বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: রবিন স্ট্রিটের (Robinson Street) ছায়া এবার নদিয়ার কল্যাণীতে। বেশ কয়েকদিন ধরে মায়ের মৃতদেহ ঘরে রেখে তার সঙ্গে বসবাস করলেন ছেলে। এরপর ঘর থেকে তীব্র দুর্গন্ধ বের হলে বাড়ির মালিক পুলিশকে খবর দেন। সেই খবর পেয়ে শনিবার কল্যাণী থানার পুলিশ মৃতদেহ (Deadbody) ঘর থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ।
বাড়ির মালিকের বয়ান অনুযায়ী, গত নভেম্বর মাসের শেষের দিকে মৃত্যু হয়েছে ছেলেটির মায়ের। তখন থেকেই মৃতদেহ সৎকার না করে ঘরে রেখে দিয়েছিলেন ছেলে। শনিবার ঘর থেকে তীব্র দুর্গন্ধ বের হওয়ার পর বাধ্য হয়েই পুলিশকে খবর দিতে হয়েছে। যদিও পুলিশের ধারণা, দিন সাতেক আগে মৃত্যু হয়েছে ছেলেটির মায়ের। তবে কেন মায়ের মৃতদেহ সৎকার না করে ঘরে রেখে দিয়েছিলেন ছেলে, তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, কিছুটা মানসিক সমস্যা রয়েছে ছেলেটির।
[আরও পড়ুন: তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে অনুব্রতকে অভিনব উপহার, দেওয়া হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রুপোর মূর্তি]
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত মহিলা বছর পঁচাত্তরে মায়া পাল। তিনি ও তাঁর এক ছেলে সঞ্জয় পাল কল্যাণীর (Kalyani) A-9’এ দেবব্রত সরকার নামে একজনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন বছর খানেক ধরে। সঞ্জয় কাজকর্ম বিশেষ কিছু করতেন না। তাঁর মায়ের পেনশনের টাকাতেই মূলত সংসার চলত। সঞ্জয়ের বৃদ্ধা মা অসুস্থ ছিলেন। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণেই তার মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে বাড়ির মালিক দেবব্রত সরকারের অনুমান। দেবব্রত সরকার জানিয়েছেন, ”মায়ের মৃতদেহ ঘরে রেখে দিয়েছিলেন সঞ্জয় পাল। গত বছর নভেম্বর মাসের ২৮ তারিখে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়। অথচ তিনি কাউকেই মায়ের মৃত্যু সংবাদ জানাননি।”
[আরও পড়ুন: COVID-19: সংক্রমণ ঠেকাতে ফের কড়া বিধিনিষেধের পথে হাঁটতে পারে রাজ্য! দাবি সূত্রের]
গত প্রায় এক মাস ধরে সঞ্জয় পালের মাকে দেখা যায়নি। শুধুমাত্র সঞ্জয় ঘরে তালা দিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যেতেন। মায়ের কথা জিজ্ঞাসা করলে পাশ কাটিয়ে যেতেন। গত কয়েকদিন ধরে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল তাঁদের ঘর থেকে। শনিবার সকালে সেই গন্ধ আরও তীব্র হওয়ায় তিনি পুলিশকে খবর দেন। এরপর কল্যাণী থানার পুলিশকে খবর দিলে পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পুলিশ সঞ্জয় পালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। অবশ্য সঞ্জয় পাল কেন তার মায়ের মৃত্যুসংবাদ বাড়ির মালিক এবং প্রতিবেশীদের জানাননি, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, মানসিক সমস্যায় ভুগছেন সঞ্জয় পাল।