সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'একটা চড়' নিয়ে দেশ, রাজনৈতিকমহল তোলপাড়। কঙ্গনার রানাউতের (Kangana Ranaut) চড়কাণ্ডের রেশ এখনও চলছে। বিমানবন্দরে অভিনেত্রী তথা মাণ্ডির নবনির্বাচিত সাংসদকে চড় মেরে কি সিআইএসএফ জওয়ান কুলবিন্দর কৌর উচিত কাজ করেছেন? এই প্রশ্নে নানা মুনির নানা মত…! কেউ দাঁড়িয়েছেন ‘ক্যুইন’-এর পাশে। আবার কেউ বা কুলবিন্দর কৌরকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। যদিও ওই মহিলা জওয়ান চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার গ্রেপ্তারও হয়েছেন। এদিকে সাংসদও মেতে নিজের নতুন ইনিংস নিয়ে। তবে চড় কাণ্ডের রেশ এখনও ছাইচাপা আগুনের মতোই জ্বলছে। যার জেরে এবার তিন সদস্যের এক তদন্ত টিম গঠন করা হল।
জানা গিয়েছে, মুম্বই পুলিশের তরফেই এই 'সিট' গঠন করা হয়েছে। চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে চড় কাণ্ডের পর কুলবিন্দর কৌরের শাস্তি মেনে নিতে পারেননি পাঞ্জাবের কৃষকরা। সেই প্রেক্ষিতেই মোহালির সমযুক্ত কিষাণ মোর্চা এবং কিষাণ মজদুর মোর্চার সদস্যরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এক মিছিল করেন। তারপরই এই তদন্ত টিম গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুম্বই পুলিশ। মোহালির এসপি হরবীর সিং আটওয়ালের তত্ত্বাবধানেই এই 'সিট' টিম তদন্ত করবে বলে জানা গিয়েছে। আর সেই টিমে রয়েছেন দুই মহিলা পুলিশ অফিসারও। গত ৭ জুন CISF জওয়ান কুলবিন্দর কৌরের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৩ এবং ৩৪১ ধারায় এফআইআর দায়ের হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে কৃষক নেতারাও এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি, কঙ্গনাই প্রথম পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য করেন। যার জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।
[আরও পড়ুন: ক্যানসারে আক্রান্ত মিঠু, চলছে কেমো, স্ত্রীকে নিয়ে মুখ খুললেন ‘ফেলুদা’ সব্যসাচী]
পাঞ্জাবের কৃষক পরিবারের মেয়ে কুলবিন্দর কৌর (Kulwinder Kaur)। তবে পেশায় তিনি জওয়ান। যাঁরা মা নিজে কৃষক আন্দোলনে শামিল হয়ে দিল্লির রাজপথে বসেছিলেন তিন কৃষ্টি বিল প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে। বছর তিনেক আগে কঙ্গনা রানাউত সেপ্রসঙ্গে বলেছিলেন, “কৃষক আন্দোলনের জন্য পাঞ্জাবের মহিলাদের ১০০ টাকায় কেনা হয়েছে।” সেই রাগের বশেই চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কর্মরত মহিলা জওয়ান বৃহস্পতিবার কঙ্গনা রানাউতকে সামনে থেকে দেখে ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পেরে সপাটে চড় কষান।
জানা গিয়েছে, কঙ্গনাকে চড় মারা ওই কর্তব্যরত জওয়ান আদতে পাঞ্জাবের সুলতানপুর লোধির বাসিন্দা। গত ২ বছর ধরে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কাজ করছেন। আরেক CISF জওয়ানের সঙ্গে সুখের ঘরকন্নাও রয়েছে তাঁর। বাড়িতে দুই সন্তানও রয়েছে কুলবিন্দরের। কৃষক আন্দোলনকে ‘খলিস্তানি’ বলে আক্রমণ করার জেরেই কঙ্গনা রানাউতকে তিনি চড় মেরেছেন বলে জানিয়েছেন। কেন এমন কাণ্ড ঘটালেন কুলবিন্দর কৌর? প্রশ্নের মুখে পড়তেই তাঁর সপাট জবাব, “কঙ্গনা বলেছিলেন ১০০ টাকার জন্য কৃষকরা ওখানে বসে আছে। উনি কি গিয়ে বসেছিলেন সেখানে? কঙ্গনা যখন এহেন কটুক্তি করছিলেন কৃষক আন্দোলন নিয়ে, তখন আমার মা শামিল ছিলেন ওই প্রতিবাদে।” বোনের সমর্থনে মুখ খুলেছেন তাঁর ভাই শের সিং মহিবালও। তাঁর কথায়, “কঙ্গনার পার্স চেকিংয়ের সময়ই ঘটনাটা ঘটেছে বলে জানতে পারলাম। উনি বলেছিলেন, পাঞ্জাবের আন্দোলনরত মহিলারা ১০০ টাকায় বিক্রি হয়ে গিয়েছে। বাকবিতণ্ডার মাঝে মাথা ঠান্ডা না রাখতে পেরেই হয়তো আমার বোন চড় কষিয়েছে।”
ঘটনার পরই কুলবিন্দরকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ভাবী সাংসদকে শারীরিক হেনস্তা করার অভিযোগে এফআইআরও দায়ের হয়েছে। খোদ মহিলা কমিশনের প্রধান রেখা শর্মার হস্তক্ষেপে এই কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে। যার জেরে রেখাকেও বিস্তর সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে বর্তমানে। এসবের মাঝেই কঙ্গনা রানাউতের চড় কাণ্ডের জন্য তৈরি হল 'সিট'।