আকাশ মিশ্র: হঠাৎই শোনা গেল রিংটোন। পকেট থেকে ছোট্ট একটা ফোন বার করে কানে নিয়ে অল্প কথা। তারপর এক মিনিট! কাকে মারতে হবে তা জেনে নিয়েই, বন্দুক হাতে পৌঁছে যেতেন বব বিশ্বাস। সুজয় ঘোষের ‘কাহানি’ (Kahani) ছবিতে ‘বব বিশ্বাস’ (Bob Biswas) ওরফে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় (Saswata Chatterjee) ফোনে টুকটাক কথা বলে কাজকর্ম সেরে ফেলতেন। কিন্তু বাস্তব জীবনে মোবাইল থেকে শাশ্বত ছিলেন শতহস্ত দূরে। তাঁকে পেতে হলে ল্যান্ডলাইনেই করতে হত ফোন। তবে আর এসব নয়। দিন দিন ব্য়স্ততা বাড়ছে। কখনও বলিউড, কখনও টলিউড। দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, বুদাপেস্টে যাতায়াত। এসময় পকেটে মোবাইল না থাকলে চলে! তাই অনেক ভেবে চিন্তে মোবাইল ব্যবহার শুরু করলেন বব বিশ্বাস থুড়ি শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। পকেটে স্মার্টফোন রেখে আজকাল দিব্য চালাচ্ছেন ফোনালাপ। এতদিন বাড়ির ল্যান্ডলাইনে অভিনেতা ধরা দিতেন। বাড়ির বাইরে থাকলে শাশ্বতকে ধরা ছিল কঠিন। তবে এখন শহর ছাড়লেও মোবাইলেই নিকট বন্ধুবান্ধব, পরিচালক, প্রযোজকরা প্রথম বব বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে অভিষেক বচ্চনের ‘বব বিশ্বাস’। এই ছবির পরিচালক সুজয় ঘোষের কন্যা দিয়া অন্নপূর্ণা ঘোষ। ছবিটি নিয়ে ইতিমধ্যেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে দর্শকদের মধ্য়ে। অনেকেই ‘বব বিশ্বাস’-এর সঙ্গে অভিষেককে ঠিক মেলাতে পারছেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনদের বলতে শোনা গিয়েছে, ”বব বিশ্বাস একজনই, তিনি হলেন শাশ্বত চট্টোপাধ্য়ায়।”
যাঁকে নিয়ে এত কথা, সেই ‘বব বিশ্বাস’ কি দেখেছেন ছবিটা? সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের তরফ থেকে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়কে ফোনে ধরা হলে, তিনি বলেন, ”সবে হায়দরাবাদ থেকে ফিরেছি। সারাদিন একটা ফটোশুটে ব্যস্ত ছিলাম। একের পর এক কাজ। প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্য়ে বব বিশ্বাস ছবিটি দেখার সুযোগই পাচ্ছি না। তবে আমি দেখব। আমি একটা সংবাদমাধ্যমে পড়েছি, অভিষেক চায় আমি যেন ছবিটা দেখি। ওর ব্যবহারে আমি খুব খুশি হয়েছি। ছবিটা জলদি দেখতে হবে।” তবে এসব কথা শাশ্বত বলেন ল্যান্ডলাইনেই। হাতে স্মার্টফোন এলেও, সব সময় ফোনের দিক তাকিয়ে থাকেন না তিনি। আর থাকা সম্ভবও নয়। এই সময়কার তিনি অন্যতম ব্যস্ত অভিনেতা। নতুন ছবির স্ক্রিপ্ট পড়ে নেন স্মার্টফোনে। গাড়ির ড্রাইভার থেকে প্রযোজক, পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলেন তাতেই। শাশ্বতর কথায়, ”মোবাইল ফোন দরকারের জন্য, খেলনা তো নয়, যে সব সময় হাতে রাখব!”
[আরও পড়ুন: ‘শুনে আসা গল্প বদলে গেল!’, বয়সে ছোট ভিকিকে বিয়ে করায় ক্যাটরিনার প্রশংসায় কঙ্গনা! ]
শুধু মোবাইল নয়, একসময় তো সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছিলেন না শাশ্বত। এখন অবশ্য সেই অভ্যাস বদলে ফেলেছেন তিনি। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে প্রোফাইল খুলেছেন। অন্যদের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় অবশ্য সক্রিয় নন বড়পর্দার ‘বব বিশ্বাস’। কেন? শাশ্বতর সোজা সাপটা জবাব, ”ওটাও আমি নিজে করি না। তার জন্য আলাদা লোক রয়েছে।” ইনস্টায় বুধবার তাঁর সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘অনুসন্ধান’ ছবির পোস্টার শেয়ার করে ভক্তদের সিনেমা হলে গিয়ে দেখার অনুরোধ করেছেন তিনি। বাড়ছে তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যাও।
৯ বছর আগে মুক্তি পায় সুজয় ঘোষের ‘কাহানি’ ছবি। প্রথম সপ্তাহ থেকেই বক্স অফিসে তা ঝড় তুলেছিল। ছবির গল্প বলার ধরনে মুগ্ধ হয়েছিলেন দর্শক থেকে সমালোচক। কিন্তু আলাদা করে নজর কাড়েন শাশ্বত। গল্প ছাপিয়ে গিয়ে ‘বব বিশ্বাস’ কাল্ট হয়ে ওঠে। সেই ছবিটি দেখার পর সিনেপ্রেমীদের শ্বাসপ্রশ্বাসে শুধুই শাশ্বত। এহেন চরিত্রকে আরও বেশি করে দর্শকের সামনে আনতেই সুজয় ঘোষের কন্যা এই নামেই তৈরি করে ফেলেন ছবিটি । তবে ছবিতে শাশ্বতকে না দেখায় হতাশই হয়েছেন তাঁর অনুরাগীরা। তাঁর স্টাইল অনুকরণ করেও সব অর্থে ‘বব বিশ্বাস’ হয়ে উঠতে পারেননি অভিষেক, এমনটাই বলছেন সিনে ভক্তরা। আর প্রথম বব বিশ্বাস? আপাতত প্রবল ব্যস্ততার মাঝেই তিনি সময় খুঁজছেন দ্বিতীয় বব বিশ্বাসকে দেখার!
[আরও পড়ুন: ‘মিথ্যে বলা বন্ধ হোক’, বিবাহবিচ্ছেদের জল্পনার মধ্যেই ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট দেবলীনার! ]