সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২০ সালের ইদটা আর খুশির থাকল আমির খানের জীবনে। দুমাস লকডাউনের পর দুবাইয়ের (Dubai) চাকরি ছেড়ে দেশে ফিরেছিলেন অসুস্থ মাকে দেখার আশায়। কিন্তু শেষ দেখা আর হল না। এবার হয়তো আম্মির সঙ্গে ফের দেখা হবে জন্নতে গিয়েই।
দুবাইতে থাকাকালীন ফোনেই শেষ শুনেছিলেন মায়ের গলায় স্বর। তখনই আমির খান জানতে পারেন মায়ের শরীর আরও খারাপ হয়েছে। কিন্তু ফিরবেন কী করে? ইচ্ছে থাকলেও উপায় কই? লকডাউনের জেরে বন্ধ ছিল উড়ান। কিন্তু বিমান পরিষেবা একটু স্বাভাবিক হতেই আর এক মুহুর্ত অপেক্ষা করেননি আমির। তবে শেষ দেখা হল না। রবিবার বাড়ি ফেরেন তিনি। আর শনিবারের রাতের সঙ্গেই মিলিয়ে গেল আমিরের আম্মি। কোয়ারেন্টাইন (Quarentine) সেন্টারেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতেন তিনি। আমির জানতে পেরেছিলেন দ্রুত কোয়ারেন্টাইন থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে আমিরের মাকে। সেই আনন্দ বুকে চেপে রেখেই দুবাইয়ের নামী বেসরকারী সংস্থার চাকরি ছেড়ে এসেছিলেন ৩০ বছর বয়সী এই যুবক। কিন্তু আম্মি তো আর নেই।
[আরও পড়ুন:করোনা সংক্রমণের হারে কলকাতাকে টেক্কা মালদহের, গত ২৪ ঘণ্টার পরিসংখ্যান বাড়াল উদ্বেগ]
আমিরের কথায় এদিন বিমানবন্দরে নেমেই জানতে পারি বিদেশ ফেরত যাত্রীদের জন্য নয়া নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্র। বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। বিশেষ প্রয়োজনে বাড়তে পারে কোয়ারেন্টাইনের সময়সীমা। বাড়িতে ৭ দিনের পরিবর্তে ১৪দিনও থাকা যায়। মাকে হারিয়ে ভেঙে পড়েন এই যুবক। তাঁর কথায়, “গত বছর নভেম্বরের শেষ দিকে লিভারের সমস্যায় আক্রান্ত হন। সেই খবর পাই তাই মার্চেই দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্ত বাধ সাজে সেই করোনা।” আমির আরও বলেন, “এই মারণ ভাইরাসকে সঙ্গী করেই বাঁচতে শিখে যাব। তবে সম্পর্কের ক্ষত সারা জীবন তাড়িয়ে বেরাবে। গত দুমাস শুধু মায়ের কাছে ফিরে আসব এই আশাতেই বিদেশে বেঁচে ছিলাম। সবকিছু ছেড়ে দেশে ফিরে এসেও সবটাই হারিয়ে ফেললাম।”
[আরও পড়ুন:হার মানলেন ‘যোদ্ধা’, করোনার কবলে মৃত খোদ AIIMS`র সাফাই বিভাগের পর্যবেক্ষক]
ইদের দিনে মায়ের শেষ স্মৃতি চিহ্ন ছুঁয়ে কথা বলার সময় কান্নায় বুজে আসছিল আমিরের গলা। তবে দফনের সময় আম্মিকে কাঁধ দিতে না পারার আক্ষেপটা বোধহয় আমিরের জীবনে দাগ কেটে গেছে।
The post শেষ দেখা হল না, ছেলে দেশে ফেরার আগেই কোয়ারেন্টাইনে প্রাণ হারালেন মা appeared first on Sangbad Pratidin.