সুব্রত বিশ্বাস ও চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়: ট্রেনের কামরায় বসে মদ্যপান (Drink) করছিলেন বাবা। এক যাত্রী প্রতিবাদ করায় তার চরম প্রতিশোধ নিলেন ওই রেলকর্মী। হাজার কিলোমিটার পেরিয়ে আসার পর বাবার নির্দেশের সেই ট্রেনের কামরায় দলবল নিয়ে চড়াও হল ছেলে। লোহার রড, লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হল প্রতিবাদী যাত্রীদের। শুক্রবার বিকেলে আসানসোল (Asansol) স্টেশনে জম্মু-তাওয়াই এক্সপ্রেসের কামরায় এই তাণ্ডব চালানোর জন্য ছ’জনকে গ্রেপ্তার করেছে আরপিএফ (RPF)। মারের চোটে আহত যাত্রী। তিনি আবার হাওড়ার রেল কর্মী। অভিযুক্তরাও রেলেরই সাফাই কর্মী।
শুক্রবার ডাউন জম্মু-তাওয়াই (Jammu-Tawai) এক্সপ্রেস আসানসোল স্টেশনে ঢোকার পর এই হামালার ঘটনা ঘটে। পূর্ব রেলের আরপিএফের আইজি পরম শিব জানান, সিসিটিভি ফুটেজ (CCTV Footage) দেখে ছ’জনকেই গ্রেপ্তার করেছে আরপিএফ। তিনি বলেন, অভিযুক্ত মদ্যপ যাত্রী শত্রুঘ্ন রাম ট্রেন থেকেই ছেলেকে নির্দেশ দেন, পরের দিন জম্মু-তাওয়াই আসানসোলে পৌঁছলেই যেন সে সদলবলে হাজির হয় স্টেশনে। শুক্রবার ট্রেনটি আসানসোল পৌঁছলে শত্রুঘ্নের ছেলে আসানসোলের কনস্ট্রাকশান সুপারভাইজার রাজেশ রাম দলবল নিয়ে ট্রেনের কামরায় চড়াও হয়। বাবার লাগেজ নামিয়ে অভিযোগকারীকে মারধর করে। অভিযোগের পর আরপিএফ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ছ’জনকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের নাম রাজেশ রাম, সৌরভ বাটোয়া, সঞ্জয় কুমার, রবিকান্ত বর্মা, রিকি প্রসাদ, বিশাল হরিজন।
[আরও পড়ুন: বাড়ি ভরতি অ্যাডমিট কার্ড ও মার্কশিট, নিয়োগ দুর্নীতিতে যোগসাজশের সন্দেহে গ্রেপ্তার মহিলা]
সূত্রের খবর, গত ৮ অক্টোবর হাওড়া (Howrah) কারশেডের ইলেকট্রিক্যাল মেন্টেনেন্স বিভাগের কর্মী শিবশংকর দত্ত সপরিবারে সহকর্মীদের সঙ্গে কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিলেন। ১৯ অক্টোবর জম্মু স্টেশন থেকে ডাউন জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেসের বি-৩ (B3)কামরায় চড়েন। শিবশংকরবাবু দেখতে পান উল্টোদিকের আসনে বসে বছর পঁয়ষট্টির এক রেল কর্মী মদ্যপান করছেন। প্রতিবাদ করেন শিবশংকরবাবু। প্রতিবাদে কাজ না হওয়ায় তিনি কতর্ব্যরত আরপিএফ জওয়ানদের কাছে অভিযোগ জানান।
[আরও পড়ুন: দিল্লিতে ইডির হেফাজতে সায়গল হোসেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সময় ৭ দিন]
এরপর আরপিএফ জওয়ানরা তাঁর মদের বোতল কেড়ে নিয়ে অন্যত্র সরিয়ে দেন। এরপর ক্ষিপ্ত শত্রুঘ্ন নামের ওই সাফাই কর্মী বিভিন্ন জায়গায় ফোন করতে থাকেন। শুক্রবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ ট্রেনটি যখন আসানসোল স্টেশনে পৌঁছয়, তখন হঠাৎই ১০-১২ জন সাফাই কর্মী লাঠি, লোহার রড নিয়ে ওই কোচে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তারা শত্রুঘ্নের লাগেজ নামিয়ে নেওয়ার পর শিবশংকরবাবুকে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। আহত অবস্থায় কোচের মধ্যেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে চিকিৎসক এসে তাকে দেখে যান। চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। চিৎপুর রেল স্টেশনের জিআরপি থানাতে তিনি অভিযোগ জানান।