে কালীঘাট মন্দির (Kalighat Temple) ও সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের (Sabarna Roy Choudhury) যে ইতিহাস দেখানো হচ্ছে তাতে অনেক ভ্রান্তি রয়েছে। এমনটাই দাবি সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবার পরিষদের সম্পাদক দেবর্ষি রায়চৌধুরীর।
এক সংবাদমাধ্যমকে এব্যাপারে বলতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, বাকি যা ঘটনা দেখানো হচ্ছে, তা নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্যই করতে চান না। কিন্তু তাঁদের পরিবার সম্পর্কিত যা দেখানো হচ্ছে তা একেবারেই ভুল।
[আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্তদের কাছে বিনামূল্যে দু’বেলার খাবার পৌঁছে দেবেন অঙ্কুশ-অনীক-বিক্রমরা]
ঠিক কী ধরনের ভুল? অভিযোগ, সিরিয়ালের ১৪৫ নম্বর পর্ব থেকে কিংবদন্তি রায়চৌধুরী পরিবারের দু’টি চরিত্রকে আনা হয়েছে সিরিয়ালে। পরবর্তী প্রায় বারোটি পর্ব ধরে ওই চরিত্রগুলির মাধ্যমে যা দেখানো হয়েছে, তাতে বিস্তর গলদ রয়েছে। এছাড়া কালীঘাট মন্দির প্রসঙ্গ ও মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা সন্তোষ রায়চৌধুরীর চরিত্রায়ণে ভুল রয়েছে বলে অভিযোগ পরিষদের।
দেবর্ষি জানাচ্ছেন, সিরিয়ালে ‘টাইমলাইন’ সংক্রান্ত বড়সড় ভ্রান্তি রয়েছে। সিরিয়ালে দেখানো হয়েছে, সন্তোষ রায়চৌধুরী নিজে গিয়ে রাসমণির শ্বশুরবাড়ি গিয়ে তাঁকে কালীঘাটের মন্দিরে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। অথচ ইতিহাস অনুযায়ী, রাসমণির বিয়ে হয় ১৮০৪ সাল নাগাদ। এর ৫ বছর আগেই প্রয়াত হন সন্তোষ। দু’জনের কখনও দেখাই হয়নি। মন্দিরের সম্পূর্ণ হওয়াটাও দেখে যেতে পারেননি প্রতিষ্ঠাতা। পরে তাঁর কাজ সম্পূর্ণ করেন তাঁর নাতি রাজীবলোচন রায়চৌধুরী। এই পুরো হিসেবটাই সিরিয়ালে গন্ডগোল হয়ে গিয়েছে।
এছাড়াও আরও নানা ধরনের তথ্যভ্রান্তির অভিযোগ তুলছেন দেবর্ষি। দেখানো হয়েছে কালীঘাটের ব্রহ্মশিলা আদিগঙ্গার ধারে পড়ে রয়েছে। পরে কাপালিকরা পুজো করে তাতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করছেন। সেই সময় রানি রাসমণিকে নৌকাপথে আসতেও দেখা যায়। অথচ শিলাখণ্ডের ওই ঘটনা ১৫৭০ সালের। যা রাসমণির জন্মের প্রায় আড়াইশো বছর আগের ঘটনা! তাছাড়া সেই সময় কালীঘাট মন্দির সংলগ্ন এলাকায় যেমন বনজঙ্গল দেখানো হয়েছে তাও ইতিহাসের সঙ্গে একেবারেই মেলে না। কেননা ততদিনে কালীঘাট নামক জনপদটি তৈরি হয়ে গিয়েছে।
এমনই নানা ধরনের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তুলছে সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবার পরিষদ। তাদের মতে, তেমন দরকার পড়লে রায়চৌধুরী পরিবারের সঙ্গে দেখা করে চিত্রনাট্য লেখা যেত। তাহলে আর এমন ভুল ইতিহাস দর্শকদের দেখতে হত না।