সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণধর্ষণ কাণ্ডে সমাজবাদী পার্টির নেতাকে বাঁচাতে সরাসরি মাঠে নেমেছিল স্থানীয় নেতারা! অযোধ্যায় নাবালিকা গণধর্ষণ কাণ্ডে যখন সারা দেশে শোরগোল পড়ে গিয়েছে ঠিক সেই সময় বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন নির্যাতিতার মা। তাঁর দাবি, এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত সপা নেতা মইন খানকে বাঁচাতে এবং মামলা তুলে নিতে তাঁকে টাকা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল স্থানীয় সপা নেতৃত্ব।
সপা নেতা মইন খান ও তাঁর বেকারির কর্মীদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় ইতিমধ্যেই সরগরম হয়ে উঠেছে উত্তরপ্রদেশ রাজনীতি। বিজেপি অভিযোগ তুলেছে দলের নেতার এমন কুকর্মের বিরোধিতা তো দূর বরং তাঁকে সমর্থন করছেন খোদ অখিলেশ যাদব। এই পরিস্থিতির মাঝেই নির্যাতিতা নাবালিকার মায়ের দাবি, এই ঘটনার পর থানার অভিযোগ জানানোর পর স্থানীয় সপা নেতৃত্ব তাঁকে টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নেওয়ার প্রস্তাব দেয়। ভাদরসা নগর পঞ্চায়েতের চেয়ারম্যান মহম্মদ রশিদ তাঁকে এক দিন ডেকে জানান, নিজেরদের মধ্যে বিষয়টি মিটমাট করে নেওয়ার জন্য। এর ফলে তাঁকে অনেক টাকা দেওয়ার প্রস্তাবও দেন ওই সপা নেতা। তবে টাকা নিতে অস্বীকার করায় তাঁকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ নির্যাতিতার মায়ের।
[আরও পড়ুন: ২ বছর ধরে নিখোঁজ অরুণাচলের দুই যুবক, শেষ দেখা গিয়েছিল চিন সীমান্তে]
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে চাষের জমিতে কাজ করার সময় নাবালিকাকে নিজের বেকারিতে নিয়ে এসে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে সপা নেতা মইন খান ও তাঁর বেকারির কর্মীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, গোটা ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করা হয়। সেই ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে ২ মাসেরও বেশি সময় ধরে বেকারির মধ্যেই ১২ বছর বয়সি ওই নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে অভিযুক্তরা। এই ঘটনায় নাবালিকা গর্ভবতী হয়ে পড়লে প্রকাশ্যে আসে বিষয়টি। নাবালিকার মা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ জানাতে গেলেও সে অভিযোগ নেওয়া হয়নি। জানা যায়, যে জমিতে ওই পুলিশ ফাঁড়ি ছিল সেটি মইনের জমির উপর। এবং তা সরকারের তরফে ভাড়া নেওয়া হয়। ফলে সেখানে ওই সপা নেতার প্রভাব ছিল যথেষ্ট। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই তৎপর হয় যোগী সরকার। গ্রেপ্তার করা হয় মইনও তাঁর এক কর্মীকে। বিষয়টি নিয়ে সপার বিরুদ্ধে সরব হয় বিজেপি। রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে শুরু করলে এই ঘটনায় মুখ খোলেন খোদ অখিলেশ।
[আরও পড়ুন: নির্যাতিতার DNA টেস্টের দাবি অখিলেশের, অযোধ্যা গণধর্ষণ কাণ্ডে আরও চাপে সপা]
এই ঘটনায় শনিবার এক্স হ্যান্ডেলে অখিলেশ লেখেন, ‘যার বিরুদ্ধে এই কুকীর্তির অভিযোগ উঠেছে তাঁর ডিএনএ টেস্ট করে ন্যায়ের রাস্তা বের করা উচিত। তা না করে রাজনৈতিক স্বার্থে শুধুমাত্র দোষারোপের খেলা চলছে। এই ঘটনায় যে অভিযুক্ত তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পথে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হোক।’ একইসঙ্গে তিনি আরও লেখেন, ‘তবে যদি ডিএনএ টেস্টের পর এই অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণিত হয় তবে সরকারের আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও যেন কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এটাই ন্যায়ের দাবি।’ তবে অখিলেশের বার্তার পর পালটা তাঁর বিরুদ্ধে ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। দাবি করা হয়েছে, এমন ঘৃণ্য অপরাধের পরও ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে অপরাধীর পাশে দাঁড়াচ্ছেন অখিলেশ যাদব।