সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র দুই দিন আগের কথা। ‘আবোল তাবোল’-এর একটি অনলাইন সংস্করণ নিয়ে ভারচুয়াল আড্ডায় যোগ দিয়েছিলেন। পিছনে ছিল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের (Soumitra Chatterjee) ছবি। কারণ প্রিয় ‘আবোল তাবোল’-এর ভাষ্যপাঠ তিনিই করেছিলেন। মৃত্যুর কয়েকমাস আগেই লকডাউনের মধ্যে। বাবা সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) সঙ্গে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সম্পর্ক তিনিই সবচেয়ে কাছ থেকে দেখেছিলেন। সেই সমস্ত কথাই ঘুরে ফিরে আসছিল সন্দীপ রায়ের (Sandip Ray) মুখে। জানিয়েছিলেন, কীভাবে রায় পরিবারের অঙ্গ হয়ে গিয়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
‘জলসাঘর’-এর শুটিং চলছিল। তরুণ সৌমিত্র গিয়েছিলেন শুটিং দেখতে। আচমকা পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ডাক পড়ল। তার কাছে যেতেই দেখতে পেলেন সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন স্বয়ং ছবি বিশ্বাস। সৌমিত্রকে দেখিয়ে সত্যজিৎ রায় বললেন এ হচ্ছে আমার ‘অপুর সংসার’-এর অপু। সেই ক্ষণ থেকে যেন শুরু হয়েছিল ভারতীয় সিনেমার নতুন অধ্যায়। শুটিংয়ের সুবাদেই সত্যজিৎ রায়ের বাড়িতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের যাতায়াত ছিল। প্রথমে লেক অ্যাভিনিউর বাড়িতে, তারপর লেক টেম্পল রোডে। তবে সেখানে শুধুমাত্র সিনেমা নিয়ে কথা হত না। নিয়মিত শিল্পচর্চা হত পরিচালক ও তাঁর নায়কের মধ্যে। অদ্ভুত রসায়ন ছিল দু’জনের মধ্যে জানান সন্দীপ রায়।
[আরও পড়ুন: অপর্ণা থেকে চারুলতা, ফিরে দেখা পর্দায় নারীদের সঙ্গে নায়ক সৌমিত্রর ভিন্ন রসায়ন]
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে কোনওদিন তারকা, নায়ক কিংবা হিরো হিসেবে ভাবতে পারেননি সন্দীপ রায়। কারণ সেটে কোনওদিন সেভাবে তিনি কিংবদন্তি শিল্পীকে দেখেননি। পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গেও যেভাবে কথা বলতেন, সেভাবেই কথা বলতেন সেটে চা নিয়ে আসা মানুষটির সঙ্গে। ‘অশনি সংকেত’-এর সময় এই মানুষটাকেই নির্দ্বিধায় ট্রলি ঠেলতে দেখেছেন। এভাবেই রায় পরিবারের একজন হয়ে উঠেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। হয়ে উঠেছিলেন মানিকদার খুব কাছের পুলু। সৌমিত্রর প্রয়াণে তাই শোকস্তব্ধ বিশপ লেফ্রয় রোডও।