সন্দীপ চক্রবর্তী: শুধু বিজেপি নয়। আসানসোলের সাংসদপদও ছাড়ছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর প্রথম সাংবাদিক বৈঠকেই জানিয়ে দিলেন নিজের সিদ্ধান্তের কথা। বাবুলের বক্তব্য, “আমি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছি মানে সমস্ত নিয়ম মেনেই যোগ দেব। আসানসোলে আমি বিজেপির টিকিটে জিতে এসেছি। তাই অবশ্যই সাংসদ পদ ছেড়ে আসব।” তৃণমূল (TMC) সূত্রের খবর, মঙ্গলবারই বাবুল সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। বাবুলের ইস্তফার পর আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নামও একপ্রকার ঠিক করে ফেলেছে শাসকদল। বাবুলের ছেড়ে যাওয়া আসনে প্রার্থী হতে পারেন সায়নী ঘোষ (Sayoni Ghosh)।
শনিবার আচমকাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বাবুল। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, তিনি কি আসানসোলের সাংসদ পদ ছাড়বেন? এক কথায় বাবুলের জবাব,”অবশ্যই। আমি যখন তৃণমূলে যোগ দিচ্ছি তখন অবশ্যই আসানসোলের সাংসদ পদ ছেড়ে আসব।” তিনি জানিয়েছেন, আগামী দিনে দল তাঁকে যে দায়িত্ব দেবে, তিনি সেটা পালন করবেন। বাবুলের ইঙ্গিত, তৃণমূলে তাঁর ভূমিকা কী হতে চলেছে, তা স্পষ্ট হবে আগামী ২-৩ দিনে।
[আরও পড়ুন: WB Bypolls: ভবানীপুরে ভোট হবে নতুন ইভিএমে, দফায় দফায় হচ্ছে মেশিনের পরীক্ষা]
বাবুলের এই ঘোষণায় নতুন একাধিক সম্ভাবনা খুলে গেল। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, এবার অর্পিতা ঘোষের (Arpita Ghosh) ছেড়ে যাওয়া আসনে রাজ্যসভার সাংসদ করা হতে পারে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে। বাবুল সুপ্রিয় গত সাত বছর ধরে সাংসদ। সাংসদ হিসাবে তাঁর রেকর্ড বেশ ঈর্ষণীয়। তাছাড়া বাগ্মি নেতা হিসাবেও সংসদে পরিচিতি রয়েছে বাবুলের। দীর্ঘদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকার দরুন বাংলার বাইরেও তাঁর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাছাড়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় দীর্ঘদিন থাকার সুবাদে বিজেপি (BJP) সরকারের কাজের পদ্ধতি এবং ধরন খুব ভালমতোই জানেন বাবুল সুপ্রিয়। তাই এই মুহূর্তে সংসদে বিজেপি বিরোধিতায় তৃণমূলের বড় অস্ত্র হয়ে উঠতে পারেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘ভোট শেষ, জোটও শেষ’, সংযুক্ত মোর্চার ভবিষ্যৎ স্পষ্ট করলেন সীতারাম ইয়েচুরি]
যদিও আরও একটি সম্ভাবনার কথা এক্ষেত্রে শোনা যাচ্ছে। তৃণমূলের অন্দরে গুঞ্জন মোদির পর এবার ‘দিদি’র মন্ত্রিসভাতেও জায়গা হতে পারে বাবুলের। সেক্ষেত্রে রাজ্যের যে চার কেন্দ্রে উপনির্বাচন বাকি আছে, তার কোনও একটি থেকে জিতে আসতে হবে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে। সামনে রাজ্য মন্ত্রিসভায় একাধিক রদবদলের সম্ভাবনা আছে। শোনা যাচ্ছে, অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র আর মন্ত্রী থাকতে চান না। আবার ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধণ পাণ্ডে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। তাছাড়া, রাজ্যের একাধিক মন্ত্রীর উপর একাধিক দপ্তরের দায়িত্ব আছে। সেক্ষেত্রে কোনও একটিতে বাবুলকে দায়িত্ব দিতেই পারেন মমতা। কারণ, সংসদীয় রাজনীতিতে তিনি অভিজ্ঞ। কাজ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসাবেও। সেই অভিজ্ঞতাও তাঁর কাজে লাগবে। যদিও, এ নিয়ে তৃণমূল বা বাবুল কেউই সরকারিভাবে কিছু বলেননি।