সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাসপাতালের মর্গে লাশ বাড়ছিল। ২৫, ৫০, ৬০, ১০০...। শিশু, যুবা, মাঝবয়সি, বৃদ্ধ— চোখের সামনে নিথর হয়ে পড়ে ওঁরা। অধিকাংশই মহিলা। কিছুক্ষণ আগে যে চনমনে ভিড় জরো হয়েছিল হাথরাসের ভোলে বাবার ধর্মীয় সমাবেশে, তারাই এখন ঠান্ডা পাথরে পরিণত। চারপাশে তীব্র শোক, স্বজনহারাদের কান্নার রোল। নিয়তির এই নির্মম পরিহাস কতক্ষণ মেনে নেওয়া যায়! পুলিশও তো রক্তমাংসের মানুষ। হঠাৎই মাথা ঘুরে পড়ে যান কনেস্টবল রবি কুমার। অসুস্থ হওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যে মৃত্যু হয় তাঁর। দ্রুত চিকিৎসা শুরু হলেও বাঁচানো যায়নি।
উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে (Hathras) ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২১-এ পৌঁছেছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন শতাধিক মহিলা ও ৭টি শিশু। আহত ২৮। ইতিমধ্যেই দায়ের হয়েছে এফআইআর। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সেখানে স্বঘোষিত ধর্মগুরু সুরজ পাল ওরফে ভোলে বাবা ওরফে নারায়ণ সাকার হরির নাম নেই! রয়েছে তাঁর ‘মুখ্য সর্দার’ অর্থাৎ ঘনিষ্ঠ সহকারীর নাম। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, আয়োজকরা সৎসঙ্গের প্রকৃত দর্শকসংখ্যা লুকিয়েছিলেন অনুমতি নেওয়ার সময়।
[আরও পড়ুন: রেলগেট খোলা অথচ সিগন্যাল সবুজ, বরাতজোরে দুর্ঘটনা এড়াল কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস]
পুলিশ সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, ধর্মগুরুর পায়ের ধুলো নেবেন বলে এগিয়েছিলেন ভক্তরা। তখনই গুরুর দেহরক্ষীরা তাঁদের আটকান, এমনকী পালটা ঠেলে সরানোর চেষ্টাও করেন। তখনই ভিড়ের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। এর পর পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা। ওই ঘটনাতেই লাশের পাহাড় জমতে থাকে হাসপাতালের মর্গে। এবং স্বজনহারাদের কান্নার রোল— সব মিলিয়ে পরিবেশ তীব্র শোকাতুর হয়ে উঠছিল।
ওই মেডিক্যাল কলেজের মর্গেই মোতায়েন ছিলেন দুই পুলিশকর্মী। তাঁদের মধ্যে এক জন কনস্টেবল রবি কুমার।
[আরও পড়ুন: হাথরাস প্রথম নয়, ধর্মীয় স্থানে পদপিষ্ট হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যুমিছিল আগেও দেখেছে দেশ]
কনস্টেবলের সহকর্মীরা জানান, মর্গে লাশের পাহাড় দেখে অস্বস্তি বোধ করছিলেন রবি। মৃত্যু, রক্ত, আর্তনাদ দেখে বিচলিত হয়ে বারবার পায়চারি করছিলেন। এরপর আচমকাই অসুস্থ বোধ করেন। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। যদিও ২০ মিনিট পরেই মৃত্যু হয় তাঁর। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই পুলিশকর্মীর।