আলাপন সাহা: ইডেনেই শুরু হয়েছিল তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ার। দীর্ঘ দুদশক পেরিয়ে ক্রিকেটের নন্দনকাননেই শেষবার খেলতে দেখা যাবে মনোজ তিওয়ারিকে (Manoj Tiwary)। তার পরই পাকাপাকি ভাবে ব্যাট-প্যাড তুলে রাখতে চলেছেন বাংলার অধিনায়ক।
মনোজ তিওয়ারির কেরিয়ারের শেষ ম্যাচটি বাংলার (Bengal) কাছে নিয়মরক্ষার। রনজি ট্রফির নকআউটে পৌঁছনোর স্বপ্ন আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে বঙ্গব্রিগেডের। ইডেনে বিহারের বিরুদ্ধে বাংলার ম্যাচটার গুরুত্ব অন্যজায়গায়। শুক্রবার থেকে শুরু হতে চলা বাংলা-বিহার ম্যাচের সব আবেগ ঘুরপাক খাচ্ছে একজনকে কেন্দ্র করেই। তিনি মনোজ তিওয়ারি। তিনি নিজেও কি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েননি? অনুশীলন চলাকালীন বঙ্গ অধিনায়ককে আবেগপ্রবণ দেখাচ্ছিল।
ড্রেসিং রুমেও তিনি নিজের আবেগ সামলে রাখতে পারেননি। শোনা যাচ্ছে, টিম মিটিংয়ের সময় তাঁর গলায় জমা হয়েছিল আবেগের বাষ্প। বহু যুদ্ধের সৈনিকের গলা ধরে আসছিল। চোখ দিয়ে নেমেছিল জলের ধারা। চেয়েছিলেন বাংলাকে রনজি ট্রফি দিয়ে কেরিয়ার শেষ করবেন। কিন্তু যা চাওয়া যায়, তা সবসময়ে হয় না। বাংলার রথ তো এবারের রনজিতে অনেক আগেই থেমে গেল। গোটা দল এখন চাইছে অধিনায়ককে জয় উপহার দিতে।
[আরও পড়ুন: Exclusive: দুই ‘বিশ্বাস’-কে ফেরালেন মোহনবাগানের দীপেন্দু, ডিফেন্ডার দীপুর খেলায় মুগ্ধ শেষ বাঙালি স্ট্রাইকার]
বিহারকে ইডেনে মাটি ধরিয়ে বিদায়বেলায় ক্যাপ্টেনকে সেই জয় উপহার দিতে তৈরি দল। তৈরি সিএবি-ও। মনোজের জন্য বিশেষ সংবর্ধনার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেই খবর। বাংলা-বিহার ম্যাচের তৃতীয় দিন বঙ্গ অধিনায়ককে সোনার ব্যাট উপহার দেওয়া হবে। শেষ ম্যাচে নামার আগে মনোজ বলছিলেন, ‘‘রনজিটা একেবারেই ভাল যায়নি আমাদের। গ্রুপ পর্বে আমরা যেতে পারছি না, সেটা ভাবলেই কষ্ট হচ্ছে। তবে এই ম্যাচে আর সে’সব মাথায় রেখে নামতে চাই না। আমাদের লক্ষ্য সাত পয়েন্ট। সেই লক্ষ্য নিয়েই নামব আমরা।’’
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে এই ইডেনেই দিল্লির বিরুদ্ধে প্রথমবার নেমেছিলেন তিনি। মাঝের এই সময়ে মনোজ তিওয়ারি ক্রিকেট মাঠের আাচকানাচে ছড়িয়ে দিয়ে গিয়েছেন অসংখ্য মণিমুক্তো।
এদিকে ইডেনের সবুজ উইকেটেই বিহারকে স্বাগত জানানো হবে। মুকেশ কুমারকে এই ম্যাচে পাচ্ছে বাংলা। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের তরফ থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সকাল জানিয়ে দেওয়া হয়, রনজি খেলার জন্য ছাড়া হচ্ছে মুকেশকে। মুকেশের সঙ্গে সূরজ সিন্ধু জয়সওয়াল আর মহম্মদ কাইফকে রেখেই টিম কম্বিনেশন করছে বাংলা। বদলানো হতে পারে ওপেনিং জুটিতে। অভিমন্যু ঈশ্বরণের সঙ্গে রণজ্যোৎ সিং খাইরাকে খেলানো হয়। কিন্তু অভিষেক ম্যাচেই চূড়ান্ত ব্যর্থ হন রনজ্যোত। তার পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দেয়। বিহারের বিরুদ্ধে রণজ্যোতের পরিবর্তে শাকির হাবিব গান্ধীকে খেলানো হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।
তবে সবকিছু এখন পিছনের সারিতে। ম্যাচের জিয়নকাঠি মনোজ তিওয়ারির হাতে। তিনিই আকর্ষণের কেন্দ্রে।