রঞ্জন মহাপাত্র ও শুভঙ্কর বসু: কাঁথি পুরসভার প্রশাসক পদ থেকে অপসারণ নিয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) দ্বারস্থ অধিকারী পরিবারের কনিষ্ঠ পুত্র সৌমেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর, ওই নির্দেশিকা জারির পদ্ধতিতে আইনগত ত্রুটি রয়েছে, এই অভিযোগ তুলেই মামলা দায়ের করেছেন সৌমেন্দুর আইনজীবী। আগামী ৪ জানুয়ারি মামলাটির শুনানি। বিষয়টি নিয়ে এতদিন রাজনৈতিক তরজা থাকলেও, এবার তা আইনি লড়াইয়ে পৌঁছল।
চলতি সপ্তাহেই কাঁথি (Kanthi) পুরসভার প্রশাসক বোর্ড ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয় রাজ্য সরকারের তরফে। সেই অনুযায়ী, প্রশাসকের পদ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দুকে অপসারণ করা হয়। নতুন বোর্ডে সিদ্ধার্থ মাইতি নামে আরেক ব্যক্তিকে পুরপ্রশাসক পদে বসানো হবে, এমনই উল্লেখ ছিল তাতে। এই চিঠি মেনে নিতে নারাজ অধিকারী পরিবার। তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী এবং বর্ষীয়ান সাংসদ তথা পরিবারের অভিভাবক শিশির অধিকারী রাজ্যের পুর দপ্তরের এই সিদ্ধান্ত মোটেই ভালভাবে নেননি। এমনকী শিশিরবাবু এবং দিব্যেন্দুবাবু এও জানিয়েছিলেন যে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হলে, তাঁরাও পুরসভায় নিজেদের কাজে যাবেন না। এরই মধ্যে জল্পনা উসকে উঠেছে, সৌমেন্দু দাদা শুভেন্দুর পথে হেঁটে শিগগিরই বিজেপিতে যোগ দেবেন।
[আরও পড়ুন: সরকারি চাকরি পেয়েই মন বদলেছে স্ত্রীর! শ্বশুরবাড়ির সামনে ধরনায় পেশায় রাজমিস্ত্রি স্বামী]
এই পরিস্থিতিতে এবার পুরপ্রশাসক পদ থেকে তাঁকে সরানোর রাজ্য সরকারি নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে সোজা আইনের পথ ধরলেন অধিকারী পরিবার কনিষ্ঠ পুত্র সৌমেন্দু। কলকাতা হাই কোর্টে তিনি রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের এভাবে কাঁথি পুরসভার প্রশাসক বোর্ড ভেঙে দেওয়া কতটা আইনি, সেই প্রশ্ন তুলে মামলা দায়ের করেছেন বলে খবর। এদিকে, কেন এমনটা করা হল, তা বিস্তারিত জানতে চেয়ে ভাইয়ের হয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখতে পারেন তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর এমনটাই।
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপির সঙ্গে আমার নীতি-আদর্শ মেলে না’, গেরুয়া শিবিরে যোগের জল্পনা ওড়ালেন অরূপ রায়]
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার কাঁথি পুরসভার প্রশাসকের দায়িত্ব নিতে এসে তৃণমূল কর্মীদের বাধার মুখে পড়েন নবনিযুক্ত প্রশাসক সিদ্ধার্থ মাইতি। তিনি আবার পূর্ব মেদিনীপুরের দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক অখিল গিরির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এদিন তিনি পুরভবনে ঢুকতে গেলে তাঁকে বাধা দিয়ে এক্সিকিউটিভ অফিসারের সঙ্গে তর্কবিতর্কে জড়ান প্রাক্তন কাউন্সিলর সুবল মান্না। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় পুরভবনে। সেই খবর সংগ্রহের জন্য সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদের বাধা দেওয়া এবং হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ। তবে এই মুহূর্তে ‘অপসারিত’ প্রশাসক বিষয়টি আইনের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়ায়, নতুন প্রশাসককে দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হল বলে ধারণা আইনজ্ঞ মহলের।