সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুসলিম ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধ্বংস করতে বদলে দেওয়া হচ্ছে মুসলিম ধর্মস্থানের নাম। এমনই অভিযোগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) দ্বারস্থ হতে চলেছেন শিয়া (Shia) ধর্মগুরুরা। বিতর্কের সূত্রপাত লখনউয়ের শাহনাজাফ ইমামবাড়ার নাম বদলে ‘গাজি-উদ-দিন-হায়দারের কবর’ করা নিয়ে। একটি ধর্মীয় স্থানকে কবর বলে উল্লেখ করাতেই মূলত অসন্তুষ্ট ধর্মীয় নেতারা। প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আরজি জানিয়ে ইতিমধ্যেই পাঠানো হবে চিঠি।
ঠিক কী হয়েছে? জানা গিয়েছে, সম্প্রতি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া তথা এএসআই ওই স্থানের সাইনবোর্ড বদলে নতুন নামটি টাঙিয়ে দিয়েছে। তারপর থেকেই মাথাচাড়া দেয় বিতর্ক। শিয়া ধর্মগুরু মহম্মদ মির্জা ইয়াসুব আব্বাসের অভিযোগ, এটা মুসলিম ইতিহাস ও ঐতিহ্যকেই ধ্বংস করার চেষ্টা। যদিও এএসআইয়ের পালটা দাবি, ‘অ্যানসিয়েন্ট মনুমেন্টস প্রিজার্ভেশন অ্যাক্ট ১৯২০’ অনুযায়ীই এই নামকরণ করা হয়েছে। সেখানে এই স্থানকে ‘গাজি-উদ-দিন-হায়দারের কবর’ হিসেবেই বর্ণনা করা হয়েছে। যা দেখে সঠিক নাম হিসেবে এটাকেই সাইনবোর্ডে রাখা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: শিয়ালের গর্তে কাটা হাত? বারুইপুরে নিহত প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর দেহাংশের খোঁজে হন্যে পুলিশ]
এই যুক্তি মানতে নারাজ সিয়া ধর্মগুরুরা। ‘অল ইন্ডিয়া শিয়া পার্সোনাল ল বোর্ডে’র সাধারণ সম্পাদক মৌলানা ইয়াসুব আব্বাসের যুক্তি, ”প্রার্থনাস্থল হিসেবে শাহনাজাফ ইমামবাড়া নির্মাণ করিয়েছিলেন নবাব গাজি-উদ-দিন-হায়দার। যখন খোদ নির্মাতাই এটাকে কবর হিসেবে চিহ্নিত করতে চাননি, সেখানে এএসআই কী করে তা করতে পারে?”
উল্লেখ্য, ১৮১৬-১৭ সালে অযোধ্যার শেষ নবাব ও প্রথম রাজা গাজি-উদ-দিন-হায়দার তৈরি করিয়েছিলেন শাহনাজাফ ইমামবাড়া। এটি আসলে ইরাকের নজফে অবস্থিত আলির কবরের একটি প্রতিরূপ। নবাব গাজি-উদ-দিন ছাড়াও তাঁর তিন স্ত্রীও এখানে শায়িত। যা মাথায় রেখেই শিয়া ধর্মগুরুদের দাবি, ‘গাজি-উদ-দিন-হায়দারের কবর’ নামটা স্রেফ কাগজে-কলমে ছিল। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে তাকে অন্য নামেই ডেকেছে সবাই। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া ধর্মীয় স্থানকে কবর হিসেবে দেখাতে চাইছে বলেই অভিযোগ তাঁদের। একে আসল নামেই ডাকা হোক বলে দাবি জানিয়ে মোদিকেও শিগগিরি চিঠি লেখা হবে বলেও জানাচ্ছেন তাঁরা।