অভিরূপ দাস: বিয়াল্লিশে কলকাতায় বোমা ফেলেছিল জাপানিরা। তা নিয়ে ছড়া কেটেছিল কেউ কেউ। ‘সারেগামাপাধানি বোম ফেলেছে জাপানি।’ মাঝে কেটে গিয়েছে ৮২ বছর। বদলায়নি কিছুই। বিপদ যেমনই হোক, তা নিয়ে ঠাট্টা ইয়ার্কি বহাল। চলতি গ্রীষ্মে পশ্চিমবঙ্গের জন্য তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে ইন্ডিয়ান মেটেরোলজিকাল বিভাগ। আগামী ক’দিন ৪২ থেকে ৪৪ ডিগ্রিতে শহরকে পোড়াবে সূর্য! পড়শি রাজ্য ওড়িশায় সানস্ট্রোকে ইতিমধ্যেই একজন প্রাণ হারিয়েছেন।
তাতে কী? কাটফাটা গ্রীষ্মকে নিয়ে মিম বানাতে ছাড়ছে না বাঙালি! ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ছেয়ে গিয়েছে মিমে। গায়ে ফোসকা পড়া গরমকে নিয়ে রীতিমতো ফাজলামি-রঙ্গ চলছে সামাজিক মাধ্যমে। সকাল হতে না হতেই পুড়িয়ে দেওয়ার মতো সূর্যের তেজ। চারতলার বিছানা আগুনের মতো তেতে। তার মধ্যেই কেউ লিখেছেন, "দুপুরে স্বামী-স্ত্রী এক বিছানায় শুলে মনে হচ্ছে সতীদাহ প্রথা ফিরে এসছে।" হাসি ঠাট্টা চলতে না চলতেই... অন্য আরও এক পেজে নয়া মিম। "গাছ পুঁতুন নয়তো সূর্য আপনাকে পুঁতে দেবে।" কিছু ‘মিম-বানিয়ে’ আবার সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব নিয়ে বইয়ের তথ্যকে নস্যাৎ করেছে। তাঁরা বলছেন, "মোটেও সূর্যের বাড়ি ১৫ লক্ষ কোটি কিলোমিটার নয়। ধর্মতলায় গেলেই সূর্যকে দেখা যাচ্ছে। বলছে কী রে আবার গাইবি নাকি.. কেন রোদের মতো হাসলে না?"
[আরও পড়ুন: গরমে ৫০ বছরের রেকর্ড ভাঙল কলকাতা, আগামী সপ্তাহতেও চলবে তাপপ্রবাহ]
বস্তুত জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে খাক করে দিচ্ছে যে সূর্য, তাকে নিয়ে ফেসবুকে চ্যাংড়ামি চলছে জোরকদমে। এরই মধ্যে হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ২০২৪ সালের এপ্রিলের যা পারদ উঠছে, গত পঞ্চাশ বছরে তিলোত্তমায় এমন গরম পড়েনি। এই মুহূর্তে এ চাঁদিফাটা গরম কমারও কোনও আশা শোনায়নি হাওয়া অফিস। দরদর করে ঘেমেনেয়ে একশা হয়েও মিম বানাতে ছাড়ছে না বাঙালি। প্রেম থেকে শুরু করে বিরহ, কোনও অস্ত্রেই গরমকে ছাড় দিচ্ছে না সৃজনশীল 'মিম-মেকার'রা। প্রেমিক মিম-বাজ লিখেছে, "ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় কেউ দুঃখ দেয়। কেউ দোষ দেয়। তুমি বরং এসি দিও।" পাল্টা আরেক মিম-কর্তার উত্তর, "অঙ্কিতা প্রিয়াঙ্কা অতীন... বাঙালি এখন বৃষ্টিকে চায়।" সবকিছু নিয়ে এই মজা করতে পারার মানসিকতাকে কেউ স্যালুট দিচ্ছেন, কেউ বলছেন, "তস্য ছ্যাবলা।"
পাগল করা গরমে ‘বিটিং দ্য হিট’ লিখে অভিজাত ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা সুইমিং পুলে জলকেলি করার ভিডিও দিচ্ছেন। তবে যাঁদের সে সুযোগ নেই, পুরনো ঝড়বৃষ্টির ভিডিও দেদার শেয়ার করেছেন ফেসবুকে। অতি উৎসাহী আবার লিখেছেন, "খুব গরম লাগছিল, ক্যালেন্ডারের পাতাটা উল্টে ডিসেম্বর করে দিলাম। এখন ঠিক আছে।"