সুমন্ত চট্টোপাধ্যায়: গতবার তীরে এসে ডুবেছিল তরী। এবার কী হবে? দুঃস্বপ্নের সেই অতীত ভুলিয়ে কি নতুন ইতিহাস তৈরি করবে মোহনবাগান (Mohun Bagan)? প্রথমবারের জন্য প্রবেশ করবে এএফসি কাপের ফাইনাল পর্যায়ে? সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে বুধবাসরীয় যুবভারতীতে। যেখানে এএফসি কাপের (AFC Cup) ইন্টার-জোন সেমিফাইনালে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর সিটি এফসির বিরুদ্ধে মাঠে নামছে জুয়ান ফেরান্দোর মোহনবাগান।
ঘরের মাঠের খেলতে নামার ‘অ্যাডভান্টেজ’কে কাজে লাগিয়ে জয়ের লক্ষ্যে যে ঝাঁপাতে চান, সেটা স্পষ্ট মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দোর (Juan Ferrando) কথায়। মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে সবুজ-মেরুন স্যরের স্পষ্ট ঘোষণা, “এএফসি কাপ অন্য পর্যায়ের টুর্নামেন্ট। তাছাড়া আমরা সেমিফাইনালে খেলতে নামছি। জেতা ছাড়া উপায় নেই। ডুরান্ড কাপ (Durand Cup) এখন আমাদের জন্য অতীত। আমাদের সমস্ত ফোকাস এখন কালকের ম্যাচে। বর্তমানে দাঁড়িয়ে ভবিষ্যতের ভাবনাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলে। কালকের ম্যাচের জন্য আমাদের টিম তৈরি। আশা করি, কালকে ম্যাচের পর দলের সবার মুখে জয়ের খুশি দেখতে পাব।”
[আরও পড়ুন: বাগুইআটির জোড়া খুন: রিপোর্ট তলব ডিজির, তদন্তের দায়িত্বে থানা আধিকারিকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত]
কাকতালীয় হলেও সত্যি। গতবছর ঠিক এই সেপ্টেম্বরেই এএফসি কাপের ইন্টার জোন সেমিফাইনালে খেলেছিল মোহনবাগান। উজবেকিস্তানের এফসি নাসাফের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে ভরাডুবি হয়েছিল পালতোলা নৌকার। ৬ গোল হজমের সেই দুঃস্বপ্ন আজও তাড়া করে সেই ম্যাচে মোহনবাগানের হয়ে অভিষেক হওয়া জনি কাউকোর (Joni Kauko)। বুধবার ফের একবার এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালে খেলতে নামার আগে কাউকো বলেন, “গতবারের ফল এবার হবে না আমি নিশ্চিত। ওটা ভিন্ন পরিস্থিতি ছিল। এবার আমাদের টিম আরও শক্তিশালী। তাছাড়া আমরা নিজেদের ঘরের মাঠে খেলব। সেটা আমাদের জন্য বড় অ্যাডভান্টেজ।” একই সুর টেনে ফেরান্দোও বলে গেলেন, “নিজেদের দর্শক-সমর্থকদের সামনে খেলতে পারাটা গর্বের ব্যাপার। কলকাতা ফুটবলের আবেগ কী, তা আমি জানি। প্লেয়াররাও সেটা উপভোগ করে।”
[আরও পড়ুন: বাবার উত্তর না পেয়ে মুক্তিপণ চেয়ে নিহত অতনুর বান্ধবীকেও মেসেজ খুনির, কী লেখা ছিল?]
কাউকো-ফেরান্দোর আত্মবিশ্বাসী জবাবের মধ্যেও গলার কাঁটার মতো বিদ্ধ হয়ে রয়েছে ডুরান্ডে সবুজ-মেরুনের দিশাহীন পারফরম্যান্স। আক্রমণভাগে গোলখরার সঙ্গে রক্ষণের ত্রুটি ভুগিয়েছে মোহনবাগানকে। মঙ্গলবার অনুশীলনে নামার আগে প্রীতম, শুভাশিস, পোগবার মতো দলের ডিফেন্ডারদের নিয়ে আলাদা করে ড্রেসিংরুমে কথাও বললেন ফেরান্দো। ট্রেনিং-সেশনে টেনিস বলে অভিনব প্র্যাকটিস করাতেও দেখা গেল তাঁকে। অজি তারকা দিমিত্রি পেত্রাতোসের (Dimitri Petratas) অন্তর্ভুক্তি আক্রমণভাগে শক্তি অনেকটাই বাড়িয়েছে সবুজ-মেরুনের। কুয়ালালামপুর ম্যাচে গোলের রাস্তা খুঁজে পেতে সমস্যা হবে না, সে ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ফেরান্দো। তিনি বলেন, “প্রতিপক্ষের চেয়ে এক গোলে এগিয়ে থাকাটাই আমার লক্ষ্য। সেই মানসিকতায় অভ্যস্ত প্লেয়াররাও। আমি গোল হজম করা নিয়ে চিন্তিত নই। জিততে গেলে ঝুঁকি নিতে হবে, এই ধারণায় বিশ্বাস করি।” আক্রমণে কি শুরু থেকে দেখা যাবে দিমিত্রিকে, নাকি পোগবার সঙ্গী হবেন ব্রেন্ডন হ্যামিল? তা নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশাই রাখলেন ফেরান্দো।
মোহনবাগানের বিরুদ্ধে নামার আগে অবশ্য চাপের কৌশল শুরু প্রতিপক্ষ কুয়ালালামপুর সিটি এফসির। শক্তিশালী দল নিয়েই ভারতে খেলতে এসেছে মালয়েশিয়ার ফুটবল দলটি। দলের কোচ বোজান হোডাক ২০১৫-তে দায়িত্বে ছিলেন জোহর দারুল তাজিমের। সেই দলের প্রশিক্ষক হিসেবে ভারতের অপর দুই ক্লাব বেঙ্গালুরু ও ইস্টবেঙ্গলকে হারানোর কৃতিত্ব রয়েছে ক্রোয়েশিয়ান কোচের।
এএফসি কাপ
(ইন্টার জোন সেমিফাইনাল)
মোহনবাগান – কুয়ালালামপুর সিটি এফসি
সন্ধে ৭টা, যুবভারতী