সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একমাস আগে ইউএপিএ আইনের সংশোধনী পাশ হয়েছে সংসদের বাদল অধিবেশনে। বিলটি পাশ হওয়ার সময়ই সংসদের ভিতরে এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন বিরোধী দলের সাংসদরা। শাসকদল বিজেপি এভাবে বিরোধীদের কন্ঠরোধ করতে চাইছে বলেও অভিযোগ তোলেন। সেসময় এই আইনের অপব্যবহার হবে না বলে তাঁদের আশ্বস্ত করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তারপর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা কমে গেলেও কেউ না কেউ আদালতের দ্বারস্থ হবে বলে জল্পনা চলছিল। শেষ পর্যন্ত তা সত্যি হল। ওই সংশোধনী অসাংবিধানিক বলে অভিযোগ জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা হল দেশের সর্বোচ্চ আদালতে। আর এর প্রেক্ষিতে শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিস পাঠাল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। দ্রুত এই আইনের সংশোধনীর বিষয়ে জবাব দিতে বলা বয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলেও আশ্বস্ত করছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।
[আরও পড়ুন: এনআরসির ‘ক্ষত’! তালিকায় নাম নেই মিশন চন্দ্রযানের অন্যতম উপদেষ্টা বিজ্ঞানীর]
সজল অবস্তি নামে এক ব্যক্তি ইউএপিএ সংশোধনীর বিরুদ্ধে ওই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, এই আইনের ফলে একজন নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুন্ন হবে। এর ফলে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি যে কোনও ব্যক্তিকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে। এই সংশোধনীর ফলে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার বিঘ্নিত হবে। ওই ব্যক্তির আবেদনের ভিত্তিতে কেন্দ্রের জবাব তলব করেছে শীর্ষ আদালত।
গত বুধবারই নতুন ইউএপিএ আইন অনুযায়ী, জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহার, লস্কর-ই-তইবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সইদ, মুম্বইয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলায় অভিযুক্ত জাকিউর রহমান লাকভি ও কুখ্যাত ডন দাউদ ইব্রাহিমকে সন্ত্রাসবাদী তকমা দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: হাসিমুখে জেলে গেলেন চিদম্বরম, তিহারেই কাটাতে হবে জন্মদিন]
আগের আইন অনুযায়ী, তল্লাশি চালাতে গেলে বা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে গেলে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারী আধিকারিককে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ডিজিপির অনুমতি নিতে হত। কিন্তু, নতুন আইনে তার দরকার হবে না। এনআইএর আধিকারিকরা শুধুমাত্র তাদের অধিকর্তার অনুমতি নিয়ে যে কাউকে জেরা করতে পারবেন। আগে মামলায় দোষীসাব্যস্ত হওয়ার পর সন্ত্রাসবাদী তকমা দেওয়া যেত। কিন্তু, নতুন আইন অনুযায়ী কী ধরনের প্রমাণ থাকলে কাউকে ব্যক্তিগতভাবে সন্ত্রাসবাদী বলে যাবে তার কোনও নির্দিষ্ট গাইডলাইন নেই বলেই অভিযোগ বিরোধীদের। এমনকী কাউকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করার জন্য কোনও মামলাও দায়ের করতে হবে না। এর ফলে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে শাসকদলের সুবিধা হবেই বলেই অভিযোগ করছে বিরোধীরা।