সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বুধবার, শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন আতঙ্ক ছড়ায় লোকসভায়। এদিন আচমকাই সেখানে ঢুকে পড়ে দুই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। হলুদ গ্যাস ছড়ায় তাঁরা। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে সংসদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। কড়া সুরক্ষা বলয় ভেদ করে কীভাবে ওই দুই ব্যক্তি ভিতরে প্রবেশ করলেন? কারণ সংসদের ভিতরে ঢুকতে গেলে বেশ কয়েকটি ধাপ পেরতে হয়। জেনে নেওয়া যাক সেগুলো কী কী। এবার কোন বদল আসছে নিরাপত্তা ব্যবস্থায়?
২০০১ সালে পুরনো সংসদ ভবনে হামলার পর পার্লামেন্টের (Parliament) ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়িয়ে চার ধাপের করে দেওয়া হয়। এই সুরক্ষা বেষ্টনী অনুযায়ী, দিল্লি পুলিশের একটি বিশেষ বাহিনী, সিআরপিএফের জওয়ানদের মোতায়েন করা থাকে সংসদে। এছাড়াও থাকে সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স ও দমকলবাহিনী। এর পর সংসদের দর্শকদের প্রবেশ করার ক্ষেত্রে পেরতে হয় বেশ কয়েকটি ধাপ। তিনটি ফুল-বডি স্ক্যানারের মধ্যে দিয়ে দর্শকদের যেতে হয়। তাঁদের শরীরের তল্লাশি নেওয়া হয়। তাঁদের সঙ্গে যে জিনিসগুলো থাকে সেগুলোর পরীক্ষা করা হয়। ফোন, ব্যাগ, জলের বোতল, বা পয়সা নিয়ে ঢোকার অনুমতি নেই সেখানে। প্রত্যেকের ক্ষেত্রে আধার কার্ড দেখানোও বাধ্যতামূলক। সমস্ত কিছু সম্পূর্ণ নিরীক্ষণ করার পরই ভিতরে যাওয়ার জন্য পাস দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ‘ফাঁসি দেওয়া উচিত’, মত সংসদে হামলাকারীর বাবার, ‘মরতে চাইত’ দাবি অভিযুক্তের মায়ের]
দর্শকদের পাস দেওয়ার ক্ষেত্রেও কয়েকটি বিষয় যাচাই করা হয়। কী কারণে দর্শক সংসদের ভিতরে যেতে চাইছেন তা খতিয়ে দেখা হয়। প্রবেশের ক্ষেত্রে সংসদের সদস্যদের সই করা চিঠিও দেখাতে হয়। ফলে এই আঁটসাঁট নিরাপত্তা পেরিয়ে এড়িয়ে এদিন কীভাবে ওই দুজন ভিতরে প্রবেশ করলেন? এর উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি। শুধু তাই নয় তাদের জুতোর মধ্যে লোকানো ছিল গ্যাস ক্র্যাকারও। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, ঠিকমত ওই ব্যক্তিদের শারীরিক তল্লাশি করা হয়নি। কিন্তু তারা কীভাবে তিন-তিনটি ফুল-বডি স্ক্যানার এড়িয়ে গেল তা এখনও জানা যায়নি।
জানা গিয়েছে, এদিনের ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরাল করা হবে। ঝাঁপিয়ে পড়া আটকাতে কাচের আবরণে মুড়ে ফেলা হবে দর্শক গ্যালারি। তাছাড়া, সাংসদ, কর্মী ও সংবাদমাধ্যমের জন্য পৃথক প্রবেশদ্বার থাকবে। চার নম্বর গেট দিকে ঢোকানো হবে দর্শকদের। বিমানবন্দরের ধাঁচে হ্যান্ড হেল্ড বডি স্ক্যানার নিয়ে থাকবেন রক্ষীরা। নিরাপত্তারক্ষীদের সংখ্যাও আরও বাড়িয়ে তোলা হবে।
বুধবার এই হামলার পর জানা যায় ওই দুই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি মাইসুরুর বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহার অতিথি ছিলেন। তাঁদের মুখে ছিল, ‘জয় ভীম’ স্লোগান। তার পরই প্রশ্ন ওঠে কীভাবে বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহার পাস হাতে পায় হামলাকারীরা? এদিনের এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা।