অরিজিৎ সাহা: নিত্য যাতায়াতে অনেকেরই চোখে পড়েছে ঘটনাটি। কেউ গুরুত্ব দিয়েছেন, কেউবা দেননি। কিন্তু বিপদের দিনে এর গুরুত্ব যে কতখানি তা আর নতুন করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। গুরুত্ব আছে বলেই মেট্রোর কামরায় কামরায় রাখা অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র। তা থাকার নির্দিষ্ট স্থানও আছে। কিন্তু সেখানে যন্ত্র কই? মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে। এভাবেই চলছে মেট্রো।
[ চিংড়িঘাটা থেকে শিক্ষা, সাইকেল আরোহীদের জন্য পৃথক জোনের ভাবনা ]
প্রতি কামরাতেই নির্দিষ্ট স্থানে লেখা থাকে, ‘অগ্নিশমন যন্ত্র এখানে’। তিরচিহ্নের অভিমুখ সাধারণত নিচের দিকে। ফলে অগ্নিশমন যন্ত্রের খোঁজে সেখানেই তাকান যাত্রীরা। কিন্তু বেশিরভাগ কামরাতেই দেখা যায় যন্ত্রটি সেখানে থাকে না। বদলে পুরো জায়গা জুড়ে আছে কোনও বেসরকারি সংস্থার বিজ্ঞাপন। তাহলে কি কামরায় আগুন নেভানোর কোনও যন্ত্র থাকেই না? অবশ্যই থাকে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা সিটের নিচে। একমাত্র নিত্যযাত্রীদের পক্ষেই তা জানা সম্ভব। কলকাতার মতো মেট্রো সিটি, যেখানে বহুভাষী মানুষ যাতায়াত করেন, বাইরের রাজ্য থেকে মানুষ আসেন, তাঁরা অন্তত মেট্রোর নির্দেশিকায় সম্পূর্ণ তথ্য পান না। অগ্নিশমন যন্ত্র এখানে আছে বললে বোঝা যায় না, ঠিক কোথায় আছে। যদি দেওয়ালে বা গেটের পাশে তা রাখা অসুবিধাজনক হয়ে থাকে, তবে নির্দেশিকাতেই স্পষ্ট করে বলা উচিত ছিল যে, তা সিটের তলায় রাখা আছে। তাতে অন্তত পুরো ব্যাপারটা অনেকটা স্বচ্ছ হত।
[ ভারতী ঘোষকে নোটিস সিআইডির, অবিলম্বে হাজিরার নির্দেশ ]
টুকিটাকি দুর্ঘটনা লেগেই আছে মেট্রোতে। দিন কয়েক আগেই যাত্রীবিহীন একটি রেক লাইনচ্যুত হওয়ায় সন্ধের দিকে বেহাল হয়েছিল মেট্রো পরিষেবা। তারপর একদিন মেট্রো থেকে ধোঁয়া বেরতেও দেখা যায়। সব মিলিয়ে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা কোনওভাবেই কম নয়। ফলে সুরক্ষা কবচ জরুরি হওয়া বাঞ্ছনীয়। মেট্রো কর্তৃপক্ষ সে ব্যবস্থাও রেখেছে। কিন্তু যেভাবে সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে তা অনেকেরই অগোচরে। নিত্যযাত্রীরা অনেকেই বলছেন, যাঁরা মেট্রোয় যাতায়াত করেন না, তাঁরা কোথায় কী আছে জানতেই পারবেন না। ফলে কোনওদিন আচমকা দুর্ঘটনার মুখে পড়লে হাতের কাছে উপায় থাকতেও বিপদে পড়বেন। বিজ্ঞাপনের জায়গা সরিয়ে তাই নির্দিষ্ট জায়গায় অগ্নিশমন যন্ত্র রাখা থাকলেই ভাল। আর কোনও কারণে যদি তা সেখানে রাখা সম্ভব না হয়, তাহলে নির্দেশিকায় একটি তির চিহ্নে কাজ না সেরে, অন্তত স্পষ্ট করে বলা উচিত। এমনটাই প্রত্যাশা যাত্রীদের।
[ সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিক, তীব্র ঝাঁজালো গন্ধে লিলুয়ায় অসুস্থ ৩২ ]
এরকম অনিয়মের অবশ্য আরও অভিযোগ রয়েছে। যেমন, মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়টি। মেট্রোর কামরায় মহিলারা বিপদে পড়লে কোথায় ফোন করবেন- নিশ্চয় সেই নম্বর দেখেছেন। কিন্তু মেট্রোর ভিতরে অধিকাংশ সময়ই মোবাইলের নেটওয়ার্ক থাকে না। তাহলে কেউ বিপদে পড়লে কীভাবে ফোন করবেন? এখন জিও আসার পর যদিও এই সমস্যার খানিকটা সুরাহা হয়েছে, কারণ, জিও-র ফোর-জি নেটওয়ার্ক মেট্রোর মধ্যেও খানিকটা পাওয়া যায়।
The post মেট্রোয় অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র কই? জায়গা ঢেকেছে বিজ্ঞাপনে appeared first on Sangbad Pratidin.