সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্কুলের বেতন মেটাতে না পারায় দুই বোনকে অর্ধনগ্ন করে ফেরত পাঠানো হল বাড়িতে। ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে বিহারে। ওই দুই ছাত্রী স্কুলের বেতন মেটাতে পারেনি বলে তাদের ইউনিফর্ম কেড়ে নেয় বেসরকারি স্কুলটির এক শিক্ষিকা, অভিযোগ এমনটাই। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী বলছেন ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’, সেই দেশের বুকেই এমন লজ্জাজনক ঘটনা আরও একবার শিক্ষাব্যবস্থার করুণ দশাকেই যেন প্রকাশ্যে নিয়ে এল।
গত শুক্রবার বিহারের বেগুসরাইতে এই ঘটনার কথা মিডিয়ায় চাউর হওয়ার পর শনিবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তাতে কি শিশু মনের এই গভীর ক্ষতে প্রলেপ পড়বে? ৬ ও ৮ বছরের ওই দুই বোনই বি আর এডুকেশন অ্যাকাডেমির ছাত্রী। কাঁদো কাঁদো চোখে তারা সাংবাদিকদের বলেছে, “অঞ্জনা ম্যামকে বাবা বারবার বলেছিল, আগামিকালই মাইনের টাকা দিয়ে দেব। কিন্তু ম্যাম কোনও কথা শোনেনি। প্রথমে আমাদের স্কুলের ড্রেস খুলে ফেলতে বলে। আমাদের লজ্জা করছিল। পরে ম্যাম জোর করে ইউনিফর্ম খুলে নেয়।”
[লস্করের জঙ্গি দলটাকেই মুছে দেব’, সহকর্মীর মৃত্যুতে শপথ পুলিশের]
স্কুল থেকে দুই মেয়েকে কার্যত পোশাকবিহীন অবস্থায় ফিরতে দেখে চমকে যান তাদের মা মনীষা। তাঁর অভিযোগ, ছুটির সময় তাঁর স্বামী যখন দুই মেয়েকে আনতে স্কুলে গিয়েছিলেন, সেই সময় প্রিন্সিপাল দুই মাসের বকেয়া বেতন জমা দিতে বলেন। “আমার স্বামী তাঁকে অনুরোধ জানান, যে শনিবারই তিনি টাকার বন্দোবস্ত করে ফেলবেন, কিন্তু ওই শিক্ষিকা আমাদের দুই মেয়েকে একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে জোর করে ওদের পোশাক খুলে নেয়”, বলছেন মনীষা। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় এক সহৃদয় মহিলা একটি গামছা ধার দিলে ওই দুই ছাত্রীর মুখ ঢেকে তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে হয়। সেই থেকে আক্রান্ত দুই নাবালিকাই মুখে কোনও খাবার তুলছে না, ক্রমাগত কাঁদছে ও আতঙ্কে সিঁটিয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাদের মা।
পুলিশ এই ঘটনার অভিযোগ পেয়েই সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করতেই পুলিশ ওই স্কুলের ডিরেক্টর এন কে ঝা ও মূল অভিযুক্ত অঞ্জনা কুমারীকে গ্রেপ্তার করেছে। বেগুসরাইয়ের এসপি আর কে মিশ্র বলেছেন, “এই অভিযোগকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিচার করছি আমরা। তদন্ত শুরু হয়েছে। স্কুলের অন্যান্য আধিকারিক ও শিক্ষকদেরও তদন্তের জন্য তলব করা হবে।” যদিও স্কুলের ডিরেক্টর ও অভিযুক্ত শিক্ষিকা দু’জনেই তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। এন কে ঝা বলছেন, “আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত হচ্ছে।” অভিযুক্ত শিক্ষিকার বক্তব্য, “আমি একজন মেয়ে হয়ে কী করে আমার ছাত্রীদের পোশাক খুলে নিতে পারি? সবটাই মিথ্যা।
[মসজিদে লাউডস্পিকার বাজানোর প্রতিবাদে একজোট হিন্দু ও মুসলিমরা]
The post বেতন মেটাতে অসমর্থ দুই বোনকে প্রায় নগ্ন করে বাড়ি পাঠাল স্কুল appeared first on Sangbad Pratidin.