তিয়াসা সরকার: অনলাইন বুকিং (Online Booking) হয়েছে। মিলেছে স্লট। সেই অনুযায়ী ভ্যাকসিনেশন সেন্টারের সামনে উপস্থিতও হয়েছে কয়েকশো মানুষ। তা সত্ত্বেও মিলল না ভ্যাকসিন। করোনা কালে চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার অশোকনগরের কল্যাণগড় পুরসভার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র-২তে ভিড় জমানো অনেকেই।
ঠিক কী হয়েছিল? ভ্যাকসিন (Vaccine) নিয়ে যাঁরা ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভিড় জমিয়েছিলেন তাঁদের দাবি, বুধবার বিকেলে কোউইন অ্যাপের মাধ্যমে ভ্যাকসিনের জন্য বুকিং করেন। খুব সহজেই স্লট পেয়ে যান তাঁরা। সময় অনুযায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভিড় জমান। নদিয়ার কল্যাণী থেকেও কেউ কেউ শুধুমাত্র ভ্যাকসিনের আশায় দৌড়ে আসেন অশোকনগরে। লাইনেও দাঁড়ান অনেকেই। তবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আধিকারিকদের বক্তব্য শোনার পর কার্যত মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তাঁদের।
[আরও পড়ুন: National Crime Control Bureau’র ডিরেক্টর পরিচয়ে প্রতারণা, গ্রেপ্তার অভিযুক্ত]
কারণ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় যাঁরা অনলাইনে ভ্যাকসিনের স্লট বুক করেছেন তাঁরা পাবেন না। পরিবর্তে যাঁরা আধার কার্ড জমা দিয়েছেন আগে, তাঁদেরই দেওয়া হবে। আধিকারিকের আরও দাবি, অনলাইনে যাঁরা বুকিং করছেন, সেই সংক্রান্ত তথ্য কেন্দ্র না দেওয়ায় এমন সমস্যা হচ্ছে। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অনলাইনে বুকিং করে ভ্যাকসিন দিতে আসা ব্যক্তিরা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের (Health Centre) আধিকারিকদের সঙ্গে দফায় দফায় বচসায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। ইতিমধ্যেই অশোকনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। অনলাইনে স্লট বুকিং যাঁরা করেছেন তাঁরা ভ্যাকসিন পাবেন না বলে জানিয়ে দেন পুলিশকর্মীরা। এরপর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে পথ অবরোধ শুরু করেন ভুক্তভোগীরা। অবরোধ হঠাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আটক ২ জন।
শুধু অশোকনগরই (Ashoknagar) নয়, ভ্যাকসিন নিয়ে ভোগান্তি ছবি সর্বত্রই প্রায় একরকম। দ্বিতীয় ডোজ তো দূর অনেকের অভিযোগ, প্রথম ডোজও কার্যত অমিল। তার উপর আবার সামনে এসেছে ভ্যাকসিন দুর্নীতির মতো ঘটনাও। কসবায় ভুয়ো আধিকারিক পরিচয় দিয়ে ভুয়ো ভ্যাকসিন দেওয়ার অভিযোগে আপাতত শ্রীঘরে দেবাঞ্জন দেব। সোনারপুরেও বেআইনি ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পের আয়োজনে স্বাস্থ্যকর্মীকেই গ্রেপ্তার করা হয়। করোনাকে রুখতে টিকাকরণই একমাত্র হাতিয়ার বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের। বিভিন্ন ক্ষেত্রে টিকাকরণ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও ভ্যাকসিন না মেলায় কার্যত দিশাহারা আমজনতা। যদিও আমজনতার ভোগান্তির জন্য কেন্দ্রকেই দুষছে রাজ্য সরকার।