সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছোট মেয়ে অনুরাধা ভট্টাচার্যের মৃত্যুর পর থেকেই একেবারে ভেঙে পড়েছিলেন লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়৷ মনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শারীরিক অবস্থার অবনতিও ঘটেছিল৷ গুরুতর অসুস্থ হয়ে চলতি বছরে বেশ কয়েক বার হাসপাতালেও ভরতি হতে হয়েছে তাঁকে৷ কিছু সুস্থ হয়ে ফিরলেও নতুন করে ফুসফুস ও কিডনিতে মারাত্মক সংক্রমণ ও সঙ্গে শ্বাসকষ্টের জেরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ারে চিকিৎসাধীন৷ আপাতত তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে৷ মুহূর্তে মুহূর্তে সংজ্ঞা হারাচ্ছেন তিনি৷ সংক্রমণ দেওয়া দেওয়ায় কিডনি ও ফুসফুস কাজ করছে না বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর৷ মাল্টি অর্গান ফেলিওর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷ গত ২৪ ঘণ্টায় লোকসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার জেরে তাঁকে প্রতি মুহূর্তেই নজরদারিতে রাখা হয়েছে৷
[গলায় কয়েন আটকে প্রাণসংশয়, দুধের শিশুকে ফেরাল চার-চারটি হাসপাতাল]
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কিডনি ঠিকঠাক কাজ না করায় ফের ডায়ালিসিস শুরু করা হয়েছে৷ চলতি সপ্তাহে প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে বেলভিউ হাসপাতালে ভরতি করা হয়৷ অক্সিজেন দিয়ে তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হলেও শুক্রবার রাতে থেকে ভয়ঙ্কর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়৷ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় তড়িঘড়ি ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয় ৯০ ছুঁইছুঁই এই প্রাক্তন সিপিএম সাংসদকে৷ শ্বাসকষ্টের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফুসফুস ও কিডনির সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে৷ শুক্রবার রাত থেকে ঠিকঠাক ভাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয় ফুসফুস ও কিডনি৷ শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হয়, শনিবার রাতে৷ এদিন নতুন করে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি৷ কোনওক্রমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চিকিৎসকরা৷ জানা গিয়েছে, গত ২৫ জুন স্ট্রোক হয় তাঁর৷ বেলভিউ হাসপাতালে তখনও তাঁকে ভর্তি করা হয়৷ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় গত পয়লা অগস্ট সোমনাথকে ছুটি দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে৷ বাড়িতেও চলছিল তাঁর চিকিৎসা৷ কিন্তু সপ্তাহ ঘুরতে না-ঘুরতেই প্রবীণ এই বাম নেতা এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে ফের তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়৷
[আমার বক্তব্য টিভিতে দেখানো হবে না, অমিতের মন্তব্যের পালটা তৃণমূলের]
সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়৷ জন্ম ২৫ জুলাই, ১৯২৯৷ বামপন্থী রাজনীতিবিদ (২০০৪-২০০৯) প্রথম বাঙালি অধ্যক্ষ হিসাবে লোকসভা পরিচালনা করেছিলেন সোমনাথবাবু৷ দলের ঊর্ধ্বে উঠে অধ্যক্ষের পদের গরিমা উজ্জ্বল করে ছিলেন তিনি৷ নিজের পদকে সম্মান জানিয়ে শাসক-বিরোধী সব দলকে লোসকাভায় নিজেদের দাবি প্রতিষ্ঠার সুযোগ দিয়ে সংসদদের মন কেড়ে নিয়ে ছিল বাংলার এই রাজনৈতিক কর্মী৷ এক বাক্যে শান্ত রেখেছিলেন লোকভসা৷ সাংসদদের আচার-আচরণেও বিধিনিষেধ এনেছিলেন৷ সংসদে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে গিয়ে ২৩ জুলাই ২০০৮ সালে সিপিএম দল থেকে বহিষ্কার করা হয় টানা ন’বারের (১৯৮৯ থেকে ২০০৯) এই সাংসদকে৷ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে ১৯৭১ সালে বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন৷
[এনআরসি ইস্যুতে দ্বিচারিতা বন্ধ করুন, মমতাকে কটাক্ষ অমিতের]
The post আশঙ্কাজনক সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, আরও অবনতি শারীরিক অবস্থার appeared first on Sangbad Pratidin.