সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক : পৃথিবীর চৌহদ্দিতে সে এসেছিল আড়াই বছর আগে। এতদিনে ধরা পড়ল তার স্বরূপ! সৌরমণ্ডলে (Solar system) চক্কর কেটে বেড়ানো 46P/Wirtanen ধূমকেতুকে (Comet) ঘিরে বিস্ময়ের শেষ নেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের। পৃথিবীর খুব কাছ ঘেঁষে বেরিয়ে যাওয়া ধূমকেতুটির শরীর থেকে ছড়িয়ে পড়ছে অ্যালকোহল (Alcohol)! কার্যত এক মহাজাগতিক মদ্যপ যেন সেটি। এর আগে এমন কোনও ধূমকেতুর সন্ধান মেলেনি যার শরীরে এই পরিমাণে অ্যালকোহলের উপস্থিতি রয়েছে।
‘দ্য প্ল্যানেটারি সায়েন্স জার্নাল’-এ প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে জানা গিয়েছে ‘৪৬পি/ ভিরটানেন’ ধূমকেতুটির কথা। হাউইয়ের ডবলিউএম কেক অবজারভেটরির এক টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে সেটির গতিবিধি। সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে সে।
[আরও পড়ুন: সৌরজগত পেরিয়ে আরও সুদূরে পাড়ি সম্ভব? আশা জাগাচ্ছে নাসার পারমাণবিক ঘড়ি]
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিদ্যার গবেষণাগারের ধূমকেতু বিশারদ নিল ডেলো রুসো এই গবেষণার অন্যতম গবেষক। তিনি জানাচ্ছেন, ‘‘এপর্যন্ত যতগুলি ধূমকেতুর কথা আমরা জানতে পেরেছি, তাদের মধ্যে এই ধূমকেতুতেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে অ্যালকোহলের সন্ধান মিলেছে। যা থেকে বোঝা যাচ্ছে, সৌরমণ্ডল সৃষ্টির সময় যখন এই ধূমকেতুটির জন্ম হয়েছিল তখন কীভাবে কার্বন, অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন পরমাণুগুলি ছড়িয়ে পড়েছিল।”
সাধারণ ভাবে জানা যায়, ধূমকেতু যত সূর্যের কাছাকাছি আসে তত তার নিউক্লিয়াস উত্তপ্ত হয়। এরপর তার শরীরের বরফ গলতে শুরু করলে তা তরল না হয়েই গ্যাসে রূপান্তরিত হয়। এর ফলে যে ঘন গ্যাসীয় আকৃতি তৈরি হয়, তার নাম কোমা। পরে সূর্যের কাছে এলে সৌর বিকিরণে সেই কোমা থেকেই সৃষ্টি হয় ধূমকেতুর লেজ। ভিরটানেনের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, সৌর বিকিরণ ছাড়াও আরও এক অজানা কারণেও তার নিউক্লিয়াস উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
এছাড়াও পর্যবেক্ষণ করে দেখা গিয়েছে ধূমকেতুটির শরীর থেকে ইথেন, হাইড্রোজেন সায়ানাইড ও অ্যাসিটিলিনের থেকেও বেশি করে জলীয় কণা নির্গত হচ্ছে।