দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: স্কুলের গাফিলতিতে সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের পরিবার। শুধু তাই নয়, সরকারের ‘ঐক্যশ্রী’ প্রকল্প (Aikyashree Scholarship) থেকে অধিকাংশ সংখ্যালঘু ছাত্র-ছাত্রী কোনও সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। আর ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের গাফিলতিতেই তাঁরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন স্কুলের অভিভাবকরা। অভিযোগ জানিয়েছে পড়ুয়ারাও।
ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Paraganas) ক্যানিং- ১ নম্বর ব্লকের গোপালপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ৬ জন। বর্তমানে এই স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১৭২। যার মধ্যে সংখ্যালঘু ছাত্র-ছাত্রী ১০৫ জন। আর সংখ্যালঘু ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যেই মাত্র ৩০ জনকে ‘ঐক্যশ্রী’ ফর্ম ফিলআপ করিয়ে তাদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। বাকিরা থেকে গিয়েছে বঞ্চিত।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে স্থানীয় মানুষজন অভিযোগ করেছেন ক্যানিং প্রশাসনের কাছে। তবে তারপরও সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি। শুধু তাই নয় স্থানীয় মানুষের আরও অভিযোগ, স্কুলের মিড ডে মিলে বিভিন্ন সময়ে গরমিল ধরা পড়েছে। যত ছাত্র-ছাত্রী বাস্তবে আসে তার থেকে অনেক বেশি ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা মিড ডে মিলের হিসাবে দেখানো হলেও অত্যন্ত নিম্ন মানের খাবার পরিবেশন করা হয় বলে অভিযোগ। অন্যদিকে. অধিকাংশ সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক না আসার কারণে ঘাটতি হচ্ছে পঠন-পাঠনের।
[আরও পড়ুন: মোদির উপরে সুকান্ত-শুভেন্দুর ছবি! নেই দিলীপের নাম, বিজেপির পোস্টার নিয়ে বিতর্ক]
অভিভাবকদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এর আগেও একাধিকবার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। কিন্তু সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। এ বিষয়ে হাসান মোল্লা নামে এক অভিভাবক বলেন, “ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক জয়ন্তবাবুর উদাসীনতার কারণে স্কুলের পঠন-পাঠনের মান খুব খারাপ। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ছাত্র-ছাত্রীরা।
সরকার সংখ্যালঘু ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ‘ঐক্যশ্রী’ ব্যবস্থা করলেও তা পড়ুয়া বা অভিভাবকদের জানানো হয়নি। ফলে হাতে গোনা কয়েকজনই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে। যে সময়ের মধ্যে ‘ঐক্যশ্রী’ ফর্ম ফিলাপ করে জমা দেওয়ার কথা ছিল তা জমা না দেওয়ার কারণেই এই সমস্যা। যখন ফর্ম জমা দেওয়ার দরকার তখন ওই শিক্ষক নিজে LIC-র কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। আর তার ফলে ঘটেছে এই ঘটনা।
অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, “আমি বর্তমানে LIC-র সঙ্গে যুক্ত নই। আগে তা করতাম। তাছাড়া আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা কোনটাই আমার সময় ঘটেনি। ‘ঐক্যশ্রী’ ফর্ম আমার আসার আগেই যিনি প্রধান শিক্ষক ছিলেন তিনি করেছিলেন।” এ বিষয়ে ক্যানিং সার্কেলের ইন্সপেক্টর সতীপ্রসাদ ঘোড়ুই বলেন, “অভিযোগ জানার পর আমরা তদন্ত শুরু করি। ওনাকে শোকজ করানো হয়েছে। সেই সময় স্কুলের টি আই সি নিয়ে একটি জটিলতা চলছিল আর সে জন্যই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। পরবর্তীতে যাতে আর এই সমস্যা না হয় সেদিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।”