shono
Advertisement

পঞ্চায়েতে নিজেদের সংগঠনের নামে লড়ছে শ্যামাপ্রসাদের হিন্দু মহাসভা! প্রতীক বট-নারকেল-ট্রাক্টর

শুধুমাত্র সাচ্চা হিন্দুদের টিকিট দেবে শ্যামাপ্রসাদের সংগঠন।
Posted: 12:41 PM Jun 15, 2023Updated: 04:10 PM Jun 15, 2023

সন্দীপ চক্রবর্তী: পঞ্চায়েতে লড়তে নেমে হিন্দুধর্মের শুভ হিসাবে যে দু’টিকে ধরা হয়, সেই দুই ফল ও গাছ প্রতীক হিসাবে পাচ্ছে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা (Akhil Bharat Hindu Maha Sabha)। গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রতীক হবে, বটবৃক্ষ ও পঞ্চায়েত সমিতিতে নারকেল। জেলা পরিষদে প্রতীক হবে ট্রাক্টর।

Advertisement

বস্তুত, শ‌্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ‌্যায়ের পর এই প্রথম নিজেদের সংগঠনের নামে ভোটে লড়ছে হিন্দু মহাসভা। এবং তাও একেবারে তৃণমূলস্তরে, গ্রামসভার ভোটে। আদ‌্যন্ত সনাতনী হিন্দুত্ববাদী এই সংগঠনের এভাবে বাংলার ভোটে লড়াই করা রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণও বটে। আপাতত যা ঠিক হয়েছে, একশোর বেশি আসনে তারা প্রার্থী দেবে। বহু ক্ষেত্রে নির্দলদের সমর্থন জানানো হতে পারে। দেওয়ালে দেওয়ালে বা পোস্টারে প্রতীকের পাশাপাশি শ‌্যামাপ্রসাদের মুখও আঁকা থাকবে। বুধবারই প্রতীক চূড়ান্ত হয়। তবে প্রকৃত হিন্দু মহাসভার অধিকার নিয়ে রাজ‌্য বিজেপির তিন নেতা রাজ‌্য নির্বাচন কমিশনে (Election Commission) দরবার করেন বলে সূত্রে খবর। শেষ পর্যন্ত চন্দ্রচূড় গোস্বামীর সভাপতিত্বে কমিটিকেই প্রকৃত বলে সিলমোহর দেয় কমিশন। সংগঠনের ই-মেলেও প্রতীক ও বিস্তারিত জানানো হয়। আগামী ভোটেও একই প্রতীক রাখতে সমস‌্যা হবে না।

[আরও পড়ুন: চিন সীমান্ত থেকে মাত্র ৫০ কিমি দূরে উত্তরাখণ্ডে চালু হবে নয়া বিমানবন্দর]

গত দুর্গাপুজোতেও প্রথমে অসুরের মুখ মহাত্মা গান্ধীর (Mahatma Gandhi) আদলে দেখিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল মহাসভা। পরে অবশ‌্য স্থানীয় পুলিশ গিয়ে চুল ও গোঁফ লাগিয়ে অসুরের রূপ বদলে দেয়। গ্রামের প্রত‌্যন্ত এলাকায় তার পর থেকেই সংগঠন আরও বাড়িয়েছে তারা। মহাসভার রাজ‌্য সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী জানিয়েছেন, ‘‘প্রকৃত সনাতনী জাতীয়তাবাদী শক্তি হিসাবে আমরাই রাজ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করব।’’ বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে শ‌্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ‌্যায় ও মহারাজ মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দী প্রতিষ্ঠিত হিন্দু মহাসভার বর্তমান কমিটির বক্তব‌্য, ‘‘বিজেপি (BJP) হিন্দুত্ব নিয়ে কেবল রাজনীতি করে, প্রকৃতভাবে হিন্দুদের জন‌্য কিছু করে না। যদি করত, তাহলে বিধানসভা ভোটের পর নির্বাচনোত্তর হিংসার সময় বিজেপি নেতারা ফোন সুইচড অফ করে রাখতেন না।’’ অন‌্য দলের কেউ সনাতনী জাতীয়তাবাদী মনোভাবাপন্ন হলে টিকিট দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন চন্দ্রচূড়। পাশাপাশি নির্বাচনী ইস্তাহারও ঠিক করে নিয়েছে মহাসভা। তার মধ্যে ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণা বা আইন করে গোহত‌্যা বন্ধ ছাড়াও রয়েছে, গ্রামের মানুষকে পাঁচশো ইউনিট পর্যন্ত নিখরচায় বিদ্যুৎ, ফ্রি ইন্টারনেট, নিঃশুল্ক বিশুদ্ধ পানীয় জল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি। দাবি করা হয়েছে, ১৮ বছর পর্যন্ত সবার নিঃশুল্ক উৎকৃষ্টতম শিক্ষার ব‌্যবস্থা করা, নিঃশুল্ক চিকিৎসা, সনাতনী জাতীয়তাবাদী পরিবারের অন্তত একজন করে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে।

[আরও পড়ুন: দুর্নীতি তরজায় সরগরম তামিলনাড়ু, রাজ্যে সিবিআই প্রবেশে ‘না’ স্ট্যালিন সরকারের]

উল্লেখ‌্য, শ‌্যামাপ্রসাদ ১৯৪৬ সালে হিন্দু মহাসভার হয়ে লড়াই করেন। সংগঠনের প্রতিষ্ঠিত সদস‌্য ছিলেন লালা লাজপৎ রাইও। রাজ‌্য সংগঠনের বর্তমান কমিটির যোগাযোগ রয়েছে দিল্লির সঙ্গেও। শ‌্যামাপ্রসাদের বাড়িতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও তাঁদের দেখা যায়। পঞ্চায়েতের জন‌্য আগ্রহী প্রার্থীদের যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে একটি ফোন নম্বরে। শর্ত, সেই প্রার্থীকে প্রকৃত ‘হিন্দু’ হতে হবে। গত বিধানসভায় ভবানীপুর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নির্দল হিসাবে প্রার্থীও হয়েছিলেন চন্দ্রচূড়। নোট-এ গান্ধী সরিয়ে নেতাজির মুখ রাখার সোচ্চার দাবিও তুলেছে মহাসভা। কট্টরপন্থী মহাসভা পঞ্চায়েতে লড়ার মাধ‌্যমে আসলে যে হিন্দুত্ববাদকে বিস্তৃত করতে চাইছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement