সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিহারে ‘দোস্তি’র সম্পর্ক বজায় রেখেই অরুণাচল প্রদেশে ‘কুস্তি’ শুরু করে দিল নীতীশ কুমারের জেডিইউ (JDU) এবং বিজেপি (BJP)। অরুণাচল বিধানসভায় নির্বাচিত জেডিইউয়ের ৬ বিধায়ক একসঙ্গে যোগ দিলেন বিজেপিতে। ফলে রাজ্যে প্রধান বিরোধী দলের তকমা হারাল নীতীশ কুমারের দল। আপাতত উত্তর পূর্বের এই রাজ্যে নীতীশের দলের হাতে রইলেন একজন মাত্র বিধায়ক।
২০১৯ সালে অরুণাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র ১৫টি আসনে লড়াই করেছিল জেডিইউ। তার মধ্যেই সাতটিতে জয় পায় তারা। উনিশের বিধানসভার পরই অরুণাচলের আঞ্চলিক দলের স্বীকৃতি পায় নীতীশের (Nitish Kumar) দল। এবং কংগ্রেসকে সরিয়ে রাজ্যে প্রধান বিরোধী দলের তকমাও পায় তারা। সেসময় বিহারে বিজেপির সঙ্গে জোট থাকা সত্ত্বেও অরুণাচল প্রদেশে বিরোধী আসনে বসার সিদ্ধান্ত নেয় জেডিইউ। দলের বর্ষীয়ান নেতা কে সি ত্যাগী জানান, রাজ্যে বিজেপির সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রেখে চলবে তাঁদের দল। তাঁরা গঠনমূলক বিরোধীর ভূমিকা নেবেন। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ছবিটা বদলে যায়। শাসক বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন জেডিইউ বিধায়করা। নভেম্বর মাসে দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য জেডিইউয়ের তিন বিধায়ককে শোকজও করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবারই তাঁরা সদলবলে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান। বিধানসভার স্পিকার তাঁদের সিদ্ধান্ত মেনেও নেন। যেহেতু জেডিইউয়ের দুই তৃতীয়াংশের বেশি বিধায়ক একযোগে বিজেপিতে নাম লেখালেন, তাই কেউ দলত্যাগ বিরোধী আইনেও সমস্যায় পড়বেন না। ৬ জেডিইউ বিধায়ক যোগ দেওয়ায় ৬০ আসনের অরুণাচল বিধানসভায় বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা দাঁড়াল ৪৮। কংগ্রেসের (Congress) বিধায়ক সংখ্যা মাত্র ৪।
[আরও পড়ুন: ইতিহাসের দোরগোড়ায় কেরলের কন্যা, দেশের সর্বকনিষ্ঠ মেয়র হিসেবে নির্বাচিত SFI নেত্রী]
এদিকে, অরুণাচল প্রদেশের রাজনীতির এই মোচড় একেবারেই পছন্দ করছেন না নীতীশ ঘনিষ্ঠরা। কারণ, সদ্যই বিহার নির্বাচনে ধাক্কা খেয়েছে দল। নীতীশ কুমার ফের মুখ্যমন্ত্রী হলেও দলের আসন সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। নীতীশের ঘনিষ্ঠ মহলের একাংশের অভিযোগ, বিজেপির সহযোগিতা না থাকার দরুনই বিহারে দুর্বল হতে হয়েছে দলকে। বস্তুত, ২০১৭ সালে লালুর হাত ছেড়ে নতুন করে বিজেপির হাত ধরার পর থেকেই দুর্বল হওয়া শুরু করেছেন নীতীশ। পরিস্থিতি এমনই যে এখন বিহারে সরকার চালাতে এখন পুরোপুরি বিজেপির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হচ্ছে তাঁকে। এর মধ্যে আবার অরুণাচলের প্রায় গোটা পরিষদীয় দলটাই ভাঙিয়ে নিয়ে গেল গেরুয়া শিবির। যা মোটেই ভাল চোখে দেখবেন না বিহারের মুখ্যমন্ত্রীও।