সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কানোয়ার যাত্রাপথে পড়া খাবারের দোকান, রেস্তরাঁ, ধাবায় মালিকদের নাম লিখতে বাধ্য করা যাবে না। শুক্রবার এই সংক্রান্ত মামলায় স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিল দেশের শীর্ষ আদালত। একইসঙ্গে যোগী সরকারের নির্দেশিকার উপর যে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল তা বহাল রাখা হয়েছে। আগামী ৫ অগাস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ততদিন পর্যন্ত জারি থাকবে এই অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ।
কানোয়ার যাত্রা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই দেশজুড়ে বিতর্ক চলছে। চলতি মাসে শুরু হতে চলেছে কানোয়ার যাত্রা (Kanwar Yatra)। তার আগে উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) সরকার নির্দেশ দিয়েছে, কানোয়ার যাত্রার প্রতিটি রুটে যত খাবারের দোকান রয়েছে, তার সবকটিতেই বড় বড় ব্যানার দিয়ে লিখতে হবে দোকান মালিকের নাম। যার মূল উদ্দেশ্য, পুণ্যার্থীরা যাতে আলাদাভাবে চিনতে পারেন হিন্দু ও মুসলিম দোকানগুলিকে। কেবল উত্তরপ্রদেশ নয়, একই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh) এবং উত্তরাখণ্ডেও (Uttarakhand)। এই নির্দেশের মূল উদ্দেশ্য ধর্মীয় বিভাজন আরও স্পষ্ট করে তোলা, তেমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের।
[আরও পড়ুন: খনিজ সম্পদে রয়্যালটি রাজ্যেরও, বড় নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের]
যোগী সরকারের এহেন নির্দেশিকার উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়, দোকানের মালিকদের নাম, ফোন নম্বর এবং কর্মীদের নাম উল্লেখ করায় কখনই জোর করা উচিত নয়। পুলিশ এক্ষেত্রে জোর করতে পারে না। দোকানে শুধুমাত্র কোন ধরনের খাবার বিক্রি করা হয় সেটি উল্লেখ করা যেতে পারে। একইসঙ্গে যোগী সরকারকে এই বিষয়ে নোটিসও দেওয়া হয়। শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে যোগী সরকারের তরফে আদালতকে জানানো হয়, কানোয়ার যাত্রা যেন শান্তিপূর্ণ থাকে, সেই জন্যই দোকান মালিকদের নাম দোকানের সাইনবোর্ডে লিখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি সরকারের নির্দেশিকার উপর স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ারও আর্জি জানানো হয় আদালতে। তবে সে আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত।
[আরও পড়ুন: সাদ্দামের পর জামাল, এবার সোনারপুরের ত্রাসের বাড়িতেও ‘গুপ্তঘরের’ হদিশ!]
এ প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়, শীর্ষ আদালতের নিষেধাজ্ঞা কেন্দ্রীয় আইন লঙ্ঘনের সামিল। ফুড সেফটি আইন ২০০৬ অনুযায়ী, খাদ্য সামগ্রী বিক্রেতার নাম ডিসপ্লে করার নির্দেশ রয়েছে। যে তালিকায় হোটেল, রেস্তরাঁ, ধাবা পড়ে। সেই অনুযায়ী শীর্ষ আদালতের 'নিষেধাজ্ঞা' সঠিক নয়। পালটা আদালত প্রশ্ন করে যদি তাই হয় তবে কেন শুধুমাত্র একটি রাজ্যেই তা লাগু হচ্ছে। প্রমাণ করুন এমন আইন সব রাজ্যে লাগু রয়েছে। পাশাপাশি বিরোধী পক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন, ৬০ বছর ধরে কানোয়ার যাত্রা চলছে। এবার এমন নির্দেশ জারি না হলেও কানোয়ার যাত্রায় কোনও প্রভাব পড়ত না। সব পক্ষের যুক্তি শোনার পর এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয় ৫ অগাস্ট। ততদিন পর্যন্ত যোগী সরকারের নির্দেশিকার উপর স্থগিতাদেশ জারি রাখা হয়।