ভারত: ৩২১/৬ (ধাওয়ান-১২৫, রোহিত-৭৮, ধোনি-৬৩)
শ্রীলঙ্কা: ৩২২/৩ (মেন্ডিস- ৮৯, দনুষ্কা- ৭৬)
৭ উইকেটে জয়ী শ্রীলঙ্কা
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানকে লজ্জাজনকভাবে পরাস্ত করে কি অতিরিক্ত আত্মতুষ্টিতে ভুগছিল টিম ইন্ডিয়া? ধারে ও ভারে অনেকখানি পিছিয়ে থাকা শ্রীলঙ্কার কাছে হারের পর এই প্রশ্নটা উঠেই গেল। বর্তমানের বেনামি ম্যাথিউজ ব্রিগেডকে হয়তো একটু বেশিই হালকাভাবে নিয়ে ফেলেছিলেন বিরাট কোহলিরা। আহত সিংহের মতো লঙ্কাবাহিনীও যে এভাবে হিংস্র হয়ে উঠতে পারে, তা হয়তো ভাবেননি রোহিত, ধোনিরা। বা বলা ভাল, ভাবার চেষ্টাও করেননি। শুধু ভেবেছিলেন, লঙ্কা বধ করে বৃহস্পতিবারই পাকা করে নিতে হবে সেমিফাইনালের টিকিট। আর শ্রীলঙ্কাকে হারানো, বিশ্বের দু’নম্বর ওয়ানডে দলের কাছে এ আবার কী কঠিন ব্যাপার! কিন্তু সব হিসেব এক্কেবারে গুলিয়ে দিলেন দনুষ্কা গুনাথিলাকা, কুশল মেন্ডিস, ম্যাথিউজরা। অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই ভারতকে মাটি ধরিয়ে শেষ চারে যাওয়ার আশা জিইয়ে রাখলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজরা।
২০১১ বিশ্বকাপে ওয়াংখেড়ের সেই ফাইনালের কথা আজও চোখে ভাসে ক্রিকেট প্রেমীদের। জয়বর্ধনে, সঙ্গকারাদের দল কঠিন লড়াই দিয়েছিল ধোনির টিম ইন্ডিয়াকে। যদিও শেষরক্ষা হয়নি। বাজিমাত করেছিল ভারতই। কিন্তু অনামী লঙ্কা দল যে এদিন কেনিংটন ওভালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গতবারের চ্যাম্পিয়নদের এভাবে নাকানি-চোবানি খাওয়াবে, কে ভেবেছিল! ৩২২ রানের পাহাড় প্রমাণ লক্ষ্যের সামনে দাঁড়িয়েও পা কাঁপল না মেন্ডিসদের। মাথা ঠান্ডা করে মেন্ডিস ও দনুষ্কা দুর্দান্ত পার্টনারশিপ গড়লেন। দলগত পারফরম্যান্সেই অনবদ্য জয় হাসিল করল প্রতিবেশী রাষ্ট্র।
[দুই স্ত্রীকে নিয়ে একসঙ্গে ঘর করতে চান এই বাংলাদেশি ক্রিকেটার]
ভারতের বিরুদ্ধে যে তাঁরাই আন্ডারডগ, তা আকারে-ইঙ্গিতে আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে স্বীকার করে নিয়েছিলেন লঙ্কা নেতা ম্যাথিউজ। আর তাতেই হয়তো অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে ভুগতে শুরু করেছিলেন বিরাটরা। ভারতীয় দল ব্যাটিং খারাপ করেছে, বলা যাবে না। ধাওয়ানের সেঞ্চুরি, রোহিত শর্মার লম্বা ইনিংস এবং ধোনির পুরনো ছন্দ দলকে বড় রানেই পৌঁছে দিয়েছিল। এদিকে, ইদানীং ভারতীয় দলের যে খারাপ ফিল্ডিংয়ের দিকে বারবার আঙুল তুলছেন সমালোচকরা, সেই ফিল্ডিংও এদিন ছিল যথেষ্ট সন্তোষজনক। এমনকী এই ফিল্ডিংয়ে ভর করেই একসময় জয়ের স্বপ্ন দেখছিলেন ভারতীয় সমর্থকরা। বিরাট কোহলির ওভারে দনুষ্কা রান আউট হলে মনে হয়েছিল এবার বুঝি ম্যাচের মোড় ঘুরবে। কিন্তু নাহ, মেন্ডিস প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেও শিড়দাঁড়া সোজা করে লড়াই চালিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ম্যাথিউজ ৫২ রানে ও গুণরত্নে ৩৪ রানে অপরাজিত রইলেন। নিঃসন্দেহে উইনারদের মতোই খেললেন তাঁরা।
কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে কেন রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে অশ্বিনকে খেলালেন না অধিনায়ক কোহলি? কেন উপমহাদেশীয় দলের বিরুদ্ধে স্পিনকেই হাতিয়ার করলেন না তিনি? ব়্যাঙ্কিংয়ে সাত নম্বর দলের ব্যাটিং অর্ডারকে কেন ধরাশায়ী করতে পারলেন না ভারতীয় পেসাররা? কেন অঘটন ঘটাতে বল হাতে নামতে হল ক্যাপ্টেন কোহলিকেও? এই হারের পর এসব প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
[ফরাসি ওপেন জিতে প্রথমবার গ্র্যান্ড স্লাম খেতাব বোপন্নার]
কথায় বলে ক্রিকেট একটি বলের খেলা। কোন মুহূর্তে ফকির রাজা হয়ে ওঠে বা উল্টোটা হয়ে যায়, বোঝাই যায় না। শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রেও এদিন তেমনটাই হল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এই প্রথম এত বড় রান তাড়া করে জিতলেন মালিঙ্গারা। পরের ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাতে পারলেই সেমিফাইনালে পৌঁছে যাবে দল। আর যে ভারতের কাছে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচটি নেহাত নিয়মরক্ষার হতে পারত, সেই ম্যাচই পরিণত হল ডু অর ডাই ম্যাচে।
The post অঘটন ঘটিয়ে বিরাটবাহিনীর বিরুদ্ধে দুর্দান্ত জয় শ্রীলঙ্কার appeared first on Sangbad Pratidin.