দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে ফের হাসপাতালে অশান্তি। এবার ঘটনাস্থল গড়িয়ার এক নার্সিংহোম। মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর থেকে রোগীর পরিজনেরা ওই বেসরকারি হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। ভাঙচুর চালানো হয় নার্সিংহোমে। নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশের তৎপরতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
[আরও পড়ুন: অপরাধের সাক্ষী, খাগড়াগড়ের অভিশপ্ত সিল করা বাড়ি ঘিরে ফের ফিসফাস]
সোনারপুরের রাজপুরের দিয়ারা এলাকার বাসিন্দা পান্না নস্কর। বছর বাহান্নর ওই ব্যক্তির জন্ডিস ধরা পড়েছিল। তাঁর এলাকারই এক চিকিৎসকের পরামর্শে গড়িয়ার ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হন পান্না। তিনদিন ধরে সেখানেই ভরতি ছিলেন তিনি। শুক্রবার রাতে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয় ওই ব্যক্তি মারা গিয়েছেন। রোগীর মৃত্যু সংবাদ পাওয়ামাত্রই প্রায় ফুঁসে ওঠে। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতালের গাফিলতিতেই মারা গিয়েছেন পান্না নস্কর। এই অভিযোগে নার্সিংহোমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। শুরু হয় ভাঙচুর। হাসপাতালে থাকা গাছের টব, কাচের জানালা, চেয়ার, টেবিল ভাঙচুর করেন তারা। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই নার্সিংহোমে থাকা অন্যান্য রোগী এবং তাঁদের পরিজনেরা। বাধ্য হয়ে নরেন্দ্রপুর থানায় খবর দেয় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। খবর পাওয়ামাত্রই বিশাল পুলিশবাহিনী তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশি আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
[আরও পড়ুন: সরকারি হাসপাতালে ফের নিগৃহীত চিকিৎসক, কাটোয়ায় গ্রেপ্তার ২]
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদিও রোগীর পরিজনদের দাবি মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, জন্ডিস ভয়ংকর রূপ নেওয়ার পরই গড়িয়ার নার্সিংহোমে ভরতি হয়েছিলেন পান্না নস্কর। তাই হাজার চেষ্টার পরেও বাঁচানো যায়নি তাঁকে। এই ঘটনায় নরেন্দ্রপুর থানায় মৃত রোগীর পরিবারের তরফে নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পালটা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষও ভাঙচুরের পরিপ্রেক্ষিতে থানার দ্বারস্থ। তবে অভিযোগ-পালটা অভিযোগের ভিত্তিতে এখনও কাউকেই গ্রেপ্তার করেনি নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। নতুন করে আবার কোনও অশান্তি যাতে তৈরি না হয় তাই ওই নার্সিংহোম চত্বরের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘বেড বাড়ালেও ডাক্তারের অভাব থাকছেই’, চিকিৎসক সমস্যায় স্বীকারোক্তি মুখ্যমন্ত্রীর]
এর আগেও রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্যের একাধিক হাসপাতাল-নার্সিংহোম। আক্রান্ত হতে হয়েছে চিকিৎসকদেরও। নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলনের রাস্তাও বেছে নিয়েছিলেন তাঁরা। তবে রোগী এবং চিকিৎসকের সম্পর্ক ভাল হলেই এই সমস্যা মিটে যাবে বলেই পরামর্শ দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা সত্ত্বেও চিকিৎসাক্ষেত্রে অশান্তি যেন কিছুতেই রোখা যাচ্ছে না।
The post ‘গাফিলতি’তে রোগীমৃত্যু, প্রতিবাদে গড়িয়ার নার্সিংহোমে ভাঙচুর আত্মীয়দের appeared first on Sangbad Pratidin.